বাড়ছে মুঠোফোনের খরচ, পুনর্বিবেচনার অনুরোধ অপারেটরদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি: বণিক বার্তা

মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার ও মুঠোফোনে কথা বলায় এবার খরচ বাড়ছে গ্রাহকদের। মোবাইলের সিম সরবরাহের বিপরীতে কার্ডের উপর ২০০ টাকা এবং সরবরাহকৃত সিমের ব্যবহারের উপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে গ্রাহকের খরচ বাড়বে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

বর্তমানে একজন ভোক্তা মোবাইলে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৭৩ টাকার কথা বলতে পারেন। বাকি ২৭ টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক হিসেবে কেটে নেয় মোবাইল অপারেটরগুলো। প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল সেবার ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলে ভোক্তা ৬৯ দশমিক ৩৫ টাকার কথা বলতে পারবেন।

বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়, মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার বিপরীতে বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া প্রতিটি সিম  কার্ড বা ই-সিম সরবরাহের বিপরীতে বিদ্যমান মূসকের পরিমাণ ২০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটর অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মোবাইল সেবার উপর আরোপিত অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক টেলিকম শিল্প ও গ্রাহকদের ওপর বাড়তি বোঝা তৈরি করবে। এর আগে এই শুল্কের হার ছিল ১৫ শতাংশ। এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ গ্রাহকরা মোবাইলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে আর্থিক চাপে পড়বে। ফলশ্রুতিতে মোবাইলের ব্যবহার সংকুচিত হয়ে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ও সরকারের রাজস্ব আহরণ হ্রাস পাবে।

সংগঠনটি আরো জানায়, মোবাইল সিমের উপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বৃদ্ধি নতুন গ্রাহক প্রবৃদ্ধির হারকেও মন্থর করবে যেখানে দেশে এখনো প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ সংযোগের বাইরে অবস্থান করছে। এই কর বৃদ্ধি দেশের সার্বিক ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া এবং জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব রাখবে যা সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ ভিসনের স্ববিরোধী। আমরা সরকারের কাছে আরোপিত শুল্ক এবং আমাদের পক্ষ থেকে প্রেরিত বাজেট সুপারিশমালা পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের ৪০ শতাংশ নাগরিককে টেলিযোগাযোগ সেবার বাইরে রাখবে। নতুন করে ৫ শতাংশ কর বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে গ্রাহকের কাছ থেকে কর আদায় করা হবে ৩৯ শতাংশ। যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। যার ফলে গ্রাহকরা কম পরিমাণ সেবা ভোগ করবে যেখানে অপারেটররা মূল্যবৃদ্ধি না করলেও দিন শেষে খরচ বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে দেশের ৪০ শতাংশ নাগরিক যেখানে এখনো টেলিযোগাযোগ সেবার বাইরে সেখানে নতুন করে সিমট্যাক্স বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হয়েছে যা আগে পূর্বে ছিল ২০০ টাকা। এখানেও এই অর্থ দিনশেষে সংযুক্তির বাইরে থাকা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে আদায় করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন