‘‌আমাদের গ্লাস, সিরামিক দুটোই মেগাফ্যাক্টরি’

ছবি : বণিক বার্তা

আমরা যখন বিভিন্ন ধরনের শিল্পে বিনিয়োগ করছিলাম, তখন যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে সেটা হলো সঠিক সময়ে আমাদের প্রকল্পগুলো শেষ হতো না। বিল্ডিং সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তিন-চারটি বড় কোম্পানির সঙ্গে কাজ করেছি। এগুলোর মধ্যে দুটো ফ্যাক্টরিকে আমরা নিজেরাই দুটি বড় ইউনিট বানিয়ে দিই, যাতে তারা আমাদের ফ্যাক্টরিকে সময়মতো সাপোর্ট করতে পারে। বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন বিল্ডিং নির্মাণে দেরি হওয়ায় আমাদের প্রকল্পগুলোর ব্যয় অনেক বেড়ে যেত। এ কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিই নিজেরাই একটি ফ্যাক্টরি চালু করব। এরপর আমরা ফ্যাক্টরিটি তৈরি করি। এ ফ্যাক্টরির কারণে স্বল্প সময়ে আমাদের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। এটা আমরা শুরু করেছি ২০১৩-১৪ সালে। আমরা এখন বছরে ১২-১৪ হাজার টন স্ট্রাকচারাল স্টিল ফ্যাব্রিকেট করি। আমাদের খরচও সাশ্রয় হয়। আমরা মানও খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। পাশাপাশি সময়মতো কোনো কাজ সম্পন্ন করতে পারি।

বাংলাদেশে এ খাতে এখন ৪০-৫০টি কোম্পানি উৎপাদন করে। আমি যদি দেশের শীর্ষ চারটি কোম্পানির সঙ্গে নিজেকে তুলনা করি, তাহলে বলব শীর্ষ চার কোম্পানির সঙ্গে আমার তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আমাদের লেজার কাটিং সিস্টেম, শুট ব্লাস্টিং সিস্টেম, আমাদের অটোমেটিক ওয়েল্ডিং লাইন্স শীর্ষ ৪-এ থাকা কোম্পানিগুলোর মতো একই ধরনের। আমরা বাইরের কাজের ক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করি। আমরা বিল্ডিংয়ের কাজের ক্ষেত্রে অনেক ঠিকাদারকে কাজ দিয়েছি, কিন্তু সময়মতো করতে পারেননি। আবার ওনাদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি অনেকে বিল্ডিং করে দিয়েছেন কিন্তু টাকা পাননি। আমরা এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখি। টাকা না পাওয়ার আশঙ্কা থাকলে আমরা তাদের সঙ্গে কাজই করি না। ফান্ডামেন্টালি আমরা এটা বোঝার চেষ্টা করি, সময়মতো আমরা কাজ দেয়ার চেষ্টা করি। আমাদের গ্রাহকও আমাদের ওপর সন্তুষ্ট। আমরা কাজের ব্যাপারে খুবই সিলেক্টিভ। আমরা দুই-তিন হাজার টন ইউনিক ফ্যাব্রিকেট করেছি। তার মধ্যে একটি প্রেস্টিজিয়াস কাজ ছিল সেটা হলো এয়ারপোর্টের এভিয়েশন টাওয়ার যেটা, সেটা আমাদের করা। এটা আমরা জাস্ট ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য করেছি। সুতরাং প্রযুক্তিগতভাবে শীর্ষ তিন-চারটি কোম্পানির সঙ্গে তুলনা করলে আমরা সমসাময়িক পর্যায়ে আছি। আমরা রাফলি ১২-১৪ হাজার টন স্টিল ফ্যাব্রিকেট করি। আমার ধারণা, অন্য শীর্ষ কোম্পানিগুলো ১৫-২০ হাজার টন ফ্যাব্রিকেট করে। সুতরাং আমরা টপ প্লেয়ারদের মধ্যেই আছি।

আমরা সময়মতো কাজ দিতে পারি এবং কোয়ালিটিও মেইনটেইন করি। আমরা ৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের সর্ববৃহৎ রুফ সোলার কোম্পানি। আমাদের টার্গেট ১০০ মেগাওয়াটে যাওয়া। বছরের শুরুতে কমিটমেন্ট করেছিলাম ৪০ মেগাওয়াট। আমরা একটি রুফ বানাই, যেটাকে আমরা বলি ক্লিপ লক সিস্টেম, বাংলাদেশে সম্ভবত আমরাই করি, আমরা একটি সোলার রুফ কমপ্লাইল বিল্ডিং তৈরি করি। বাংলাদেশের অন্যান্য কোম্পানি স্পেশাল অর্ডারের ভিত্তিতে এ ধরনের বিল্ডিং তৈরি করে। তবে আমাদের প্রতিটা বিল্ডিং বাই ডিজাইনই সোলার রুফ কম্পাইল বিল্ডিং। আপনি এখন বা ১০ বছর পরে করেন, আপনার রুফ ইজ রেডি ফর ইনস্টলিং সোলার। এটার ভিত্তিতে আমাদের প্রতিষ্ঠানকে ইউনিক হিসেবে ধরা যায়। এ মুহূর্তে আমরা আর কোম্পানি সম্প্রসারণের চেষ্টা করছি না। আমাদের কারখানাটি মানিকগঞ্জের কালিগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত।

সিরামিক শিল্প আমরা ২০১০ বা ১১ সালে প্রতিষ্ঠা করি। তখন বাংলাদেশে খুব বড় সিরামিক কোম্পানি ছিল না। আমরা চতুর্থ বৃহৎ সিরামিক শিল্প কারখানা ছিলাম। তখন একদিনে উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ২০ হাজার স্কয়ার মিটার, এখন যেটা এক লাখ স্কয়ার মিটার। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ সিরামিক ফ্যাক্টরি এটা। আমরা স্যানিটারি ওয়্যারেও বিনিয়োগ করি। আমরা এখন স্যানিটারি ওয়্যার ইউরোপে এক্সপোর্ট করছি। স্যানিটারি ওয়্যারের ক্ষেত্রে আমরা রোবোটিকস ব্যবহার করি, যা একেবারে আধুনিক প্রযুক্তি। এটা খুবই এনার্জি কনজার্ভিং একটি অপারেশন, আমরা সর্বনিম্ন এনার্জিতে অপারেট করি। একই সময় নবায়নযোগ্য এনার্জি অর্থাৎ সোলার এনার্জি ব্যবহার করি। আমাদের উৎপাদন প্রায় ৩১ মেগাওয়াট পার আওয়ার, যেটা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সোলার সিস্টেম। এছাড়া আমরা টেবিল ওয়্যারেও ইনভেস্ট করেছি। এ অঞ্চলেরও সবচেয়ে বড় টেবিল ওয়্যার ফ্যাক্টরি। আমরা বছরে ১ লাখ ৩৫ হাজার পিস টেবিল ওয়্যার রফতানি করি। শেষ দুই বছরে আমরা সর্ববৃহৎ টেবিল ওয়্যার এক্সপোর্টার ছিলাম। আমাদের সিরামিক কমপ্লেক্স আকারে অবশ্যই বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কমপ্লেক্স। কারণ এখানে একই সঙ্গে তিন ধরনের সিরামিক পণ্য তৈরি করা হয়। টেকনোলজিক্যালি আমরা এনার্জি নিয়ে খুবই সেনসিটিভ। আমরা আমাদের পরিবেশের নিরাপত্তার জন্য ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করেছি। আমরা এরই মধ্যে সার্কুলার জিরো ডিসচার্জ প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি আমাদের বেশকিছু নিজস্ব ইনিশিয়েটিভ আছে। আমরা জিরো গ্রাউন্ড ওয়াটার কোম্পানি। সিরামিক বানাতে গেলে প্রচুর গ্রাউন্ড ওয়াটার ব্যবহার করা লাগে, আমরা আমাদের পানির ব্যবহার এরই মধ্যে ৬০-৬৫ শতাংশ কমিয়ে ফেলেছি। আমাদের বাকি ৪০ শতাংশ পানি সারফেস থেকে নেয়ার চেষ্টা করছি। আমার ধারণা তিন-চার বছরের মধ্যে সফল হব। আমরা ৭০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জিরো গ্রাউন্ড ওয়াটার ও একই সময় মোস্ট অ্যাডভান্সড সিরামিক কোম্পানি, যারা টাইলস, স্যানিটারি ওয়্যার এবং টেবিল ওয়্যার তৈরি করে। এ মুহূর্তে আমরা বোন চায়না প্রজেক্ট করতে চাচ্ছি, যা আমাদের সিরামিক প্রজেক্টকে আরো সম্প্রসারণ করবে।

টাইলস বানানোর ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্যপূর্ণ টাইলস বানাই। স্যানিটারি ওয়্যারের ক্ষেত্রেও আমরা ডিজাইনে, নান্দনিকতায় আমরা সবার থেকে আলাদা। আমরা আরো এগোতে চাই। আমাদের প্রতিষ্ঠানটি ৫০০-৫৫০ বিঘা জায়গার ওপর। আমরা প্রথম যখন শুরু করেছিলাম তখন আমাদের বিনিয়োগ ছিল ২০০ কোটি টাকার মতো, যেটা বাড়তে বাড়তে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা হয়েছে, এখানে ব্যাংক ফাইন্যান্সেরও কম্বিনেশন রয়েছে।

আমরা যখন প্রথম প্রজেক্টটি করি, সেটা ইসলামী ব্যাংকের ফাইন্যান্সিং ছিল। ইসলামী ব্যাংকের ট্রান্সফর্ম হওয়ার পরে আমরা ইসলামী ব্যাংক থেকে বের হয়ে আসি। আমরা বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ফাইন্যান্সিং করি। আমরা একাধিক ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছি। বিশেষ করে গ্লাস ফ্যাক্টরি হওয়ায় আমাদের লোন এক্সপোজার বেড়ে গেছে। লোন এক্সপোজার বাড়ার জন্য আমরা ১০-১২টি ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছি, আগে চেষ্টা করেছি কম ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করার। 

গ্লাস ফ্যাক্টরিটা আমরা শুরু করেছিলাম কভিডের আগে, কভিডের জন্য আটকে গেলাম, পরে যখন শুরু করলাম মোটামুটি দুই বছরে শেষ করে ফেলেছি। আমরা খুব ডিটেইলসে কারখানাটি তৈরি করেছি। আমাদের একটি প্রজেকশন ছিল অন্তত বার্ষিক ২ অংকের একটি গ্রোথ রেইট অনুমান করেছিলাম—সেটা ছিল ১২ শতাংশ। বর্তমানে এ গ্রাথ রেটটা কমে এসেছে। গ্লাস ফ্যাক্টরির একটি ক্যাম্পেইন লাইন আছে, ১০ বছর চালানোর পর আবার দেড় বছর বন্ধ রাখতে হবে। যত গ্লাস ফ্যাক্টরি বর্তমানে বাংলাদেশে চালু আছে, তার প্রায় চারটি গ্লাস ফ্যাক্টরি, প্রতিটি ফ্যাক্টরিই বন্ধ হওয়ার সিকুয়েন্সে ছিল, সেক্ষেত্রে মার্কেটে একটি গ্যাপ তৈরি হবে, সেখানেও একটি সুযোগ তৈরি হবে। সেটা মাথায় রেখে আমরা দুটোকে কমবাইন্ড করে এক জায়গায় বিনিয়োগ করেছি। আমরা সবচেয়ে স্বচ্ছ গ্লাস তৈরি করছি। আমরা ৭০০ পিপিএমের গ্লাস বানিয়েছি, এটা বাজারে শুধু আমরাই দিচ্ছি। আমরা আবার নতুন করে টার্গেট করছি ৫০০ পিপিএম করব।

গ্লাস ফ্যাক্টরিতে আমরা প্রায় ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। পাঁচ-ছয়টি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে মেজর ফাইন্যান্সিং হলো ইডকল। আমরা প্রাইম ব্যাংক থেকে ফাইন্যান্সিং নিয়েছি, আমরা ব্যাংক এশিয়া থেকে ফাইন্যান্সিং নিয়েছি। এছাড়া আরো কিছু ব্যাংক থেকে ফাইন্যান্সিং নিয়েছি।

অন্যান্য দেশে যে বৈচিত্র্যময় গ্লাস রয়েছে তা থেকে আমরা বাংলাদেশীরা পিছিয়ে। যেমন লোয়ি গ্লাস, এটা বাসায় লাগালে আমাদের ৩০-৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হয়। যেমন শীতকালে গরম ও গরমকালে ঠাণ্ডা করার খরচ কমে আসে। ইউরোপীয় বাসাবাড়িতে সব অবশ্যই লোয়ি গ্লাস হওয়া লাগবে। আমরা এটা নিয়ে স্টাডি করছি। এছাড়া আমরা অন্যান্য ডিজাইন নিয়েও গবেষণা করছি এবং এ খাতে যত ধরনের বৈচিত্র্য আনা যায় আমরা আনার চেষ্টা করছি।

বর্তমানে আমাদের মূল রেসপন্সিবিলিটি হচ্ছে কার্বন রেসপন্সিবিলিটি। আমরা দিকটি খেয়াল রেখেই কাজ করছি। আমাদের আপাতত এ বিষয়ে কোনো সার্টিফিকেশন নেই। আমরা সার্টিফিকেশনের চেষ্টা করলে তা পাব। আমরা এ জিনিসগুলোকে মান্য করেই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে চেষ্টা করি। বাংলাদেশের অনেক ফ্যাক্টরি এখন পরিবেশবান্ধবভাবে তৈরি হচ্ছে, এটা নিয়ে জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব করা উচিত। এদেশে যখন সরকার ছিল না, পুলিশ ছিল না, তখনো কোনো ঘটনা ঘটেনি। অর্থাৎ সামাজিকভাবে আমরা যে একটি সিভিলাইজড নেশন সেটা বিশ্বাস করেছি।

আমরা ডিসকভারি চ্যানেলে যেসব মেগা ফ্যাক্টরিগুলো দেখি, সে রকম মেগা ফ্যাক্টরিও বাংলাদেশে আছে। ডেনিমের অনেক বড় বড় ফ্যাক্টরি হচ্ছে, এমনকি স্টিলেও। আপনি যদি গ্লাস ফ্যাক্টরির কথা চিন্তা করেন বাংলাদেশে এ মুহূর্তে প্রায় ৬০০ টনের পাঁচটি ফ্যাক্টরি আছে। ভারতে এ ৬০০ টনের ফ্যাক্টরি আছে আট-নয়টি। আমাদের যে জুট ফ্যাক্টরি আছে সেখানে ১৬-১৭ হাজার কর্মী কাজ করেন। এটাও একটি মেগা ফ্যাক্টরি। এ বছর আমাদের টার্গেট ১ লাখ ১৭ হাজার টন রফতানি করা। অন্যদিকে পুরো দেশ যেখানে রফতানি করে মোট সাত লাখ টন। আমাদের গ্লাস, সিরামিক দুটোই মেগা ফ্যাক্টরি। আমাদের যে পার্টিক্যাল বোর্ড ফ্যাক্টরি করি, এটা এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টরি ছিল। বাংলাদেশের সিটি গ্রুপ একটি ফ্লোর ফ্যাক্টরি করেছে, যেটা বিশ্বের অন্যতম বড় ফ্লোর মিল। সিটি গ্রুপের সুগার মিল বিশ্বের অন্যতম একটি বড় সুগার মিল। আমাদের যে জনগণ ও তাদের যে চাহিদা সেটাকে সাপোর্ট করার জন্য বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি মেগা ফ্যাক্টরি রয়েছে, যেটার ওপর বিত্তি করে বেশকিছু ইন্সপায়ারিং স্টোরি হতে পারে। তবে আপনি যদি জার্মানির মতো খুব একটা অ্যাডভান্স ইকোনমি দেখেন, ওর ইকোনমি কিন্তু সিমেন্স বা বিএসএফ দিয়ে চলে না, ওর ইকোনমি এসএমই দিয়ে চলে। সম্পদের সঠিক ও সুষম বণ্টন করা উচিত, যাতে এসএমই ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াতে পারে।

আমার কাছে মনে হয় এটা ব্যবসায়িক সেন্স থেকে বলতে পারি—আমাদের লোকাল মার্কেটটা অনেক স্ট্যাবল। যে প্রমিজটা আমার পণ্য করে, যেটাকে আমরা সমন্বিতভাব ব্র্যান্ড বলি সেটা যখন দৃঢ় থাকে এবং ক্রেতা সন্তুষ্ট থাকেন, তখন আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে স্থানীয় বাজার আমার জন্য অনেক বেশি আকর্ষণীয়। তবে আন্তর্জাতিক বাজার আমাকে ভলিউম দেয়। এটা আমাকে লং টার্ম একটি সাসটেইনেবিলিটি দেয়। দুটো জিনিস মিলিয়ে আমি কাজটি করার চেষ্টা করি। তবে একটি পর্যায়ে কিছুটা হাতাশার কারণে আমি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করে ফেলি। কারণ আমি যখন দেখি এখানে শৃঙ্খলা পাচ্ছি না, আমি লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড পাচ্ছি না, তখন আমার কাছে মনে হয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করা দরকার। সেখানে এ রকম যন্ত্রণাগুলো নেই। যার কারণে আমাদের কোম্পানির ৩০ শতাংশ রেভিনিউ ডলারভিত্তিক। স্টিলে ৭০ শতাংশ ডমেস্টিক। আমাদের গত কিছুদিনের ফোকাস ছিল আমরা স্থানীয় বাজারে প্রবেশ করব না। আমি কনজিউমার প্রডাক্ট থেকে বের হয়ে এসেছি, অথচ এ বিষয়ে আমার এক্সপার্টাইজ ছিল। আমি সে জায়গা থেকে বের হয়ে এসেছি, কারণ আমার মনে হয়েছে এ জায়গায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। মানসম্পন্ন পণ্য নিয়ে বাজারে কমপ্লিট করার সুযোগ নেই।

বর্তমানে শুধু ফ্রিজ না, ইন্ডাকশন চুলার ওপরও গ্লাস থাকছে। কিচেন টুল ওখানেও গ্লাস। ফ্রিজেও ডিজাইন করা কাচের গ্লাস থাকে। মাইক্রো ওভেনে গ্লাস ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে যে অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রিতে গ্লাস ব্যবহার করা হয়, সেগুলো এ দেশে তৈরি হয় না। কিন্তু আমার ধারণা, সামান্য ফোকাস দিলে এ গ্লাসগুলোও দেশে তৈরি করা সম্ভব। হোম অ্যাডভান্স বা হোয়াইট গুডসের জন্য যে গ্লাসগুলো ব্যবহার হয় আমরা সেগুলোয় আগ্রহী। কারণ এটা মাচ হাইয়ার ভ্যালু অ্যাডেড প্রডাক্ট। আমরা আশা করছি এখানে মুনাফাও বেশি থাকবে। এ কারণে আমরা সে জায়গায় ফোকাস দেব।

আগামী ২২ অক্টোবর ডুসেলডর্ফে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্লাস শো অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে আমরা অংশগ্রহণ করছি। বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির সঙ্গে আমরা পরিচিত হব। দেখব ও শিখব। আশা রাখি সেখান থেকে বেশকিছু জিনিস নিয়ে আমরা দেশে ফিরব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন