দ্বিতীয় ট্রায়াল শেষের পথে চীনের ৫ ভ্যাকসিন, আসছে আরো কয়েকটি

বণিক বার্তা অনলাইন

নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চীনের পাঁচটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের মানব শরীরে দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল চলছে। আরো কয়েকটি ভ্যাকসিন আগামী মাসে মানব শরীরে ট্রায়ালের অনুমতি পাবে। বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের প্রতিযোগিতায় এ খবর এশীয় দেশটির দ্রুত অগ্রগতির ইঙ্গিত দিচ্ছে নিঃসন্দেহে।

রাজধানী বেইজিংয়ে গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের উপমন্ত্রী জেং ইয়িক্সিন বলেন, দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে দুই হাজারের বেশি মানুষের ওপর এ পাঁচটি ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ পরীক্ষা আগামী জুলাই মাসে শেষ হবে বলে আশা করছি। সাধারণ ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হওয়ার আগে সম্ভাব্য এ ভ্যাকসিনগুলোকে আরো একটি ট্রায়ালের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। 

দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে রোগীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোনো গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি জানিয়ে ইয়িক্সিন বলেন, আরো কয়েকটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনকে জুন মাসের মানব শরীরে পরীক্ষার অনুমোদন দেয়া হবে।

অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় সেনাবাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চীনা সংস্থাগুলোই ভ্যাকসিন নিয়ে বেশি  গবেষণা করছে এবং তারা ব্যাপকভাবে পরীক্ষাও করছে বলে জানা গেছে। 

অন্যদিকে পশ্চিমা প্রচেষ্টার মধ্যে আমেরিকান ওষুধ প্রস্তুতকারক মডার্না ইনকর্পোরেশন এবং ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ভ্যাকসিন গবেষণায় এগিয়ে আছে।

তবে চীনে মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসার সঙ্গে সঙ্গে তৃতীয় ধাপে ভ্যাকসিন পরীক্ষায় অগ্রসরে গবেষকরা একটি বাঁধার মুখে পড়তে পারেন। আগের দুই ধাপে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনগুলো শত শত সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করিয়ে সেগুলো নিরাপদ কিনা এবং তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায় তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। 

কিন্তু তৃতীয় ধাপে গিয়ে দুই দল মানুষের প্রয়োজন হয়- একদলকে ভ্যাকসিন দেয়া হয় এবং অন্যদলকে দেয়া হয় না। এবার তাদের মধ্যে দেখা হয়- না দেয়াদের তুলনায় ভ্যাকসিন দেয়া মানুষরা সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে পারছেন কিনা।

চীনে সংক্রমণ কমে যাওয়ায় তিয়ানজিন-ভিত্তিক ক্যানসিনো বায়োলজিকস ইনকর্পোরেশন এবং বেইজিং-ভিত্তিক সিনোভাক বায়োটেক লিমিটেডের মতো কয়েকটি চীনা ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি অন্যান্য দেশে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল পরিচালনার বিকল্প অনুসরণ করছে। 

কভিড-১৯ মহামারীতে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪৪ লাখের বেশি মানুষ অসুস্থ হয়েছেন এবং ৩ লাখের বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। এমন একটি মহামারী মোকাবেলায় এখন এগিয়ে আছেন চীনা গবেষকরা। পুরো বিশ্বে শতাধিক সম্ভাব্য ভ্যাকসিন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চললেও মাত্র ১০টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছেন তারা। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি বলছে, একটি কার্যকর ভ্যাকসিনই পারে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ফিরিয়ে দিতে। যদিও একটি কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরি করতে সাধারণত কয়েক বছর সময় লাগে এবং এখন পর্যন্ত এইচআইভির মতো অনেক রোগেরই ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা যায়নি।

সূত্র : ব্লুমবার্গ

আরো পড়ুন:

প্রতিষেধক তৈরির প্রতিযোগিতায় ফের মেরুকরণের আশঙ্কা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন