ক্রাইমিয়া পুনর্দখল অভিযানে নামবে ইউক্রেন?

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২২ সালের অক্টোবরে কের্চ সেতুতে ট্রাক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় ইউক্রেন ছবি: রয়টার্স

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্রাইমিয়া দখল করার মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ক্রাইমিয়ার দখল ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়নি ইউক্রেন। অন্যদিকে অভিযানের ঘাঁটি হিসেবে উপদ্বীপটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারছে না রাশিয়া। তবে সম্প্রতি মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ক্রাইমিয়া পুনর্দখলে চলতি বছর জোর অভিযান শুরু করবে কিয়েভ। এ অভিযানে ওয়াশিংটনের পূর্ণ সমর্থন দেয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা। ফলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, অভিযান শুরু করলে ক্রাইমিয়ার দখল ধরে রাখতে পারবে রাশিয়া? খবর আল জাজিরা।

ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের নেতৃত্ব দেয়া অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল বেন হজেস আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমাদের ইউক্রেনীয় ও রুশদের কাছে শতভাগ স্পষ্ট থাকতে হবে। ক্রাইমিয়াকে পুনর্দখলে আমরা শতভাগ কিয়েভের পক্ষে রয়েছি। ক্রাইমিয়া ইউক্রেনের সার্বভৌম। তারা যদি কের্চ সেতু ধ্বংস করতে চায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন বন্ধ করবে না। চলতি বছরেই ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে আমি মনে করছি।’

প্রসঙ্গত, রুশদের কাছে কের্চ সেতুর তাৎপর্য অনেক। কারণ রুশ ভূখণ্ড ও ক্রাইমিয়ার মধ্যে একমাত্র যোগাযোগের পথ এ সেতু। এটি ক্রাসনোদার ক্রাই অঞ্চল থেকে উপদ্বীপের পূর্ব দিক পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার (১২ মাইল) বিস্তৃত। ২০১৮ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেতুটির উদ্বোধন করেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণ মাত্রায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কের্চ সেতু রাশিয়ার দক্ষিণ ফ্রন্টের জন্য সেনা ও রসদ পাঠানোর গুরুত্বপূর্ণ রুট হয়ে উঠেছে।

গত দুই বছরের বেশি সময়ে রাশিয়া ওই সেতুর মাধ্যমে যে সুবিধা পেয়ে আসছিল, তা নিষ্ক্রিয় করেছে ইউক্রেন। দেশটি নৌ ও এরিয়েল ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে বারবার সেভাস্তোপোল ও ক্রাইমিয়ার পাঁচটি প্রধান বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। ফলে কৃষ্ণ সাগরে ঘাঁটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে রুশ নৌবহর। রুশ বিমান বাহিনী যুদ্ধবিমানগুলোকে রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিয়েছে। এরপর বারবার চেষ্টা করতে থাকলেও রুশ বিমান বাহিনী সেভাবে সুবিধা করে উঠতে পারছে না। দেশটির বিমান বাহিনীর মুখপাত্র সম্প্রতি ক্রাইমিয়াকে ‘রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কবরস্থান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এসব কারণে সেতুটি রসদ ক্রাইমিয়ায় সরবরাহের পথ ব্যতীত সামরিক ব্যবহারের জন্য অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

২০১৪ সালে ক্রাইমিয়ায় রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউক্রেনে যাওয়া প্রথম মার্কিন কর্মকর্তাদের একজন স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডার অ্যান্ড্রু গ্রিমস। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘কের্চ সেতুতে অভিযান নির্দিষ্ট এক সময়ের ওপর নির্ভর করছে। কিয়েভ যখনই বিশ্বাস করবে ক্রাইমিয়ার অধিকাংশ নাগরিক ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ চাচ্ছে ঠিক তখনই তারা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেবে।’

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া ক্রাইমিয়ায় একটি গণভোটের আয়োজন করে। ভোটে বেশির ভাগ মানুষ রাশিয়ায় যোগদানের পক্ষে ভোট দেয়। তবে বিশ্বের অনেক দেশ এ গণভোটকে জোরপূর্বক এবং বৈধ নয় বলে অভিহিত করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন