‘কমফোর্ট মিল’ খিচুড়ি

এম এ মোমেন

অনেকটাই ধর্ম-নিরপেক্ষ খাবার খিচুড়ি। মুসলমানের উৎসবে, কোথাও কোথাও ইফতারে প্রিয় খাবার খিচুড়ি। হিন্দুর দুর্গোৎসব তো খিচুড়ি ছাড়া অসম্পূর্ণ। আমিষ, নিরামিষ বহুবিচিত্র স্বাদের খাবার খিচুড়ি।

মাত্র এক মাস আগে সাইক্লোন বুলবুল যখন সুন্দরবনে ঘা খেয়ে দুর্বল হয়ে বাংলাদেশকে পাশ কাটিয়ে ভারতের ওপর দিয়ে চলে গেল, সে নভেম্বর রাতে উপকূলবর্তী সাতক্ষীরার একটি উপজেলায় দেড় লাখের বেশি মানুষ গরম খিচুড়ি খেয়ে আতঙ্ক আশঙ্কার রাতটি কাটিয়ে দিলেন।

১৯৭১-এর ২৭ মার্চ কারফিউ শিথিল হলে সেনাশাসিত ঢাকা ছেড়ে আমরা যখন নিরাপদ স্থানের সন্ধান করছিলাম, সেই সংকটের রাতে অজ্ঞাত শুভানুধ্যায়ীরা আমাদের পাতে তুলে দিয়েছিলেন গরম খিচুড়ি।

দুর্যোগের খাবার খিচুড়ি, গণমানুষের খাবার খিচুড়ি আবার মোগল বাদশাহদের প্রিয় মেনুতেও রয়েছে খিচুড়ি।

বছর দেড়েক আগে ভারতের সেলিব্রিটি শেফ সঞ্জীব কাপুর তার নেতৃত্বে ৫০ জন সহযোগী বাবুর্চির একটি দল নিয়ে একবারে ৯১৮ কেজি খিচুড়ি রান্না করে বেশ হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলতে শুরু করল, এটাই বিশ্ব রেকর্ড। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তার নামটি ছাপা হবে। কঠিন হবে বিশ্বরেকর্ড ভাঙা।

অমনি চটে গেলেন আজমীর শরিফের প্রধান ব্যবস্থাপক সৈয়দ সালমান চিশতি। বললেন, সুফি মতাবলম্বী হওয়ার কারণে আমরা নিজেদের ঢাক নিজেরা পেটাই না। জেনে রাখুন, ৪৫০ বছর ধরে প্রতিদিন দুটি ডেকচিতে হাজার ৪০০ কেজি নিরামিষ খিচুড়ি ভক্তদের জন্য রান্না হচ্ছে। প্রতি ডেকচিতে হাজার ২০০ কেজি।

এই ডেকচি দুটি অনেকেই দেখেছেন, দেখার সুযোগ আমারও হয়েছে।

শুভ খিচুড়ি সংবাদ বাংলাদেশেও আছে। প্রায় আড়াইশ বছর ধরে কারাবন্দিরা যে নাশতা করে আসছেন, সেই মেনুতে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। বাংলাদেশের কোনো কোনো কারাগারে নাশতায় দেয়া হচ্ছে ভুনা খিচুড়ি।

ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে রাজনৈতিক দলগুলো লাগাতার খিচুড়ি খাওয়াতে শুরু করে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় আমার জন্মস্থান গ্রিনরোড সংলগ্ন রাজাবাজারে পয়সায় (আধ আনা) গোলগোল্লা বিক্রি হতো। গোলগোল্লা গোলাকৃতি তেলে চুবানো পিঠা। হঠাৎ একদিন দেখি গোলগোল্লার দাম বেড়ে পুরো আনা হয়ে গেছে, নামও বদলেছেকারেন্টের গোলগোল্লা। নাম পুরোপুরি খাঁটি, এতদিন কাঠ কয়লার আগুনে বানাত, এখন বিদ্যুৎ সংযোজিত হিটারে নাম তো কারেন্টের গোলগোল্লাই হওয়ার কথা।   

***

চাল ডালের পরিমাণ মতো মিশ্রণ থেকে রান্নার মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া খাবারটি ঠিক বাঙালির নিজস্ব নয়। বাঙালির ইতিহাস প্রণেতা নীহাররঞ্জন রায় জানিয়েছেন পুরনো দিনের বাঙালির খাবারে ডালের কোনো উল্লেখ নেই। তার

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন