সেনাপ্রধান ও আইজিপির যৌথ সংবাদ সম্মেলন

সিনহার মৃত্যুতে দুই বাহিনীর সম্পর্কে চিড় ধরবে না

বণিক বার্তা প্রতিনিধি কক্সবাজার

কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছে সেনাবাহিনী পুলিশ। ঘটনায় সেনাবাহিনী পুলিশের সম্পর্কে কোনো চিড় ধরবে না বলে জানিয়েছেন দুই বাহিনীর প্রধান।

গতকাল কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর বাংলো জলতরঙ্গে  যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে তারা দুই বাহিনীর মধ্যে আস্থার সম্পর্ক অটুট রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘সেনাবাহিনী পুলিশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। যে ঘটনা ঘটেছে, অবশ্যই সেনাবাহিনী পুলিশ বাহিনী মর্মাহত। আমি আপনাদের মাধ্যমে যে মেসেজ দিতে চাই, তা হলো এটাকে আমরা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে চাই।

সেনাপ্রধান আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটিজয়েন্ট ইনকোয়ারি টিম’ (যৌথ তদন্ত দল) গঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের মাকে ফোন করে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। তার কথার ওপর সেনাবাহিনী পুলিশ বাহিনীর আস্থা আছে। যে যৌথ তদন্ত দল গঠিত রয়েছে, তার ওপরও দুটি বাহিনীই আস্থাশীল।

জেনারেল আজিজ বলেন, ‘আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, দুই বাহিনীর সম্পর্কে চিড় ধরে এমন কিছু হবে না। ঘটনা নিয়ে যেন সেনাবাহিনী পুলিশের ভেতর অনাকাঙ্ক্ষিত চিড় ধরানোর মতো ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকারও অনুরোধ করেছেন তিনি।

পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ পুলিশের ৫০ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করার ইতিহাস রয়েছে। গত ৫০ বছরে দেশের অনেক ক্রাইসিস মুহূর্তে দুটি বাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। আমাদের মধ্যে একটা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস আস্থার সম্পর্ক রয়েছে। আমরাও এটাকে একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে। এখানে সংবাদমাধ্যম সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে। বিচার বিভাগ মুক্ত। ঘটনা নিয়ে অনেকে উসকানিমূলক কথা বলার চেষ্টা করছেন। যারা উসকানি দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না।

বেনজীর আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস আস্থার সম্পর্ক। মেজর (অব.) সিনহার মৃত্যুতে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হবে না। কমিটি প্রভাবমুক্ত পরিবেশে তদন্ত করবে। কমিটি যে সুপারিশ দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দিচ্ছি, সরকার যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, তারা সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত হয়ে তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে। যদি আরো কেউ মামলা করতে চায়, নাগরিক হিসেবে তার আইনগত সেই অধিকার রয়েছে। মামলা করার ক্ষেত্রে যদি কেউ নিরাপত্তার সংকট অনুভব করেন, তাহলে মামলাসংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।

সময় এক সাংবাদিক মেরিন ড্রাইভ সড়কে প্রায় ক্রসফায়ার ঘটার বিষয়ে প্রশ্ন করলে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘ক্রসফায়ার শব্দের সঙ্গে আমরা একমত নই। এটি এনজিওগুলো বলে। এটি আমাদের এখানে যারা এনজিওগিরি করেন, তারা বিভিন্ন কারণে বিদেশ থেকে পয়সা আনেন। ঝকঝকে গাড়িতে চড়েন, ঝকঝকে অফিসে বসেন। জাস্টিফাই করতে হলে অনেক রকম কথা বলতে হয়। তার মধ্যে ক্রসফায়ার হলো একটি।

সংবাদ সম্মেলনের পর মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে যান সেনাপ্রধান আজিজ পুলিশপ্রধান বেনজীর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন