খরার কারণে কৃষির ক্ষতি সামাল দিতে
হিমশিম খাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে গম উৎপাদনের পাশাপাশি রফতানি
পূর্বাভাসও কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। এখন যে গম সংগ্রহ হবে, সেটির
রফতানি বেশি হলে ৮৪ লাখ টন হবে বলে ধারণা করছে সংস্থাটি। যদিও গত মাসে ৯০ লাখ টন
রফতানির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। খবর গ্রেইন সেন্ট্রাল।
গম প্রক্রিয়াকরণের বৃহত্তম অস্ট্রেলীয়
কোম্পানি মালিন্ড্রা গ্রুপের শোলহেভেন স্টার্চেস প্লান্টে এখন পর্যন্ত যা গম এসেছে, তার
সবই ২০১৮-১৯ মৌসুমে আমদানি করা। ২০১৯-২০ মৌসুমেও এ আমদানি অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা
করা হচ্ছে। কারণ নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে এখনো খরা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায়
গমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ইউএসডিএর সর্বশেষ পূর্বাভাসে
অস্ট্রেলিয়ার গমের উৎপাদন কমে ১ কোটি ৬১ লাখ টনে নামবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ
পূর্বাভাস সত্যি হলে ২০০৭-০৮ মৌসুমের পর অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন গম উৎপাদনের
রেকর্ড হবে এটি। যেখানে নভেম্বরের প্রতিবেদনে ইউএসডিএ অস্ট্রেলিয়ায় ১ কোটি ৭২ লাখ
টন গম উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছিল। তবে গত সপ্তাহে প্রকাশিত অ্যাবারেস
অস্ট্রেলিয়ান করপোরেশনের প্রতিবেদনে উৎপাদন পূর্বাভাস এর চেয়ে কম উল্লেখ করা হয়েছে, ১
কোটি ৫৯ লাখ টন।
উৎপাদন হ্রাসের কারণে অভ্যন্তরীণ
চাহিদা মেটাতে স্বাভাবিকভাবেই আমদানি বাড়াবে অস্ট্রেলিয়া। ইউএসডিএর হিসাবে, ২০১৯-২০
মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার গম আমদানি ৪ লাখ ৫০ হাজার টনে দাঁড়াবে। যেখানে গত মাসের
পূর্বাভাসে সম্ভাব্য আমদানি দেড় লাখ টন উল্লেখ করেছিল মার্কিন কৃষি বিভাগ।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনায়ও এবার খরার
কারণে গমের উৎপাদন হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউএসডিএর হিসাবে, লাতিন
আমেরিকার দেশটিতে এবার গমের রফতানি কমে ১ কোটি ৩০ লাখ টন হবে, যা
গত মাসের পূর্বাভাসের চেয়ে ১০ লাখ টন কম।
অস্ট্রেলিয়া ও আর্জেন্টিনার মতো দেশে
খরা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকার কারণে বৈশ্বিক গম উৎপাদন পূর্বাভাসও কমিয়েছে ইউএসডিএ।
গত মাসের পূর্বাভাসে ২০১৯-২০ মৌসুমে উৎপাদন সম্ভাবনা ৭৬ কোটি ৫৬ লাখ টন উল্লেখ করা
হলেও এখন সেটি কমিয়ে ৭৬ কোটি ৫৪ লাখ টন বলা হচ্ছে। তবে রাশিয়া, চীন
ও যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনার কারণে বৈশ্বিক উৎপাদনে খুব একটা প্রভাব
পড়বে না বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি বৈশ্বিক ব্যবহার কমে যাওয়ার কারণে এ মৌসুমে
মজুদ বেড়ে রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। ইউএসডিএর হিসাবে, গমের
বৈশ্বিক ব্যবহার এবার ১৪ লাখ টন কমে মৌসুম শেষে মজুদ ১২ লাখ টন বেড়ে রেকর্ড ২৮
কোটি ৯৫ টনে দাঁড়াবে। এর মধ্যে শুধু চীনের মজুদই ১৮ লাখ টন বেড়ে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ
টনে দাঁড়াবে, যা বৈশ্বিক মজুদের ৫১ শতাংশ।