যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী বিতর্ক

মুখোমুখি হ্যারিস-ট্রাম্প, কে কাকে ধরাশায়ী করবে

বণিক বার্তা অনলাইন

ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে প্রথম ও সম্ভবত একমাত্র বিতর্কে আজ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পরস্পরের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। পেনসিলভানিয়ায় এ নির্বাচনী বিতর্ক আয়োজন করেছে এবিসি নিউজ। খবর নিউইয়র্ক টাইমস।

বিতর্কের এই ৯০ মিনিটকে ধরা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে। তিনি কেমন প্রেসিডেন্ট হবেন তা জানতে চোখ রাখবে লাখো মানুষ। কমলা এবারই হয়তো পেতে যাচ্ছেন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক দর্শক।

বেশ কঠিন একটি গ্রীষ্ম পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আশায় এই বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে প্রতিস্থাপনের পর থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে ভোটের ব্যবধান কমিয়ে এনেছেন কমলা হ্যারিস।

আমেরিকানরা আগাম ভোট দেয়া শুরু করার আগে মঙ্গলবারের এই বিতর্ক হতে পারে ট্রাম্পের জন্য সেই স্রোত উল্টানোর অন্যতম সেরা সুযোগ। তবে হ্যারিসের সহযোগী এবং সমর্থকরা চান, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্টকে উত্তেজিত করে অসংলগ্ন বক্তব্য দিতে বাধ্য করবেন। অন্যদিকে, ট্রাম্পের দল চায় বিতর্কটি অর্থনীতি, অভিবাসন এবং বৈশ্বিক বিশৃঙ্খলা— এই তিনটি বিষয়ের ওপর কেন্দ্রীভূত করতে। কারণ, এই বিষয়গুলোতে ট্রাম্প সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন।

রিপাবলিকান সমর্থকেরা বলছেন, মঞ্চে কথা বলতে পারবেন না কমলা। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট সমর্থকেরা বলছেন, কমলার প্রস্তুতি যথেষ্ট ভালো। তিনি মঞ্চে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিতে প্রস্তুত।

মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক এবং পররাষ্ট্রনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প। সেখানে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং সাবেক ডেমোক্রেটিক প্রতিনিধি তুলসি গ্যাবার্ডও রয়েছেন। হ্যারিস মক বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন ফিলিপ রেইন্সের সঙ্গে, যিনি ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটনের বিতর্ক প্রস্তুতির সময় ট্রাম্পের ভূমিকায় ছিলেন।

২০১৯ সালের প্রাইমারি বিতর্কে কমলা হ্যারিসের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তটি এসেছিল যখন হাওয়াইয়ের প্রতিনিধি তুলসি গ্যাবার্ড ক্যালিফোর্নিয়ার কৌঁসুলি হিসেবে কাজের জন্য হ্যারিসকে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। মুহূর্তের জন্য অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলেন হ্যারিসের প্রচারণা শিবির। এরপরও অবশ্য কার্যকরভাবে জবাব দিতে কিছুটা হিমশিম খেয়েছিলেন হ্যারিস।

তবে ধীরে ধীরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত আক্রমণ চালানোয় নিজের পারদর্শীতা প্রমাণ করেছেন কমলা হ্যারিস। তবে অসংলগ্ন মুহূর্তে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখানোয় তার মাঝে কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একজন রাজনৈতিক বিতার্কিক হিসেবে পারফরমেন্সে অনেকটা উন্নতি করেছেন হ্যারিস। তবে একজন টেলিভিশন উপস্থাপকের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেয়ে ট্রাম্পকে ধরাশায়ী করা একেবারেই আলাদা। কারণ, রাজনৈতিক ফেয়ার প্লেতে প্রতিষ্ঠিত নিয়মগুলোর প্রতি অনেক সময়ই কোনো সম্মান দেখাননি ট্রাম্প।

হ্যারিস এবং ট্রাম্পের মধ্যে আর কোনো বিতর্ক এখনো নির্ধারিত না হওয়ায় এবিসি নিউজের এই আয়োজনকেই সাম্প্রতিক মার্কিন রাজনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৯০ মিনিট হিসেবে ধরা হচ্ছে। কারণ, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথম বিতর্কে নাস্তানাবুদ হয়ে নির্বাচনী দৌড় থেকেই সরে দাঁড়াতে হয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। হ্যারিস তাই জানেন, ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ভালো না করলে নির্বাচনে হেরে এর মাশুল গুনতে হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন