প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী

পুঁজিবাজার থেকে টাকা নিয়ে ব্যাংক খাতে চাপ কমাতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেছেন, ‘পুঁজিবাজার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলছে না। দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। বেসরকারি খাত পুঁজিবাজার থেকে টাকা নেয় না কেন? সবকিছুর দায়ভার ব্যাংক খাতের ওপর চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়। পুঁজিবাজার থেকে টাকা নিয়ে ব্যাংক খাতের ওপর চাপ কমাতে হবে।’

গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। প্রাক-বাজেট আলোচনাটির আয়োজন করেছে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রফতানি বৃদ্ধি করতে চাই। রফতানি বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও এফডিআই বাড়বে। রফতানি বৃদ্ধির বিষয়ে সরকার মনোযোগী। রাজস্ব খাতে পরিকল্পিত সংস্কার কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং কর আহরণের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই যে আমাদের বাজেটের পরিধি বেড়েছে, এর সঙ্গে মিল রেখে বিভিন্ন পরিকল্পনাও করা হয়েছে। বাজেটে দারিদ্র্য নিরসন, নারীদের উন্নয়ন, জলবায়ু মোকাবেলা, জিডিপি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ৭৮ শতাংশ মানুষ বেকার। এ অবস্থায় সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি আত্মহত্যার শামিল। কারণ সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। রফতানি আয়ের ১২ ভাগ কেন বিদেশে থেকে যাচ্ছে, কেন বছরে ৭০০ কোটি ডলার পাচার হচ্ছে?  আমরা কেন ধরতে পারছি না। সরকার বাহাদুর কেন মুদ্রা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তেমন পদক্ষেপ নেয় না? কেন এগুলোর ব্যাপারে অ্যাকশন নেয় না। আমি বুঝতে পারছি না।’

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আগামী মে ও জুনে সরকারের ব্যয় বাড়বে। এই ব্যয়ের চাপ পড়বে দেশের ব্যাংক খাতে। তবে ব্যাংকগুলোর জন্য এই চাপ নেয়া খুব কঠিন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমরা সরকারকে ঋণ দেব না। আবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তারল্য সুবিধা দিচ্ছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এতে কোনো কাজ হবে না, কারণ ব্যাংকগুলো সরকারকেই আবার ঋণ দিচ্ছে। সুদের হার বৃদ্ধির কারণ সরকার সব খেয়ে ফেলেছে। টাকা ছাপানোর কারণেই মূল্যস্ফীতির বর্তমান এ অবস্থা। যার খেসারত আমরা এখন দিচ্ছি।’ 

আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও কাউন্সিল সদস্য আরিফ খান এফসিএমএর সঞ্চালনায় প্রাক-বাজেট আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আমিন হেলালী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসাইন সিদ্দিক, মাগুরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন, এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মুনির হোসাইন, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মো. মাসরুর রিয়াজ প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন