‘মেরিটাইম সিকিউরিটি বা সামুদ্রিক নিরাপত্তা’ বর্তমানে একটি বহুল
চর্চিত ধারণা। সমুদ্র তীরবর্তী রাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ধারণাটি
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের
বৈদেশিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং সে অনুসারে বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনার
প্রেক্ষাপটে ধারণাটির প্রাসঙ্গিকতা বেড়ে চলেছে।
সাধারণত সামুদ্রিক নিরাপত্তা ধারণাটি সামুদ্রিক পরিসরে যে
হুমকিগুলো রয়েছে তার প্রকৃতি অনুধাবনে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। সামুদ্রিক নিরাপত্তার
আওতায় প্রধানত দুই ধরনের হুমকি বিশদভাবে আলোচিত হয়। এক. রাষ্ট্র কি কোনো সামরিক বা
কৌশলগত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে? যেমন বাল্টিক সাগরে ক্রমাগত রাশিয়ার নৌ উপস্থিতিকে
বাল্টিক (এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া) ও নরডিক (নরওয়ে ও সুইডেন) রাষ্ট্র
নিজেদের সামুদ্রিক নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখে। একইভাবে বাল্টিক সাগরে ন্যাটোর
ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিকে রাশিয়াও তার নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি হুমকি
হিসেবে উল্লেখ করে থাকে। দুই. অপ্রথাগত হুমকি, যেমন অবৈধভাবে মৎস্য ও সামুদ্রিক
সম্পদ আহরণ, মানব ও মাদক পাচার, অবৈধ অভিবাসন, সংঘবদ্ধ অপরাধ (অস্ত্র চোরাচালান),
জলদস্যু ও সামুদ্রিক সন্ত্রাসবাদের বিস্তার, সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানের ক্ষতি ও
জলবায়ু পরিবর্তন প্রভৃতি। এ ধরনের হুমকির প্রভাব প্রকৃতিগত দিক বিবেচনায় ট্রান্সন্যাশনাল
বা আন্তঃসীমান্ত। অর্থাৎ এ হুমকির প্রভাব কোনো একক রাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ থাকে না,
উপরন্তু সামুদ্রিক তীরবর্তী গোটা অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করে।
ফলে এসব হুমকি বিবেচনা সাপেক্ষে সামুদ্রিক নিরাপত্তা ধারণাটির
সঠিক সংজ্ঞায়নে—ক. একদিকে যেমন বৃহৎ ও ক্ষুদ্র শক্তির ভূরাজনৈতিক, ভূকৌশলগত ও ভূ-অর্থনৈতিক হিসাবনিকাশ
মাথায় রাখতে হবে; এ হিসাবনিকাশে লাভবান হতে রাষ্ট্র সামরিক
শক্তিবর্ধনে বেশি গুরুত্ব দেবে নাকি কূটনৈতিক
তৎপরতার দরুন আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও সহযোগিতার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে? খ. এছাড়া যে নাজুক বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সমুদ্রসংলগ্ন
অঞ্চলে অপ্রথাগত ঝুঁকি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে তা নিরূপণ করা, ঝুঁকি প্রশমনের
লক্ষ্যে রাষ্ট্রকে তার বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনায় বহুপক্ষীয়
আদর্শকে প্রাধান্য দেয়া এবং এ প্রাধান্যই যে পর্যায়ক্রমে আন্তঃসীমান্ত ঝুঁকি
মোকাবেলায় সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পথ প্রশস্ত করতে পারে—সামুদ্রিক
নিরাপত্তার সংজ্ঞায়নে সে দিকটিও গুরুত্ব পাবে।
এখন প্রশ্ন হলো, সামুদ্রিক নিরাপত্তা কেন এত
গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল? এ প্রশ্নের উত্তর অনেক বিস্তৃত। সোজাসাপ্টা ভাষায় বললে,
অঞ্চলভেদে সামুদ্রিক নিরাপত্তার প্রাসঙ্গিকতায় ভিন্নতা দেখা যায়। তবে সমুদ্রের
ঐতিহাসিক উপযোগিতা, বিশেষত যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্ষমতা বিস্তারের পথে যখনই
কোনো হুমকি এসেছে তখনই সামুদ্রিক নিরাপত্তা ইস্যুটি প্রধান হয়ে
উঠেছে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে যখন বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কারণে পারস্পরিক
নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে এবং সে বাণিজ্য পরিচালনার সর্ববৃহৎ ক্ষেত্র যখন সমুদ্র,
তখন এ যাত্রাপথের যেকোনো ঝুঁকি আন্তর্জাতিক পরিক্রমায় গুরুতর হয়ে ওঠে।
ভারত মহাসাগরের ক্ষেত্রেও কথাটি যথাযথ, এমনকি
বিশ্বের অনেক সামুদ্রিক অঞ্চলের তুলনায় তা অধিক ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য। যেমন ইসরায়েলি,
ইসরায়েলি মালিকানাধীন ও ইসরায়েলমুখী পশ্চিমা বিশ্বের জাহাজে ইয়েমেনের হুথি
বিদ্রোহীদের সামরিক হামলায় বিশ্বের সামুদ্রিক যোগাযোগ ও বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ
রুটে (বাব এল মান্দেব হয়ে লোহিত সাগর, লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ খাল, সুয়েজ
খাল হয়ে ভূমধ্যসাগর এবং ভূমধ্যসাগর ব্যবহার করে ইউরোপ ও আমেরিকা) নিরাপত্তাহীনতা
বিরাজ করছে; আবার সোমালিয়ার উপকূলে প্রায়ই বাণিজ্যিক জাহাজ জলদস্যু দ্বারা
আক্রান্ত হওয়া; গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি ঘিরে ইরান বনাম যুক্তরাষ্ট্র বলয়ের
সংকট তৈরি হওয়া; জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপকূল বা দ্বীপ
তলিয়ে যাওয়ার ভয় প্রভৃতি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তার গুরুত্বকে আরো স্পষ্ট
করে তুলেছে। ভারত মহাসাগরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ;
বঙ্গোপসাগরে এ হুমকিগুলো ক্রমে জটিল হয়ে উঠতে পারে।
তবে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো-প্যাসিফিক) অঞ্চল ঘিরে
বৃহৎ শক্তির ভূরাজনৈতিক ও ভূকৌশলগত দাবার চালে, যেমনটি রবার্ট ডি কাপলান তার
বিখ্যাত Monsoon: The Indian Ocean and the
Future of American Power গ্রন্থে উল্লেখ
করেছেন, আন্তঃসীমান্ত ঝুঁকি অনেকক্ষেত্রে কোণঠাসা হয়ে
পড়ছে। কোণঠাসা হয়ে পড়ার ক্ষেত্রে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে ইন্দো-প্যাসিফিক
অঞ্চলে চলমান ভূরাজনৈতিক ও ভূকৌশলগত রাজনৈতিক আধিপত্যের ব্যাপকতা,
যার প্রধান একটি অংশ বঙ্গোপসাগর। এ উপসাগরীয় অঞ্চল ঘিরে আঞ্চলিক শক্তি চীন ও
ভারতের ধারাবাহিক সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি, মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র গৃহযুদ্ধ ও
আঞ্চলিক নিরাপত্তায় তার প্রভাব, মালাক্কা প্রণালি ঘিরে
ঘনীভূত হওয়া মালাক্কা সংকট, ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক
সম্পাদকের আধিক্য ও তার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় প্রতিযোগিতা,
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত জোট গঠনের তোড়জোড় এবং
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করা প্রভৃতি
কারণে ভারত মহাসাগরের ন্যায় বঙ্গোপসাগরের সামুদ্রিক নিরাপত্তার প্রশ্নটিও মুখ্য হয়ে
উঠেছে।
অধিকন্তু ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাবে স্বাভাবিকভাবেই
এ অঞ্চলের বৃহৎ শক্তিগুলোর কৌশলগত স্বার্থ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন
হচ্ছে। তবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অঞ্চলটির বৃহৎ ও
ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের আচরণে ভিন্নতা লক্ষণীয়। বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, এর
অন্যতম কারণ ভারত নিজেকে ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের নিরাপত্তায় পতাকাবাহী
বা কেন্দ্রীয় কর্মক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মিত্ররা ভারতের সে ভূমিকাকে সমর্থন করে এবং ভারতকে সঙ্গে
নিয়ে চীনের বিপরীতে ভূরাজনৈতিক ও ভূকৌশলগত প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে চায়।
বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে একটা স্বতন্ত্র
বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। কারণ এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের যেমন অর্থনৈতিক
ও কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে, তেমনি তাদের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কও রয়েছে এবং সাম্প্রতিক
সময়ে চীনের সঙ্গে তাদের কৌশলগত সম্পর্কের পরিধিও বেড়েছে। যেমন
শ্রীলংকার হাম্বানটোটা দ্বীপে চীনের উপস্থিতি, মালদ্বীপের সঙ্গে
চীনের নিরাপত্তাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, বাংলাদেশের কৌশলগত সক্ষমতা বিকাশে
চীনের সহায়তা, মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশ ঘিরে
চীনের কৌশলগত পরিকল্পনা প্রভৃতি বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে চীনের কৌশলগত উপস্থিতির জানান
দিচ্ছে। তবে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলজুড়ে চলমান ভূরাজনৈতিক
ও ভূকৌশলগত প্রতিযোগিতায় এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলো কোনো একক শক্তির
পক্ষ অবলম্বন থেকে বিরত রয়েছে। বস্তুত যথাযথ কূটনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে চলমান
প্রতিযোগিতায় যেন রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা, বিশেষত সামুদ্রিক
নিরাপত্তা জোরদার করতে পারে সে লক্ষ্যে তারা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে,
প্রসঙ্গত বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে শক্তির ভারসাম্য রক্ষার দিকে বেশি গুরুত্ব
দিচ্ছে বা দেয়ার চেষ্টা করছে।
ভূরাজনৈতিক সমীকরণের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী দেশগুলোর অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত ও টেকসই করতে সামুদ্রিক নিরাপত্তা অতীব জরুরি হয়ে উঠেছে। এ
উপসাগরসংলগ্ন অঞ্চলে বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ
বাস করে, ফলে তাদের জীবিকা ও আর্থিক নির্ভরশীলতার প্রধান নিয়ামক হিসেবে
ঐতিহাসিকভাবে বঙ্গোপসাগর বিবেচিত হয়ে আসছে। অধিকন্তু বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন রাষ্ট্রের
অধিকাংশ ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ পরিচালনায় সামুদ্রিক নিরাপত্তা, বিশেষত
কৌশলগত সামুদ্রিক প্রণালি ও যাত্রাপথের (বাণিজ্য রুটের)
নিরাপত্তা বিধান আবশ্যকীয়। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের প্রাকৃতিক সম্পদের
আধিক্য এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সমূহ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। তবে সেক্ষেত্রে
সুনীল অর্থনীতি ধারণার যথাযথ প্রয়োগ, অর্থাৎ সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষা ও সমুদ্র
তীরবর্তী স্থানীয় অধিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয় বিবেচনাপূর্বক সামুদ্রিক
সম্পদের পূর্ণ সদ্ব্যবহার সামুদ্রিক নিরাপত্তার ভিত মজবুত করতে পারে।
তবে বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সবচেয়ে ঝুঁকিতে ফেলেছে
আন্তঃসীমান্ত হুমকিগুলো। যেমন মানব ও মাদক পাচার, পরিবেশগত ঝুঁকি, অপরিকল্পিতভাবে
সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ও অবৈধ প্রবেশাধিকার, জলদস্যুতা ও সংঘবদ্ধ অপরাধের ব্যাপকতা,
সাইবার ও প্রযুক্তিগত হয়রানি প্রভৃতি। এ ঝুঁকিগুলো যেহেতু কোনো একক
রাষ্ট্রের সমুদ্রসীমায় বিরাজমান নয়, উপরন্তু ঝুঁকিগুলো আন্তঃসীমান্ত
প্রকৃতির, অর্থাৎ সমুদ্রসংলগ্ন প্রতিটি দেশের নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে এ ঝুঁকিগুলোকে
চিহ্নিত করা হয়। ফলে কোনো একক
রাষ্ট্র এ ঝুঁকি প্রশমনে সক্ষম নয়। তাই আঞ্চলিক পর্যায়ে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিধিকে
প্রসারিত করার মাধ্যমে ঝুঁকি প্রশমনের চেষ্টা করা দরকার। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের
সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিধানে আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলোকে বহুপক্ষীয়
আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে পরস্পর দায়িত্ব ভাগাভাগি করার এবং একত্রে অপ্রথাগত নিরাপত্তাঝুঁকি
মোকাবেলায় সচেষ্ট হওয়ার ব্যাপারে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জোর দিয়েছেন।
এক্ষেত্রে আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পড়বে, বিশেষত সমুদ্র
সম্পর্কিত গবেষণা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের, যাতে সমুদ্র সম্পর্কিত বুদ্ধিবৃত্তিক
চর্চা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া পারস্পরিক তথ্য ও প্রযুক্তির বিনিময়, আলাপ-আলোচনার
সুযোগ তৈরি ও সমুদ্র খাতে জড়িত বিভিন্ন অংশীজনের মাঝে সমন্বয়ের দরুন বঙ্গোপসাগরের
আন্তঃসীমান্ত ঝুঁকি প্রশমন ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় এ দেশগুলো আরো সক্ষম ও
সচেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে।
বদিরুজ্জামান: গবেষণা কর্মকর্তা, বাংলাদেশ
ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম
রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিমরাড)