রাজধানী সান্তিয়াগোসহ দেশজুড়ে বিশাল গণবিক্ষোভের মুখে পুরো মন্ত্রিসভা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার কার্যকরে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের কথা জানিয়েছেন তিনি। খবর বিবিসি।
পিনেরা বলেন, নতুন
দাবির মুখে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে আমার সব মন্ত্রীকে নোটিস পাঠিয়ে
দিয়েছি। মন্ত্রিসভা ভেঙে দিলেও কোন প্রক্রিয়ায় সরকার চালানো হবে, তার
কোনো ইঙ্গিত দেননি তিনি।
সামাজিক ন্যায্যতার দাবিতে শুক্রবার
সান্তিয়াগোতে ১০ লাখের বেশি মানুষের শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচির পর
মন্ত্রিসভা ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দিলেন পিনেরা।
তিনি বলেন, রাজপথ
থেকে ওঠা গণদাবি শুনতে পেয়েছি। আমরা এখন নতুন এক বাস্তবতায় আছি। এক সপ্তাহ আগেও যে
চিলি ছিল, এখন সেটা একেবারেই আলাদা।
মন্ত্রিসভা ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি গত
সপ্তাহে চিলির বিভিন্ন শহরে জারি করা কারফিউ তুলে নেয়ার ঘোষণাও দেন তিনি। কারফিউর
পাশাপাশি জারি করা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারেরও দাবি তুলেছে বিক্ষোভকারীরা।
লাতিন আমেরিকার দেশটিতে সপ্তাহখানেক
আগে শুরু হওয়া এ অসমতাবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ১৭ জন নিহত ও কয়েকশ আহত হয়েছে বলে
জানা গেছে।
দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের
কয়েকদিনের ধারাবাহিক সংঘাত ও সহিংসতার পর শুক্রবার ১০ লাখের বেশি মানুষ সান্তিয়াগোতে
সমবেত হয়, যা ছিল চিলির মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশেরও বেশি।
সান্তিয়াগোর গভর্নর কার্লা রুবিলার
টুইটারে বলেছেন, এদিনের বিক্ষোভ এক নতুন চিলির স্বপ্ন উপস্থাপন করেছে।
আয়োজকরা বলছেন, এদিন
রাজধানী যত মানুষের জমায়েতের সাক্ষী হয়েছে,
তা ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রে উত্তরণের পর আর কখনই
হয়নি।
মেট্রোর বাড়তি ভাড়াকে কেন্দ্র করে
শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ পরে অসমতাবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। সান্তিয়াগোর পাশাপাশি
অন্যান্য শহরেও এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।
সরকার পরে মেট্রোর ভাড়া বৃদ্ধির
সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটলেও বিক্ষোভকারীদের দমানো যায়নি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার
জরুরি অবস্থার পাশাপাশি অনেক শহরে কারফিউ জারি করে।
বিক্ষোভ মোকাবেলার পাশাপাশি জ্বালাও-পোড়াও ও
লুটতরাজ ঠেকাতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। সপ্তাহখানেকেরও বেশি
সময় ধরে চলা এ আন্দোলনে সাত হাজারেরও বেশি চিলিয়ানকে আটক করা হয়েছে।
জরুরি অবস্থার অধীনে থাকা সান্তিয়াগোর
নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে চিলির সেনাবাহিনী,
যাদের সহায়তায় রয়েছে হাজারো পুলিশ।
লাতিন আমেরিকার ধনী দেশের একটি হলেও
চিলিতে অসমতাও চরমে। আয় সমতার দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে ৩৬
সদস্যবিশিষ্ট অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের
(ওইসিডি)
সদস্যরাষ্ট্রটি।