প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার হওয়ার দৌড়ে আছেন তারা

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইলোন মাস্ক, গৌতম আদানি, জেনসেন হুয়াং

এক শতাব্দীরও বেশি আগে ঘোষিত হয়েছিল পৃথিবীর প্রথম বিলিয়নেয়ারের নাম। ১৯১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর স্ট্যান্ডার্ন্ড অয়েলের শেয়ারদর ২ হাজার ১৪ ডলারে পৌঁছানোয় এ খেতাব বাগিয়ে নিয়েছিলেন কোম্পানিটির মালিক জন ডি রকফেলার। তৎকালীন প্রেক্ষাপটে ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার আয় করাকে প্রায় অসম্ভব ভাবা হতো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা এখন তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আলোচনা হচ্ছে কে হবেন বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার বা ১ হাজার বিলিয়ন (১ লাখ কোটি) ডলারের মালিক।

প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত অন্তত অর্ধ ডজন কোম্পানি এ মাইলফলক অতিক্রম করেছে। ওয়ারেন বাফেটের ৯৪তম জন্মদিনের আগে সম্প্রতি বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে প্রবেশ করেছে। এনভিডিয়ার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার। এক বছর আগেই ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করেছে কোম্পানিটি। কিন্তু ব্যক্তি হিসেবে কে হবেন প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার?

ইনফরমা কানেক্ট একাডেমির এক প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, সম্পদের বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার বিবেচনা করলে টেসলার সিইও ইলোন মাস্কই হতে যাচ্ছেন পৃথিবীর প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, বর্তমানে মাস্ক বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, যার সম্পদের পরিমাণ ২৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার। কানেক্ট একাডেমির পূর্বাভাস মতে, মাস্কের সম্পদ যদি বার্ষিক গড় ১১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে ২০২৭ সালের মধ্যে তিনি ট্রিলিয়নেয়ার হবেন।

প্রতিবেদন অনুসারে, দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ট্রিলিয়নেয়ারের খেতাব জিততে পারেন ভারতের আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি। সম্পদের সাম্প্রতিক ১২৩ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধির হার ধরে রাখতে পারলে ২০২৮ সালে ট্রিলিয়নেয়ার হবেন তিনি। একই বছর আদানির সঙ্গী হতে পারেন এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং। তার সম্পদ গত পাঁচ বছরে ৩০০ কোটি ডলার থেকে ৯ হাজার কোটি ডলারের বেশি বেড়েছে। এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম গত বছর ৩০০ শতাংশ বাড়ার পর চলতি বছর ১১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। হুয়াংয়ের সম্পদ গড়ে বার্ষিক ১১২ শতাংশ হারে বাড়তে থাকবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্রিলিয়নেয়ারের তালিকায় চার নম্বরে থাকতে পারেন ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি ও খনি খাতের কনগ্লোমারেট বারিতো প্যাসিফিকের প্রতিষ্ঠাতা প্রাজোগো পাঙ্গেস্টু। তিনিও ২০২৮ সালের মধ্যে ট্রিলিয়নেয়ার হতে পারেন।

সম্ভাব্য তালিকার পাঁচে আছেন বিলাসপণ্য নির্মাতা এলভিএমএইচের সিইও বেহনা আহনোঁ। তিনি বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি, যার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি। বেহনা আহনোঁ ২০৩০ সালের দিকে ট্রিলিয়নেয়ারের ক্লাবে ঢুকে যেতে পারেন। সম্পদ অর্জনের গতি বর্তমান আকারে থাকলে একই বছর তার সঙ্গী হবেন মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ।

বর্তমান শীর্ষ কয়েকজন বিলিয়নেয়ারও ‘চার-কমা ক্লাবে’ (যেহেতু এক ট্রিলিয়ন বা ১,০০০,০০০,০০০,০০০ লিখতে চারটি কমার প্রয়োজন হয়) প্রবেশের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর তালিকায় রয়েছে। তবে তাদের কেউই শীর্ষে দশ ধনীর তালিকায় নেই। ব্লুমবার্গের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ২০ হাজার কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি জেফ বেজোস। তিনি তালিকার ১২ নম্বরে আছেন। ট্রিলিয়নেয়ার হতে তাকে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। গুগলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ এবং সার্গেই ব্রিনকেও ট্রিলিয়নেয়ার হতে ১২ বছর অপেক্ষা করতে হবে। যদিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে তারা আরো আগেই ট্রিলিয়নেয়ার বনে যেতে পারেন।

পর্যবেক্ষকরা বহুদিন ধরে প্রথম ট্রিলিয়নেয়ারের পূর্বাভাস দিয়ে আসছেন। অনেকের মতে, চলতি দশক নয়, বরং আগামী দশকে গিয়ে বিশ্ব প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার পেতে পারে। কেননা আগামী পাঁচ বছরে টেসলা, এনভিডিয়া বা এলভিএমএইচের শেয়ারের দাম গত পাঁচ বছরের মতো দ্রুত নাও বাড়তে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন