নির্বাচনে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে সেগুলোর বাস্তবায়ন হয় না বলে অভিযোগ করেছে নাগরিক সমাজ। তাদের মতে, নাগরিকরা একজন সত্ ও উদ্যমী মেয়র চায়, যিনি কোথায় কী কাজ করছেন, তা জনগণকে জানাতে পারেন। যিনি দুর্নীতিমুক্ত, অপচয়হীন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেন। জনগণের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করবেন।
গতকাল রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ‘আমার মেয়র’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে অপরাজেয় বাংলা। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। এছাড়া ক্রীড়া সংগঠক মাহবুব আনাম, সিনিয়র সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মামুন আল মাহতাব, রাজনীতিবিদ এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু, এইচ রহমান মিলু, হাবিবুর রহমান টিটু প্রমুখ।
বৈঠকে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনে বিএনপি অসম প্রার্থী দিয়েছে। একজন প্রার্থীর বাবার পরিচয় ছাড়া আর কোনো পরিচয় নেই। অন্যদিকে ব্যারিস্টার তাপস সফল আইনজীবী, তিনবারের সংসদ সদস্য। পরীক্ষিত। আর আতিকুল ইসলাম সফল ব্যবসায়ী। কিন্তু বিএনপির প্রার্থী হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন।
ক্রীড়া সংগঠক মাহবুব আনাম বলেন, নাগরিক হিসেবে এ শহর নিয়ে আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। এ শহরে অনেক সমস্যা রয়েছে। তা নিয়ে আমরা রি-অ্যাকটিভ। তবে প্রো-অ্যাকটিভ হই না। আনিসুল হক দেখিয়ে গেছেন, আমরা যদি প্রো-অ্যাকটিভ হই আর কিছু ব্যবস্থাপনা দক্ষতা থাকে তাহলে সবকিছুই করা সম্ভব। মেয়রের সবচেয়ে বড় দক্ষতা থাকা উচিত সমন্বয়ের ক্ষেত্রে। কারণ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে তার কাজ করতে হয়। অর্থাত্ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মেয়রের সম্পৃক্ততা অবশ্যই জরুরি। এটা না থাকলে ঢাকার চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধান হবে না।
নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, আমরা প্রায়ই দেখি সম্পদের অপচয় হচ্ছে। একজন উদ্যোগী মানুষ চাই, যিনি দুর্নীতিমুক্ত, অপচয়হীন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেন।
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, অতীতে দেখেছি অনেকে অনেক প্রতিজ্ঞা করেছেন। কিন্তু সেটা আর বাস্তবায়ন করেননি। নির্বাচনের সময়ে কোন প্রার্থী কোথায় থাকবেন, তা জানানো হয়, কিন্তু নির্বাচন হয়ে গেলে আর অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায় না।
মাসুদ কামাল বলেন, সাঈদ খোকন ও আনিসুল হক সরকার সমর্থিত ছিলেন। কিন্তু তাদের পার্থক্য ছিল। এক্ষেত্রে ব্যক্তিত্ব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মেয়রই এসেছিলেন, কিন্তু কেউ তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড সরাতে পারেননি।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মামুন আল মাহতাব বলেন, চার মেয়র প্রার্থীর শিকড়ের খবর নেয়া যেতে পারে। একজন প্রার্থীর বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে যা যা করার, করে গেছেন। আরেক প্রার্থীর গোপন সম্পদের খবর পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে দুজন প্রার্থীর ভূমিকা পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন।
রাজনীতিবিদ এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু বলেন, ঢাকাকে নিয়ে সমস্যার শেষ নেই। আনিসুল হক কাজের একটি মানদণ্ড তৈরি করে গেছেন। ঢাকা আমাদের হূত্স্পন্দন।