কারচুপির অভিযোগে মন্ডেলেজকে ৩৬ কোটি ডলার জরিমানা

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : সংগৃহীত

ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বড় ধরনের জরিমানার শিকার হয়েছে ওরিও ও ক্যাডবেরি ডেইরি মিল্ক চকোলেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মন্ডেলেজ। শিকাগোভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানিটির বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ এনেছে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। খবর সিএনএন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ইইউভুক্ত দেশে চকোলেট, কুকিজ ও কফির অবাধ বাণিজ্যে বাধা দিয়েছে মন্ডেলেজ। এজন্য কোম্পানিটিকে ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ ইউরো বা ৩৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়েছে।

ইইউর বাজারে প্রতিযোগিতাবিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান মার্গ্রেথ ভেস্টেগার এক বিবৃতিতে জানান, নিজেদের পণ্যের উচ্চমূল্য বজায় রাখতে ইইউ অঞ্চলে অবৈধভাবে আন্তঃসীমান্ত বিক্রি সীমিত করেছে মন্ডেলেজ।

তিনি বলেন, ‘মূল ঘটনাটি মুদিপণ্যের মূল্য নিয়ে। বর্তমানে ইউরোপীয় নাগরিকদের জন্য এটি মূল উদ্বেগ। স্পষ্টভাবে বললে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অনেকেই জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে সংকটের মধ্যে রয়েছে।’

২০১৯ সালে ইউরোপিয়ান কমিশন মন্ডেলেজের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তবে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয় আরো দুই বছর পর। সংস্থাটি দেখেছে, ইচ্ছাকৃতভাবে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য সীমাবদ্ধ করেছে মন্ডেলেজ ইন্টারন্যাশনাল। চকোলেট বার বিক্রির জন্য কিছু দেশের বাজারে কোম্পানির প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার করেছে।

অভিযোগে আরো বলা হয়, কোম্পানিটি বেলজিয়াম থেকে আমদানি রোধ করতে নেদারল্যান্ডসে চকোলেট বার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। বেলজিয়ামে মন্ডেলেজ একই পণ্যগুলো চড়া দামে বিক্রি করছিল।

মার্গ্রেথ ভেস্টেগার বলেন, ‘কমিশন এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে মন্ডেলেজের অবৈধ অনুশীলন ইইউ রাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতাদের কম মূল্যে পণ্য পেতে বাধা দিয়েছে।’

তবে অভিযোগ পুরোপুরি স্বীকার করেনি মন্ডেলেজ ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বলেন, ‘অভিযোগগুলো বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত। এর বেশির ভাগই কমিশনের তদন্তের আগেই বন্ধ হয়ে গেছে বা ভালোভাবে প্রতিকার করা হয়েছিল।’

তিনি আরো জানান, এ ঘটনাগুলো মন্ডেলেজের সামগ্রিক ব্যবসার প্রতিনিধিত্ব করে না। তবে তারা বাধ্যতামূলক কমপ্লায়েন্স প্রোগ্রামকে শক্তিশালী করেছে।

অবশ্য জরিমানার বিষয়টি আগে থেকেই অনুমিত ছিল। মন্ডেলেজ গত বছর এ বিষয়ে একটি তহবিলও গঠন করেছে। তাই নতুন করে অর্থায়নের প্রয়োজন হবে না বলে জানা গেছে।

ইইউর মতে, কোম্পানির অবৈধ অনুশীলনের শুরু ২০০৬ সালে। অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া ও রোমানিয়ায় চকোলেটের মূল্য বেশি রাখার জন্য কৌশল অবলম্বন করেছিল তারা। সেখানে চকোলেট বার পুনরায় বিক্রি বন্ধ করতে জার্মানির পাইকারি বাজারে সরবরাহ করতে অস্বীকার করে মন্ডেলেজ। এছাড়া রফতানির ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ বাজারের চেয়ে বেশি মূল্যনির্ধারণ করে আসছিল।

বহুজাতিক বেকারি, খাদ্য ও পানীয় উৎপাদনকারী মন্ডেলেজ ১৬০টির বেশি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ২০২১ সালের ফরচুন ৫০০ তালিকা অনুযায়ী, মার্কিন করপোরেশনগুলোর আয়ের হিসেবে এর অবস্থান ছিল ১০৮ নম্বর। ওই বছর কোম্পানিটি আয় করে ২ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন