আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি: বণিক বার্তা

কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকাল ৪টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম নিজের ফেসবুক আইডিতে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে আজকে রাতের মধ্যেই গ্রেফতার অথবা গুম করে ফেলতে পারে। আপনারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। সবাই জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিটা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করুন।’

‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সহিংসতা চালিয়ে সরকার উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করে পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এর দায় সরকারেরই। সরকার আলোচনার কোনো পরিস্থিতি রাখেনি। যদি এখনো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজপথ থেকে সরানো না হয়; যদি হল, ক্যাম্পাস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়া হয়, যদি এখনো গুলি অব্যাহত থাকে তাহলে সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে।’

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘কেবল কোটা সংস্কার করলেই ফয়সালা হবে না। প্রথমে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে সরকার দাবি কর্ণপাত করেনি৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার দিয়ে আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা করছে। এখন সংলাপের নামে, দাবি আদায়ের নামে নতুন প্রহসন করছে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির নামেও কোনো প্রসহন মেনে নেওয়া হবে না। সব ছাত্র হত্যার বিচার করতে হবে। ক্যাম্পাসগুলোকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসমুক্ত করতে হবে। অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ করতে হবে। শহীদের রক্তের উপর কোনো সংলাপ হবে না। সরকারকেই সমাধানের পথ বের করতে হবে৷।

নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান করে নাহিদ লেখেন, ‘সরকারকে সমর্থন না দিয়ে ছাত্রদের পাশে থাকুন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান থাকবে বাংলাদেশের জনগণকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন।’ দেশে গণহত্যা চলছে বলেও কোটা আন্দোলনের প্রধান সমন্বক দাবি করেন।

এরপরই কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতা সার্জিস আলম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন এ নিয়ে। তাতে ইঙ্গিত মিলে সংলাপে বসতে রাজি নন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সার্জিস আলম স্ট্যাটাসে লেখেন, একদিকে গুলি আর লাশ অন্যদিকে সংলাপ! আমার ভাইয়ের রক্তের ওপর দিয়ে কীভাবে সংলাপ হতে পারে?

কোটাবিরোধী আন্দোলনের আরেক নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেন, গুলি আর আলোচনা একইসঙ্গে চলতে পারে না।

সংগঠনটির আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে লিখেন, রক্তের ওপর চেয়ার-টেবিল বসিয়ে চা খাওয়ার মতো ধৃষ্টতা দেখাতে পারবো না। শুরুতে আমরাই বারবার সংলাপ চাচ্ছিলাম। খুন করে সেই পথ অবরুদ্ধ করেছে সরকার। সকল বাহিনীকে নিরস্ত্র করুন, খুনগুলোর জন্য দায়ী সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলকে শাস্তির আওতায় আনুন, ক্যাম্পাসগুলো আমাদের হাতে ফিরিয়ে দিন।

তিনি লেখেন, নিরস্ত্র অবস্থায় যাদের শহীদ করেছেন, তাদের রক্তের মূল্য পরিশোধ করা ছাড়া কোনো সংলাপ অসম্ভব। সারাদেশের ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান করছি লড়াই চালিয়ে যাবার, প্রতিরোধ জারি রাখার। বারবার, প্রতিবার হেরে যেতে পারে না বাংলাদেশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন