আইপিওর প্রস্তুতি নিচ্ছে রবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে আসার প্রস্তুতি শুরু করেছে সেলফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার থেকে ৫২৩ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্য প্রতিষ্ঠানটির। গতকাল মালয়েশিয়ার স্টক এক্সচেঞ্জ বুরসা মালয়েশিয়ায় দেয়া এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছে রবির সিংহভাগ শেয়ারের মালিক আজিয়াটা।

মালয়েশিয়াভিত্তিক টেলিযোগাযোগ গ্রুপ আজিয়াটার পর্ষদের পক্ষে সিআইএমবি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক বারহাদ এ ঘোষণা  দেয়। এতে বলা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে ১০ টাকা ইস্যু মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ছাড়বে রবি। আইপিও-সংক্রান্ত বিষয়ে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করবে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। মালয়েশিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন-সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে সিআইএমবি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক বারহাদ। চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের মধ্যে আইপিও ও নিবন্ধনের কাজ সম্পন্নের পরিকল্পনা রয়েছে।

আজিয়াটা জানায়, মোট ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ৪০০টি শেয়ার ইস্যু করা হবে। ১০ টাকা ইস্যু মূল্যে এসব শেয়ার থেকে সংগৃহীত হবে ৩৮৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। আর এমপ্লয়ি শেয়ার পারচেজ প্ল্যানের (ইএসপিপি) আওতায় রবির পরিচালক ও কর্মীদের কাছে ১০ টাকা দরে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে বাকি ১৩৬ কোটি ৫ লাখ ৯ হাজার ৩৪০ টাকা উত্তোলন করা হবে। আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত তহবিল থেকে রবি ৫১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও বাকি ৮ কোটি ২ লাখ টাকা আইপিও খাতে খরচ করবে।

রবির আইপিও প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য আজিয়াটাকে বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে হবে। এছাড়া রবিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) অনুমোদন নিতে হবে। পাশাপাশি কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির জন্য ডিএসই ও সিএসইর অনুমোদন নিতে হবে। এছাড়া যদি অন্য কোনো নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ অথবা তৃতীয় কোনো পক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হয়, তা-ও নিতে হবে।

দেশে ভয়েস ও ডাটাভিত্তিক বিভিন্ন সেবা দিচ্ছে রবি আজিয়াটা। দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ এ প্রতিষ্ঠানের সংযোগ সংখ্যা গত বছরের ডিসেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৯০ লাখ। ২০১৬ সালে রবির সঙ্গে একীভূত হয় এয়ারটেল বাংলাদেশ। বর্তমানে রবির মোট ৬৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে আজিয়াটার কাছে। এছাড়া রবি আজিয়াটার ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক ভারতীয় টেলিকম গ্রুপ এয়ারটেলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভারতী ইন্টারন্যাশনাল (সিঙ্গাপুর) প্রাইভেট লিমিটেড ও ৬ দশমিক ৩১  শতাংশ শেয়ারের মালিক জাপানের এনটিটি ডকোমো।

রবির সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। ২০১৮ ও ২০১৭ হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির আয় ছিল যথাক্রমে ৬ হাজার ৭৯৮ কোটি ও ৬ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা, ২০১৮ হিসাব বছরে যা ছিল ২১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০১৭ হিসাব বছরে কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট লোকসান ছিল ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন