অতিধনীদের স্থানান্তর

ফ্লোরিডায় গৃহকর্মীদের বার্ষিক আয় দেড় লাখ ডলারে পৌঁছেছে

বণিক বার্তা ডেস্ক

পাম বিচ এলাকায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাড়ি ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কিছু অঞ্চলে চাহিদার তুলনায় হাউজকিপার বা গৃহকর্মীর সংকট দেখা দিয়েছে। কারণে পাম বিচ সাউথ ফ্লোরিডার মতো অতিধনী অধ্যুষিত অঞ্চলে গৃহকর্মীদের বেতন সর্বোচ্চ বার্ষিক দেড় লাখ ডলারে পৌঁছেছে। বিলাসবহুল ম্যানশন মালিকদের মধ্যে গৃহকর্মীদের বেতন নিয়ে যুদ্ধ অনেকটাই সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে বলে নিয়োগ সংস্থাগুলো জানিয়েছে। খবর সিএনবিসি।

সাম্প্রতিক সময়ে নিউইয়র্ক অন্যান্য অঞ্চল থেকে ফ্লোরিডায় অতিধনীদের স্থানান্তরের হার বেড়েছে। কারণ অঙ্গরাজ্যটিতে বসবাস ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম কর দিতে হয়। কারণে আমেরিকান অতিধনীরা অঞ্চলটিতে সম্পদ স্থানান্তর করছেন। পাম বিচের মতো অভিজাত অঞ্চলে আবাসনের কেনাবেচা বসবাস বেড়ে চলেছে। অন্যান্য খাতের মতো এর প্রভাব পড়েছে হাউজকিপিং শিল্পে।

নিয়োগ সংস্থাগুলোর মতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মীর চাহিদা বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হসপিটালিটি ম্যানেজার বা এস্টেট ম্যানেজার থেকে আয়া, রাঁধুনি, গাড়িচালক বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মীর মতো পদ।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, গৃহকর্মীর অভাব এসব বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। বিলাসবহুল ম্যানশনের পাশাপাশি হোটেল, রিসোর্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পরিচ্ছন্নতা কর্মীর অভাব রয়েছে। কারণে চাহিদা জোগানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খরচ। বেশকিছু নিয়োগ সংস্থার মতে, বর্তমানে গৃহকর্মে প্রারম্ভিক বেতন ঘণ্টায় ৪৫ বা ৫০ ডলার, যা ২০২০ সালের ২৫ ডলারের দ্বিগুণ।

পাম বিচের নিয়োগ সংস্থা ওয়েলিংটন এজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা এপ্রিল বেরুবে বলেন, ‘৩০ বছর ধরে নিয়োগ সংস্থায় কাজ করছি। এর মাঝে আমি কখনো রকম চাহিদা দেখিনি। কারণ বর্তমানে অনেকে পাম বিচ মিয়ামিতে সম্পদ স্থানান্তর করছেন।

পাম বিচের বাড়িগুলোয় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন গৃহকর্মীরা সাধারণত বছরে লাখ ২০ হাজার ডলার থেকে লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত উপার্জন করেন। সেই সঙ্গে পেয়ে থাকেন ওভারটাইম স্বাস্থ্যসেবা।

এপ্রিল বেরুবে আরো বলেন, ‘গৃহকর্মীদের জন্য চমৎকার এটি সুযোগ এসেছে। কিন্তু আমাদের জন্য চাহিদা পূরণ করা কষ্টকর।

লিলি পন্ড সার্ভিস নামের প্রতিষ্ঠানটি গড়েছেন মেলিসা সিটোস। সম্প্রতি তিনি ফ্লোরিডার একজন ক্লায়েন্টকে বার্ষিক ৭৫ হাজার ডলারে গৃহকর্মী দেয়ার প্রস্তাব পান। কিন্তু সে চুক্তি লাখ ১০ হাজার ডলারে গিয়ে ঠেকে। মেলিসা সিটোসের মতে, অর্থের অংক বাজারের চাহিদার সঙ্গে যুক্তিসংগত।

এক্সিকিউটিভ হাউজকিপার যারা মূলত অন্য গৃহকর্মী লন্ড্রির কর্মীদের কাজকর্মের নির্দেশনা দেয়। তারা আরো বেশি বেতন নিয়ে থাকেন। মেলিসা সিটোস জানান, পাম বিচের এমন একজন এক্সিকিউটিভ হাউজকিপারের কথা জানেন, যিনি ওভারটাইমসহ আড়াই লাখ ডলার আয় করেন। এছাড়া বাড়ির মালিকের পরিবারের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের সুযোগ পান। এত সুযোগ সত্ত্বেও গৃহকর্মীর ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন মেলিসা সিটোস।

চাহিদা জোগানের অসামঞ্জস্যতার অন্যতম কারণ দক্ষতার অভাব। এপ্রিল বেরুবে জানান, এসব বাড়ি দেখাশোনার জন্য সুনির্দিষ্ট দক্ষতার প্রয়োজন। সারা বাড়িতে নিঃশব্দে গোপনে চলাফেরা করতে হয় তাদের। অ্যান্টিক সূক্ষ্ম শিল্পসহ বিভিন্ন সামগ্রী যত্নসহকারে পরিষ্কার করা জানতে হয়। এছাড়া জানতে হয় কীভাবে কাপড় সঠিকভাবে ধুতে হবে।

অতিধনীদের বাড়িতে নিয়োগের জন্য গৃহকর্মীদের আরো দক্ষ করে তুলতে একটি স্কুল চালু করার কথা আজকাল ভাবছেন বলেও জানান এপ্রিল বেরুবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন