উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে যেতে দেশের অর্থনীতিতে সাত ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এগুলো হচ্ছে মানসম্মত প্রবৃৃদ্ধি অর্জন, বৈষম্য দূর করা, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে সংস্কার, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, রফতানি বহুমুখীকরণ, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
গতকাল পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত
চতুর্থ বিইএফ সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে এসব বিষয় উঠে এসেছে। সেসঙ্গে খেলাপি ঋণ
এবং উচ্চ সুদহারের কারণে সুশাসন নিশ্চিত হচ্ছে না বিধায় ব্যাংকিং খাতে দ্রুত
সংস্কারের তাগিদ দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে সরকারের নজর থাকলেও সংস্কারের ক্ষেত্রে
ধীরে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
রাজধানীর একটি হোটেলে দিনব্যাপী এ
সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
‘স্ট্র্যাটেজিস অ্যান্ড পলিসিস ফর অ্যান আপার-মিডল ইনকাম
বাংলাদেশ’ উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ
মান্নান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. সাদিক
আহমেদ, আইএনএমের নির্বাহী পরিচালক ড.
মুস্তফা কে মুজেরী, পিআরআইয়ের
চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার এবং নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। আলোচনায় অংশ নেন
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের সম্মাননীয় ফেলো ড.
মোস্তাফিজুর রহমান, সানেমের
নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড.
সেলিম রায়হান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ড. সায়মা
হক বিদিশা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন
খাতে সংস্কার প্রয়োজন আছে, এটাকে কেউ অস্বীকার করে না। এটা সরকারের চিন্তাও আছে। তবে সময় লাগলেও
হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। অর্থনীতির নিজস্ব গতি রোধ করা ঠিক নয়। প্রতিটি পা ফেলার
আগে আমরা চিন্তা করছি।
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ঋণখেলাপিদের
একের পর এক সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ফলে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন নষ্ট হচ্ছে। বেসরকারি
বিনিয়োগ আসছে না। ডুয়িং বিজনেস পরিবেশের অবস্থা ভালো নয়। শেয়ারবাজারে সরকারি
কোম্পানিগুলো আসেনি। বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির তুলনায় করের হার অনেক কম। এতে
বৈষম্য বাড়ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনীয়
বরাদ্দের অভাবে প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয় না। আবার যা বরাদ্দ দেয়া হয়, সেটিও
পুরোপুরি ব্যবহার হচ্ছে না। দেখা যায় অর্থবছরের নয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয় ৪৫
শতাংশ আর বাকি তিন মাসে বাস্তবায়ন হয় ৪৫ শতাংশ।