স্বাস্থ্যের ৬৪ কর্মচারীর বিধিবহির্ভূত পদোন্নতি

বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে দুদকের চিঠি নিয়ে প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিধিবহির্ভূতভাবে পদোন্নতির অভিযোগ ওঠা ৬৪ কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে অনুসন্ধানে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েও দুদক নিজে ব্যবস্থা না নিয়ে চিঠি পাঠানোয় প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া পদোন্নতি প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়নি। 

দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যারা পদোন্নতি কমিটিতে ছিলেন, তারাও দায়ী। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে। তাই কৌশল অবলম্বন করেছে দুদক।’ 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়োগবিধি অনুযায়ী, ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ওয়ার্কার (স্বাস্থ্য সহকারী) পদ থেকে সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে পদোন্নতির বিধান রয়েছে। সিকিউরিটি গার্ড, মালি, কুক মাশালচি পদ থেকে পদোন্নতি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু দুদক বলছে, ৬৪ জন কর্মচারী অধিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য বিধি লঙ্ঘন করে। তাদের অন্য পদে পদোন্নতি ও সরকারি আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়। এর বাইরেও আরো অনেক কর্মচারীকে একই প্রক্রিয়ায় পদোন্নতি ও আর্থিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে দুদকের কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অফিসের রেকর্ড না দেখে বলতে পারব না। সচিবকে জিজ্ঞাসা করেন। মামলা করতে পারে, বিভাগেও পাঠাতে পারে। সবই পারে।’ দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীনের মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

১২ মার্চ দুদক সচিব স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ৬৪ জন ছাড়াও অনেক কর্মচারীকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়োগবিধি লঙ্ঘন করে পদোন্নতি ও সরকারি আর্থিক সুবিধাদি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়ে দুদককে অবহিত করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। 

দুদকের অনুসন্ধানটি পরিচালনা করেছেন কমিশনের সহকারী পরিচালক মানসী বিশ্বাস। তার তদারককারী কর্মকর্তা ছিলেন উপপরিচালক নারগিস সুলতানা ও পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল। এ অনুবিভাগের মহাপরিচালক রেজানুর রহমান। 

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (লিগ্যাল অ্যান্ড প্রসিকিউশন) মঈদুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পদোন্নতি তো নিজে নিজে নেয়া যায় না। যারা এ প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়ার কথা। বিনা পয়সায় তো পদোন্নতি হয়নি। ঘুস-বাণিজ্য হয়েছে। দুদক অনুসন্ধানে পেয়েছে, পদোন্নতি নিয়ম অনুযায়ী হয়নি। তার মানে অনিয়ম হয়েছে। যারা পদোন্নতি দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন তারা এখানে দুর্নীতি করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে তো দুদকের ব্যবস্থা নেয়ার কথা ছিল। ক্ষমতার অপব্যবহার তো হয়েছে। এটা দুদকের তফসিলভুক্ত। এ ধারায় একটা মামলা হতে পারত।’ 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন