অভিনয়টাকে উপভোগ করি, করে যেতে চাই

ছবি : সংগৃহীত

একাধারে শিক্ষক, অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক মনোজ প্রামাণিক। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান পেয়েছেন তিনি। ঈদুল আজহায় চরকিতে মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ ‘বাজি’তে অভিনয় করে আলোচিত হয়েছেন গুণী এ অভিনেতা। তার বর্তমান কাজ ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অহিদ রহমান

বর্তমানে কাজের ব্যস্ততা কী নিয়ে?

এ মুহূর্তে শুটিংয়ের ব্যস্ততা কম। তবে কিছুদিন পরেই নাটকের শুটিং শুরু করব। এছাড়া একটি সিনেমার শুটিং শেষ হয়ে গেছে, সেটার ডাবিং করছি। আরেকটি সিরিজের কাজ করেছি, সেটিরও ডাবিং করব। পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবে সিনেমার জন্য যে অনুদান পেয়েছি সেটার প্রস্তুতির কাজ চলছে।

বাজিতে আপনার করা তপু চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাই।

তপু ইমোশনালি আমার কাছের চরিত্র। যদিও সিরিজটিতে তপুর যে অভিজ্ঞতা, সে অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমি যাইনি। কিন্তু আমি এটাকে প্রাসঙ্গিক করার চেষ্টা করেছি। যতক্ষণ শুটিং ও ডাবিংয়ের কাজ চলেছে, ততক্ষণ চরিত্রটার মধ্যে বসবাস করার চেষ্টা করেছি। বাজির গল্পে আমাকে পুলিশ ইন্সপেক্টর হিসেবে দেখা যায়। আমার নাম তপু। আমি ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করতাম। কিন্তু সংসারে হাল ধরতে পুলিশের চাকরি করি। বাকিটা চরকিতেই দেখা যাবে।

শিক্ষকতার পাশাপাশি আপনি অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। সবকিছু ম্যানেজ করেন কীভাবে?

আমি কাজ অনুযায়ী সময়টাকে ভাগ করে নিই।

কোনটা বেশি উপভোগ করেন শিক্ষকতা নাকি অভিনয়?

এটা আমি আলাদা করে বলতে পারব না। যদি কোনো একটা আরেকটা থেকে বেশি হতো তাহলে হয়তো সেদিকে চলে যেতাম।

শিক্ষকতার পাশাপাশি অভিনয় কেন?

ছোটবেলা থেকে আমি দেখেছি আমার পরিবারের মানুষ যাত্রা, থিয়েটার, মঞ্চে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। সেখান থেকেই আমার অভিনয়ের ইচ্ছা জাগে। পরবর্তী সময়ে থিয়েটারে পড়ি, সেখান থেকেই অভিনয় শিখি। আস্তে আস্তে আরো বেশি অভিনয় করতে ইচ্ছা জাগে। কখনো ভাবিনি আমি একজন প্রফেশনাল অভিনেতা হব। এখন করতে করতে অভিনয়টাকে উপভোগ করি, এটা করে যেতে চাই।

সরকারি অনুদানে আপনার প্রযোজিত সিনেমাটির খবর কী?

বর্তমানে সিনেমাটির গবেষণা ও স্ক্রিপ্ট উন্নয়নকাজ চলছে। সিনেমাটির শুটিং শুরু করতে একটু সময় লাগতে পারে।

অনুদানে নির্মিত সিনেমাগুলো কতটা সার্থক হচ্ছে বলে মনে করেন?

আমি সার্থকতা বিচার করতে যাচ্ছি না। সরকার যে অনুদান দিয়েছে এটা বিশাল বড় ব্যাপার। বিশ্বের খুব কম দেশ আছে যারা চলচ্চিত্র নির্মাণে মুক্তভাবে এত পরিমাণ অনুদান দেয়। সিনেমার উন্নয়নে সরকার অনুদান দিচ্ছে এটা খুবই প্রশংসার বিষয়। তবে যারা অনুদান পাচ্ছে তারা চলচ্চিত্র নির্মাণে যদি আরো যত্নবান হয় তাহলে হয়তো ভালো কিছু হবে। সাম্প্রতিক কিছু চলচ্চিত্র আসছে উল্লেখ করার মতো। ইতিহাসে থেকে যাওয়ার মতো সিনেমাও তৈরি হচ্ছে। আবার কিছু চলচ্চিত্র আছে, যেগুলো যথোপযুক্ত মানসম্পন্ন হয়নি। এটা স্বাভাবিক যে কিছু ভালো সিনেমা হবে আবার কিছু খারাপ হবে। সব মিলিয়ে আমি সরকারি অনুদান ও এর ফলাফল নিয়ে আশাবাদী।

সিনেমাটি প্রযোজনা করছেন, একজন অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও নিজে অভিনয় করবেন না বলে জেনেছি। কিন্তু কেন?

নিজে প্রযোজনা করলে অভিনয় করা যাবে না এমন কোনো কথা নেই। আমি যেহেতু অভিনেতা হিসেবে পরিচিত সবার কাছে, যখন সিনেমাটিতে অভিনয় করব তখন আমার দর্শক শুভাকাঙ্ক্ষী তারা হয়তো মনে করতে পারে আমি অভিনয় করছি অর্থাৎ অভিনেতা হিসেবে সিনেমাটিতে যুক্ত। সে ভুলটা ভেঙে দেয়ার জন্য অভিনয় নয় বরং সিনেমাটি আমি প্রযোজনা করছি।

ওটিটি ও বড় পর্দার মধ্যে পার্থক্য কী দেখেন? 

পর্দা যখন বড়, ইমেজটাও বড়। বড় ইমেজের প্রভাবও বিশাল বড়। বড় পর্দার ভাইব্রেশন অনেক বড়। যখন বড় পর্দায় একটা চরিত্রকে দর্শক দেখছে, তখন তার ওপর যেমন একটা প্রভাব পড়বে ছোট পর্দায় এটা হবে না। একটা অন্ধকার ঘরে সাউন্ড এবং বড় একটা ইমেজ দর্শক দেখছে, বিষয়টির ভাইব্রেশনটাই আলাদা। আমি কোনো পর্দাকে খাটো করছি না। শুধু ছোট পর্দা না, এমনকি মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের পর্দা এগুলো এখন উপযোগী হয়ে পড়েছে সিনেমা দেখার জন্য। হয়তো ভবিষ্যতে বড় পর্দার চেয়ে ছোট পর্দাগুলোয় সিনেমা বেশি দেখবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন