মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন

২০২৩ সালে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : বণিক বার্তা

বাংলাদেশে ২০২৩ সালে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাক্টিসেস ফর ২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গত বছর বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। আর অধিকাংশ ঘটনার ক্ষেত্রে সরকার জড়িত কর্মকর্তা কিংবা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত করতে এবং শাস্তি দিতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। 

প্রতিবেদনে পুলিশের উল্লেখযোগ্য মাত্রায় শক্তি প্রয়োগের অভিযোগগুলোর তদন্তের দাবি তুলে বলা হয়, সরকার বা সংশ্লিষ্ট এজেন্টদের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ নির্বিচারে বা বেআইনিভাবে হত্যাকাণ্ড চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর শারীরিক আঘাত বা মৃত্যু পুলিশের উল্লেখযোগ্য মাত্রায় শক্তি প্রয়োগের ঘটনাগুলো অভ্যন্তরীণভাবে তদন্তের জন্য পুলিশি নীতিমালা প্রয়োজন। সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি বা এসব ঘটনার তদন্তে স্বচ্ছ কোনো ব্যবস্থাও গ্রহণ করেনি। এসব ক্ষেত্রে হাতেগোনা কয়েকটি ঘটনায় সরকার দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দৃষ্টান্ত পাওয়া গেছে এবং এক্ষেত্রেও দোষীদের সাধারণত প্রশাসনিক শাস্তি দেয়া হয়েছে। 

মানবাধিকার সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে বলপূর্বক অন্তর্ধান ও অপহরণের ঘটনার অভিযোগ অব্যাহত ছিল। স্থানীয় একটি মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বলপূর্বক অন্তর্ধানের শিকার হয়েছে ৩২ জন। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ, এ নিয়ে তদন্ত বা দায়ীদের শাস্তি বিধানে সরকারের প্রয়াস ছিল সীমিত। নাগরিক সংগঠনগুলো জানিয়েছে, এসব ঘটনার শিকারদের অধিকাংশই ছিল বিরোধীদলীয় নেতা, কর্মী ও ভিন্নমত পোষণকারী। 

প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, সংবিধান আইনে নির্যাতন এবং নির্মম, অমানবিক, অপমানজনক ব্যবহার ও শাস্তি দেয়ার বিষয়টিকে নিষিদ্ধ করা হলেও স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, বেসামরিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এর প্রয়োগ করেছে। আইনের মাধ্যমে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে কোনো সন্দেহভাজনকে রিমান্ডে পাঠানোর ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, যেখানে একজন সন্দেহভাজনকে আইনজীবীর উপস্থিতি ছাড়াই জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, এসব রিমান্ড চলাকালে অনেক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। যারা হেফাজতকালীন নিপীড়ন প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছেন, তারা হয়রানি ও হুমকির মুখোমুখি হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের কেউ কেউ প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার ভয়ে মামলা প্রত্যাহারও করে নিয়েছেন।

সংবিধানে নির্বিচারে আটক ও গ্রেফতার নিষিদ্ধ করা হলেও আইনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে ম্যাজিস্ট্রেটের কোনো ধরনের আদেশ বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই আইন-শৃঙ্খলার প্রতি হুমকি বিবেচনায় বা সন্দেহের বশে আটক করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কর্তৃপক্ষ অনেক ক্ষেত্রেই আটককৃতদের পরিবার অথবা আইনি পরামর্শকদের তাদের অবস্থা বা অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য না দিয়ে বা তাদের আটকের বিষয়টি স্বীকার না করেই আটকে রেখেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন