সিল্করুট

ঐতিহ্য ও আভিজাত্যে বাংলাদেশের শাড়ি

সোনিয়া তাসনিম

ছবি : বণিক বার্তা

শাড়ি শব্দটির জন্ম সংস্কৃত শব্দ"শাটিকার গর্ভে। এ এক ফালি কাপড়৷ শাড়িকে বাঙালি সংস্কৃতির এক অনন্য অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঐতিহাসিকদের মতে, খ্রিস্টের জন্মের অনেক আগে বস্ত্রটির ঐতিহাসিক পথযাত্রার শুরু। তবে সঠিক কবে, কী করে শাড়ির উৎপত্তি তা মূলত আজও অস্পষ্ট। ইতিহাসবিদ রমেশচন্দ্র মজুমদার প্রাচীন ভারতের পোশাক সম্পর্কে বলেছেন, তখন মেয়েরা আংটি, দুল, হার এসবের সঙ্গে পায়ের গোছা পর্যন্ত শাড়ি পরিধান করত, ওপরে জড়ানো থাকত আধনা (আধখানা)।

বঙ্গদেশে পাহাড়পুরের পাল আমলের কিছু ভাস্কর্য থেকে বাংলায় শাড়ি ব্যবহারের চিত্র দেখা যায়। এছাড়া গুপ্ত যুগের (আনুমানিক ৩১৯-৪৬৭ সাল) বিখ্যাত কবি কালীদাসের"কুমারসম্ভব"বইতেও শাড়ির কথা উল্লেখ রয়েছে। গুপ্ত আমলের ইলোরা অজন্তা গুহার প্রাচীন চিত্রাবলি যেমন শাড়ির প্রচলনের চিত্র তুলে ধরে, তেমন করেই পাহাড়পুর-ময়নামতির পোড়ামাটির ফলক থেকে প্রমাণিত হাজার বছর আগে এ পূর্ববঙ্গেও শাড়ির প্রচলন ছিল। তবে হ্যাঁ, একে পরিধান করার কায়দায় পার্থক্য ছিল বিস্তর।

শাড়ির আদি পর্বে সাজত সম্মুখভাগে প্রস্ফুটিত ফুলের মতো মেলে দিয়ে, পরে একের পর এক ভাঁজে তা হতো সুবিন্যস্ত। আধুনিক সময়ে শাড়ি পরিধানে নতুনত্বের পরিস্ফুটন ঘটে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। ঠাকুরবাড়ির বধূ জ্ঞানদানন্দিনী পার্সি কায়দায় কুঁচি সাজিয়ে যে নান্দনিক ধারার প্রচলন করেন, সেটি আজ অবধি জনপ্রিয়। ব্রিটিশ আমলে ফুলহাতা ব্লাউজ আর কুঁচি ছাড়া শাড়িই ছিল সমাজের উচ্চবিত্ত নারীদের ফ্যাশন।

অতীত ছাড়িয়ে বর্তমান

শাড়ি ঐতিহ্যগতভাবে দক্ষিণ এশিয়া তথা বাঙালি সমাজে এখনো অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমাদের সামাজিক জীবন থেকে শুরু করে সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শাড়ি তার রঙিন আঁচল মেলে রেখেছে। কালীদাসের শকুন্তলা"থেকে বিদ্যাসুন্দর"কাব্যের নায়িকা বিদ্যা—রবিঠাকুরের লাবণ্য থেকে শুরু করে হুমায়ূন আহমেদের রূপা—এসব চরিত্রের পূর্ণতা মায়াবী শাড়ির মাধুকরী সৌন্দর্যে।

প্রাক-শিল্পবিপ্লব যুগে বাংলাদেশ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম বস্ত্র শিল্প কেন্দ্রের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব কাল থেকেই যেহেতু এখানে বস্ত্র শিল্পের মজবুত ভিত গড়ে ওঠে সুতরাং সে বিবেচনায় এখানে শাড়ির বুনন ও প্রকারভেদে বৈচিত্র্যের সমারোহ ছিল প্রচুর৷। রিয়াজুস সালাতিন" গ্রন্থে (গোলাম হোসাইন সলিম, ১৭৮৮) সোনারগাঁয় বিখ্যাত মসলিন উৎপাদিত হতো বলে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া সরকার ঘোড়াঘাটের (দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, মালদহ নিয়ে গঠিত) গঙ্গাজলী বস্ত্র উৎপাদনের খ্যাতিও ঈর্ষণীয় ছিল। পাবনাই পাড়"কাপড় তৈরি হতো সাদুল্লাপুর, নিশ্চিন্তপুর, আমিনপুরে। নোয়াখালী বিখ্যাত ছিল যুগদিয়া, লক্ষ্মীপুর"ও কালিন্দার"জন্য। পিছিয়ে ছিল না কুমারখালী, সাতক্ষীরার বারো হাত বাহারি বস্ত্র। এছাড়া হান্টার ও বার্ডউডের গ্রন্থে মিলবে মগ রমণীদের সুতি ও রেশমি বস্ত্র বয়নের কথা।

বাংলাদেশী মসলিন-জামদানির খ্যাতি শুরু থেকেই সমীহ আদায় করে নিয়েছিল। সুতির মতো নিখাদ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল রেশমি বস্ত্র। খোদ ঢাকায়ই তখন বুনে নেয়া হতো নানা ধরনের কাপড়। টেলরের মতে, ১৮৪০ সালে বস্ত্র শিল্প যখন হুমকির মুখে তখনো ঢাকায় বোনা হতো ৩৬ রকমের কাপড়। সমৃদ্ধ বস্ত্র শিল্পের সে সোনালি দিন থেকে আজ অবধি শাড়ির বুনন, কারুকার্যে বাংলাদেশ এখনো নান্দনিকতার জলছাপ এঁকে চলেছে।

দেশীয় শাড়ির মাঝে জামদানি বহুল পরিচিত স্বতন্ত্র ঘরানার শাড়ি হিসেবে৷ এটি প্রস্তুত হয় কার্পাস তুলো দিয়ে। এতে বুননে তৃতীয় একটি সুঁতো দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় নকশা—মোগল আমলে জামদানির উৎকর্ষ জনপ্রিয়তার শিখর ছুঁয়েছিল। পঞ্চদশ-ষোড়শ শতাব্দীতে এর ব্যবহার ছিল রাজদরবারেও।

জামদানি শাড়ির ডিজাইনে জ্যামিতিক প্যার্টানের ধারাবাহিকতা ও বুননের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। নকশার বিচিত্রতা জামদানিকে অনবদ্য করে তুললেও এটি তৈরিতে সূক্ষ্ম কারিগরি ও শৈল্পিক দক্ষতার যুগলবন্দি আবশ্যক। আশ্চর্যের বিষয় হলো যুগ যুগব্যাপী স্বল্প শিক্ষিত জামদানি তাঁতিরা কাগজের প্যাটার্নকে তাদের মুখস্থ মৌখিক কৌশলে রূপান্তর করেছে।

বর্তমানে ঢাকার রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জের প্রায় ১৫০ গ্রাম এ শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ঢাকাকে জামদানি বয়নের আদি জন্মস্থান বলা হয়। এর বয়নের অতুলনীয় পদ্ধতি ইউনেস্কো কর্তৃক ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের"তকমা অর্জন করে নিয়েছে।

হাফ সিল্ক ও ফুল কটন জামদানির মাঝে একটি সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। হাফ সিল্কে আড়াআড়ি সুতো হয় রেশমের আর লম্বালম্বি সুতোগুলো তুলোর। অন্যদিকে ফুল কটনের গোটাটাই তুলোর সুতো দিয়ে তৈরি জামদানিকে প্রাচীনকালের মিহি মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিস্মিত হতে হয় বাংলার মসলিন প্রসঙ্গে। চরকায় কাটা, হাতেবোনা মসলিনের জন্য সর্বনিম্ন ৩০০ কাউন্টের সুতো ব্যবহার হতো। ফলে এর স্বচ্ছতা ছিল কাঁচের মতো। মসলিন রাজপোশাকের শোভাবর্ধন করত। এ সুতোর তৈরি কাপড় নাকি এতটাই মিহি ছিল যে একে একটি আংটির ভেতরে প্রবেশ করানো যেত। চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলায় আসা মরক্কোর পর্যটক ইবনে বতুতা তার কিতাবুর রিহালায় এ মসলিনের ভূয়সী স্তুতি বয়ান করেন। এ ধারা অব্যাহত থাকে পঞ্চদশ শতাব্দীতে এ অঞ্চলে আসা চৈনিক লেখকদের লেখনীতেও। প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেননি মোগল সম্রাট আকবরের সভাসদ আবুল ফজলও।

দেশী-বিদেশী চাহিদা বৃদ্ধির কারণে মোগল আমলকেই মূলত ঢাকাই মসলিনের স্বর্ণযুগ বলা হয়। সে সময়ে ঢাকা থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা মূল্যমানের ‘‌মলমল’ খাস রফতানি করা হতো মোগল দরবারে। ১৯৪৭ সালের হিসাব অনুযায়ী, দিল্লির বাদশাহ, বাংলার নবাব ও জগৎ শেঠের জন্য প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার জামদানি কেনা হয়। খোদ ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা কিনে নেন ৯ লাখ টাকার মসলিন৷।

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পরবর্তীকালে মসলিনের অহম ক্রমে স্তিমিত হয়ে পড়ে। বর্তমানের বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউজ ও উদ্যোক্তারা এর হারানো ঐতিহ্য পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হচ্ছেন।

আপন বৈশিষ্ট্যে ঝলমলে বেনারসি শাড়ি। একসময় লাল বেনারসি না পরলে বিয়ের কনের সাজ অপূর্ণ থাকত। বিভিন্ন উৎসব-পার্বণেও বেনারসির চাহিদা ছিল আকাশচুম্বী। রেশমি সুঁতোয় অপূর্ব সাজে সজ্জিত বেনারসি কাতান। এতে এক রঙ ব্যবহারের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় বাহারি নকশা। রাশভারী আভিজাত্যের আমেজ ফুটিয়ে নেয়ায় ওজনেও হয় ভারী। হাল আমলে জনপ্রিয়তার দৌড়ে খানিক পিছিয়ে পড়লেও আলমারির শোভাবর্ধনে এখনো রমণীকুল একে সাদরে আগলে নেন।

বেনারসির নকশা ও ধরনের ওপর ভিত্তি করে এর বিবিধ নামকরণও করা হয়। এর মাঝে ব্রোকেট, পিরামিড, মিরপুরি রেশমি কাতান উল্লেখযোগ্য৷ শুরুর দিকে বেনারসির মোটিফগুলো ছিল পার্সিয়ান ধরনের। এরপর এর অঙ্গসজ্জায় বৈচিত্র্য আনে মোগল মোটিফ। বর্তমানে কাতান শাড়ির অবস্থা পরিবর্তনে টাঙ্গাইলের তাঁতিরাও বুনছেন বেনারসি, ফুল সিল্ক, টাঙ্গাইল কাতান, বালুচরি কাতান।

মোটা কাপড় মোটা ভাত—স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনকালে বাংলাদেশের কুমিল্লায় খাদি শিল্প গড়ে উঠেছিল। এককালে এ মেটে রঙা কাপড়ে কেবল পাঞ্জাবি তৈরি হলেও বর্তমানে শাড়িও তৈরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রঙের বৈচিত্র্য।

বাংলাদেশে সিল্ক সাম্রাজ্যে শাড়ি বলতে রাজশাহী সিল্ককেই বোঝানো হয়। সূক্ষ্ম ও নরম মোলায়েম এ শাড়ি ভীষণ আরামদায়ক। পিউপা, তুঁত বা রেশমই হলো এ শাড়ির সুতোর আঁশের উপাদান। সিল্ক তিন ধরনের হয়—তুঁত সিল্ক, ইন্ডি সিল্ক, তসর সিল্ক। উৎসব-পার্বণে রমণীদের প্রধান পছন্দ রাজশাহী সিল্ক।৷ এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমাদৃত।৷প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ খাতে সম্পৃক্ত।

কথায় বলে, সাধারণের মাঝে অসাধারণ সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে। এমন বিশেষণ সুতি শাড়ির বেলায়ই দেয়া সম্ভব। গৃহে, কর্মস্থলে, উৎসব-পার্বণ থেকে ভ্রমণে এ সবক্ষেত্রেই সুতি শাড়িতেই বাঙালি নারী অনন্য। তাঁতে বোনা সুতি তৈরি হয় পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঢাকা ও কুমিল্লায়।

তবে সুতি শাড়ির কথা ভাবতেই টাঙ্গাইলের নামটা সবার আগে চলে আসে। এখানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে গড়ে উঠেছে তাঁত পল্লী। কাপড় বুননের জন্য তাঁতের বাহার রয়েছে হরেক রকমের। ডিজাইন ভেদে শাড়ি তৈরি করতে সময় লেগে যায় ১০-১২ দিন।৷ ইদানীং সুতি শাড়ির ওপর বাটিক, জলছাপ, হ্যান্ডপেইন্ট, অ্যাপ্লিক, সিকোয়েন্সের কাজ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

শাড়ি বুননে মণিপুরী নারীরা এগিয়ে। বুননের জন্য তাদের যে নিজস্ব মেশিন রয়েছে তাতেই বোনা হয় মণিপুরি শাড়ি। আরামদায়ক ও হালকা নকশা এর মূল আকর্ষণ। সিলেট, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার অঞ্চলেই বুনন হয় এ শাড়ির। তবে চাহিদার তুলনায় এর জোগান অপ্রতুল।

রাজকুমারী মইরাং থইবির নামানুসারে এ শাড়ির নামকরণ। ডিজাইনে ব্যবহার হয় ঝাউ গাছ, শেফালি ফুল থেকে মন্দিরের নকশা। কেমন কাপড় বোনা হবে তা নির্ভর করে স্থানীয় আবহাওয়ার ওপর। মণিপুরীদের তৈরি ফানেকে ব্যবহার করা হয় উজ্জ্বল ও বিপরীতধর্মী রঙ। সাধারণ বুননে এরা সমতল পাড়ের কাপড় তৈরি করলেও বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য এরা বেছে নেয় মন্দিরের নকশা।

দেখা যায় দেশের ভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন নান্দনিক শাড়ি তাদের নিজস্ব বয়ন নকশার বুননে দেশীয় সংস্কৃতিকে সগর্বে উপস্থাপন করছে জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বাঙালি সামাজিক আনুষ্ঠানিকতা থেকে শুরু করে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, প্রশাসনিক কর্মক্ষেত্র সব জায়গায়ই শাড়ি তার স্বতন্ত্র জায়গা করে নিয়েছে।

আরো নিবিড়ভাবে দেখলে একটি শাড়ির আঁচলে পরম যত্নে লালিত থাকে পরিবারের আবেগ, স্নেহ, ভালোবাসাসহ বংশপরম্পরার ইতিহাস। এটি যেন কেবল পরিধেয় বস্ত্র নয়, বরং সুতোর ফোঁড়ে বুনে নেয়া অপার্থিব ভালো লাগা ও ভালোবাসার আশ্চর্য গল্পগাথা। এর ভাঁজে ভাঁজে লুকান থাকে অনুভূতির আর্দ্রতা আর উষ্ণতার ছোঁয়া।

পাশ্চাত্য পোশাক সংস্কৃতির জোয়ারে শাড়ি ক্রমেই এর আবেদন হারিয়ে ফেলছে, সম্প্রতি এমন অভিযোগ উঠলেও সত্য এই যে বাঙালি সংস্কৃতির আচার-আনুষ্ঠানিকতায় আজও শাড়ির জনপ্রিয়তাই শীর্ষে। কনে দেখা থেকে বিয়ের পিঁড়ি। এমনকি সংসার-জীবনের চাবিটাও এ শাড়ির আঁচলেই সযত্নে সামলানো হয়। মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর থেকে ঈদুল আজহা, হিন্দুদের পূজা-পার্বণেও শাড়ি সমাদৃত। সনাতন ধর্মীয় উৎসবে তো প্রতিমার অঙ্গ সাজে বাহারি শাড়ির ঢঙে। হিন্দু সমাজে শাড়ির রঙের ভিন্নতা ধারণ করে নারীর সধবা বিধবার পরিচয়।

রাষ্ট্রীয় নানা গুরুত্বপূর্ণ দিবসেও শাড়ির বর্ণ-বৈচিত্র্যে ইতিহাসকে ধারণ করা হয়। বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে চিরায়ত লোকজ উপকরণের পসরার ছাপে সজ্জিত লাল-সাদা শাড়ির সঙ্গে যেমন মাটির গহনার নয়ন জুড়ানো আভরণই সেরা, তেমনি ফাল্গুনী আমেজের পূর্ণতা মেলে কুসুম অলংকার আর ফুলেল নকশা শোভিত শাড়িতে। বিজাতীয় সংস্কৃতিতেও আজ শাড়ির জৌলুস উপস্থিত। তা না হলে ভালোবাসা দিবসে আবেগ প্রকাশে লাজুক প্রেমিকার পরনে কেন লাল শাড়ির বর্ণিলতা? আবার ঘরের চৌকাঠ ডিঙিয়ে কর্মক্ষেত্র, সেখানেও শাড়ির আবেদনের জয়জয়কার।

আদতে বাঙালি নারীর সৌন্দর্য আর ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে শাড়ির বিকল্প নেই। এ বস্ত্রের আবরণ পলকেই নারীকে দেয় পূর্ণতা, মোহনীয়তা। উৎসব আয়োজন তো বটেই, নিজের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে আবেগ আর পরিণয়ের মিশেল করে নিতে তাই নিঃসন্দেহে যুগ যুগ ধরে শাড়ি বাঙালি রমণীর কাছে অনন্য আর আভিজাত্যের এক গৌরবময় প্রতীক।

সোনিয়া তাসনিম: লেখক