৯৮ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান

বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও বিমানবন্দর চালুর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে গতকাল বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীসহ অতিথিরা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিয়েছে বৃহত্তর বগুড়া সমিতি। সংগঠনটির শিক্ষা ট্রাস্ট, ঢাকার উদ্যোগে গতকাল রাজধানীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটোরিয়ামে এ বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।

বৃহত্তর বগুড়া সমিতির সভাপতি কৃষিবিদ কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তারা এ সময় বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বিমানবন্দর চালু ও সিরাজগঞ্জ থেকে জেলায় সরাসরি রেল যোগাযোগের দাবি তোলেন। পরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দেন। 

প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা তার বক্তব্যে বলেন, ‘১০০ ডাক্তারি পড়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮০ জনই মেয়ে এবং ২০ জন ছেলে। ৮০ জনের মধ্যে আবার ৪০ জন ঝরে যায়। সেজন্য এখন ডাক্তারি পড়ায় ছেলেদের ধরে রাখতে কোটা দিতে হয়।’

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মেয়েরা শুধু শিশু, গাইনির ডাক্তার হতে চায়।৷ কেউ নিউরো সার্জারি, কার্ডিয়াক সার্জারি পড়তে চায় না। তারা পড়তে চায় না বলে আমরা এ বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি না। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে পারলে বিভাগগুলোয় ভালো ডাক্তার নিয়ে যেতে পারতাম এবং ভালো সেবা দিতে পারতাম।’ 

তিনি বলেন, ‘জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন।৷ তিনি পারলে কমিউনিটি ক্লিনিকে ডাক্তার বসিয়ে দেন। গ্রামের লোক গ্রামে চিকিৎসা নেবে, শহরে কেন আসবে? কিন্তু আমরা মেয়েদের নিতে পারছি না, মেয়েরা সন্তান নিয়ে এখানে-ওখানে যেতে চায় না। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি, মন্ত্রী হওয়ার আগে বিএমএতে থাকাকালীনও আমি চেষ্টা করেছি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা আলম নান্নু বলেন, ‘আমরা এক হতে পারলে, বগুড়ার শক্তিকে এক করতে পারলে, ন্যায়-ন্যায্যের ভিত্তিতে এক হতে পারলে আমরা আরো এগিয়ে যাব। বগুড়ায় একটি প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, কিন্তু এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হবে, তরুণদের আরো শিক্ষার সুযোগ করে দিতে হবে।’ 

পপুলার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া পিছিয়ে ছিল। এ বগুড়াকে এগিয়ে নিতে বৃহত্তর বগুড়া সমিতির অবদান রয়েছে। আগামীতে এ সংগঠনের হাত ধরে বগুড়া শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতিতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’ এ সময় তিনি শিক্ষা ট্রাস্টে ১০ লাখ টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন। 

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব ও হাডসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এসএম শফিউজ্জামান খোকন বলেন, ‘যাদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে তারা অনেক বড় হবেন, সৎ ব্যবসায়ী হবেন। তারাও আমাদের পর্যায়ে আসবেন।’ বগুড়া সমিতির মাধ্যমে এ সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। 

বৃহত্তর বগুড়া সমিতি শিক্ষা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নাসরিন বেগম বলেন, ‘আমরা কোনো কিছুর প্রত্যাশা নিয়ে নয়, শুধু এ ভালো কাজে নিজেকে নিবেদিত করার জন্যই এ বৃত্তি প্রদান করছি। যারা নিজেদেরই অনুদানের মাধ্যমে বগুড়া এবং ঢাকার শিক্ষার্থীদের এগিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’ 

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন শিক্ষা ট্রাস্টের সাবেক সচিব একেএম কামরুল ইসলাম, বৃহত্তর বগুড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. একেএম আহসান হাবীব রুবেল প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন