ক্যাম্পাসে এখনো কোলাহল তৈরি হয়নি। আজ একটু আগেই এসেছে শান্তা, শাহজাহান ও রাশেদ। করিডোরের একপাশে চুপচাপ বসে আছে তারা। হঠাৎ মুনিয়াকে লক্ষ্য করে ডেকে উঠল শান্তা, ক্যাম্পাসের মূল ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিল সে। বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে গেল মুনিয়া। ‘ভালো লাগছিল না তাই আগেই চলে আসলাম’—কেমন যেন একটা ভাঙা গলায় কথাটা বলতে বলতে করিডোরে সবার সঙ্গে বসে পড়ল মুনিয়া; কিন্তু একটু পরেই সবাই আবার নীরব। বেশকিছু সময় পর মৃদু স্বরে বলে উঠল, ‘শেষ ক্লাসের কষ্ট আর প্রথম ক্লাসের আনন্দের ভেতর একটা অন্যরকম মিল আছে তাই না?’ তার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে দিপু, মহিউদ্দিন, মোর্তোজা, সিফাত ও বিশ্বজিত।
এরা সবাই ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) এমবিএ প্রোগ্রামের এইচআরএম বিভাগের শিক্ষার্থী। এদের আনমনের কারণ আজ তাদের ক্যাম্পাস জীবনের শেষ ক্লাস। আজ শেষ ক্লাসের পর শিক্ষা সমাপনী উৎসবে মেতে উঠবে এরা সবাই। শিক্ষা সমাপনী উৎসবের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে তাদের এই দীর্ঘ শিক্ষাজীবনের। অনুষ্ঠানকে ঘিরে তাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না।
এদিন মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে। প্রোগ্রাম কনভেনার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ-হিল মুনতাকিমের সঞ্চালনায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স প্রোগ্রাম পরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ সেলিমের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম শরিফ। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর তপন কুমার বিশ্বাস, কো-অর্ডিনেটর মোস্তফা কামাল, অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সাম কন্ট্রোলারসহ বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকরা। সমাপনী অনুষ্ঠানের উৎসাহ জুগিয়েছেন ইউডা প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি প্রফেসর মুজিব খান এবং তত্ত্বাবধানে ছিলেন রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফফাত চৌধুরী।
উৎসবের দিন সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের চারপাশে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। এটি ছিল অন্যরকম একটি দিন। প্রিয় বিভাগে শিক্ষক ও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিল শিক্ষার্থীরা। এদিন তাদের সঙ্গে উচ্ছ্বাসে দিন কাটাতে দেখা যায় বতর্মান শিক্ষার্থীদেরও। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষা সমাপনী উৎসবের শুরু হয় শেষ ক্লাসের মধ্য দিয়ে। পরে সমাপনী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বিদায় বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সবাই ক্যাম্পাস জীবনের স্মৃতিচারণ করে। এ সময় তারা মেতে ওঠে গান, কবিতা, গল্প আর শেষ স্মৃতিটুকু ফ্রেমে বন্দি করার জন্য সেলফি উৎসবে।
এএইচএম, ইউডা