বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানের দিক থেকে ইতিবাচক পথেই হাঁটছে

অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম ২০১৬ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ অধ্যাপক অস্ট্রেলিয়ার পার্থের এডিথ কোয়ান ইউনিভার্সিটির ব্যবসা ও আইন অনুষদের নির্বাহী ডিন এবং উপ-উপাচার্য (এনগেজমেন্ট) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে তিনি সাউথ অস্ট্রেলিয়া ইউনিভার্সিটিতে স্কুল অব কমার্সের প্রধান হিসেবে (২০০৫-২০০৮) এবং ক্যানবেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে (২০০৮-২০১০) ব্যবসা ও সরকার অনুষদের ডিন হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। দেশের উচ্চ শিক্ষা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা প্রসঙ্গে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাবিদিন ইব্রাহিম

স্বাধীনতার পাঁচ দশকে দেশের শিক্ষাখাত কতদূর এগিয়েছে? 

স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫০ বছরে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের উন্নতি হয়েছে ধারাবাহিকভাবে। শুরুর দিকে যতটা ছিল তার চেয়ে গত ১৫-২০ বছরে আমাদের অগ্রযাত্রা বেশি হয়েছে। গত দুই দশকে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মানের উন্নতি হয়েছে, যা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার হারও বেড়েছে। দেশের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের হারে যে উল্লম্ফন সেজন্য সরকারি পদক্ষেপের প্রশংসা করতেই হয়। এছাড়া সরকারের বিনামূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচিও শিক্ষা খাতে ব্যাপক ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে শিক্ষার খরচ কমিয়ে আনাতেও সরকার বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। 

দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এসব ইতিবাচক পরিবর্তনের ফলে আমরা সামাজিকভাবে অনেক এগিয়ে যাচ্ছি। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক ক্ষেত্রেও আমাদের সাফল্য চোখে পড়ার মতো। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী বাড়ায় উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের যে স্রোত এসেছে তা সামাল দিতে সরকারকে নতুনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়েছে। গত কয়েক দশকে সরকার দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালু হওয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থীদের চাপ কমেছে। হাল আমলে শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করছে। এক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান এক নয় বলে আমি মনে করি। অবশ্য এক্ষেত্রে বিশ্বের কোথাও শিক্ষার গুণগত মান সমান নয়। সবখানেই কম-বেশি মানের ঘাটতি রয়েছে। আমরা যদি ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকেও দেখি সেখানেও আমরা একই চিত্র দেখব বলে আমার ধারণা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শুরুর দিকে যে অবস্থায় ছিল এখন এ খাতে শিক্ষার মান আরো বেড়েছে। আগে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার কথা চিন্তাও করেনি তারা কিন্তু এখন গবেষণার দিকে ঝুঁকছে। তাদের পাঠ্যসূচিতেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানের দিক থেকে ইতিবাচক পথেই হাঁটছে। 

অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই টিচিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণামুখী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে। এটাকে কীভাবে দেখছেন? 

দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন কর্মমুখী শিক্ষা পদ্ধতির পাশাপাশি গবেষণামুখী শিক্ষা কার্যক্রমের দিকে এগোচ্ছে। আমি ২০১৬ সালে যখন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দায়িত্বে যাই তখনো বিশ্ববিদ্যালয়টিতে তেমন গবেষণামূলক কার্যক্রম ছিল না। তখন কর্মমুখী শিক্ষাকেই বেশি গুরুত্ব দিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। সত্যি বলতে গবেষণাহীন বিশ্ববিদ্যালয়কে কখনই বিশ্ববিদ্যালয় বলা যায় না। কারণ তখন টেকনিক্যাল কলেজের সঙ্গে এর কোনো পার্থক্য থাকে না। সুতরাং আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোর্স অফার করা হবে সেখানে যেন প্রতিটি কোর্সের একটি দার্শনিক ব্যাখ্যা শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা হয়। তাহলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওই বিষয়ে এক ধরনের ভাবুকতা তৈরি হবে এবং পরবর্তী সময়ে তারা গবেষণায় উদ্বুদ্ধ হবে। বিশ্বজোড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ, সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষায় এ বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। 

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি), কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট রয়েছে। এদের কাজ কি এবং ভবিষ্যতে কী ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করতে যাচ্ছে?

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বর্তমানে দেশে বেশকিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট চীনের ভাষা ও সংস্কৃতি শেখানোর ইনস্টিটিউট, তবে তারা ইদানীং গবেষণায়ও ভূমিকা রাখছে। সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি) আমার মতে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটি একটি উচ্চ মানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান। আমার জানা মতে, গুণগত দিক থেকে এশিয়ার এ অঞ্চলে এই প্রতিষ্ঠানের সমকক্ষ কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান নেই। আপনারা যদি লক্ষ করেন, দেখবেন বর্তমানে দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় বেসরকারি খাতে ভালো মানের গবেষণা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠানটি দারুণ কাজ করছে। বিশ্বের সংকটপূর্ণ যেসব বিষয় রয়েছে যেমন আফগান-তালেবান সমস্যা, রোহিঙ্গা সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুসহ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে এ প্রতিষ্ঠান। গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করছে। সেখানে বিভিন্ন গবেষকসহ কূটনীতিক সবাই উপস্থিত হচ্ছে। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক চলছে একদম উন্মুক্তভাবে। ফলে আমি মনে করি, প্রতিষ্ঠানটি গবেষণার উন্মুক্ত দ্বার উন্মোচন করতে পেরেছে। আমাদের আরেকটি ইনস্টিটিউট আছে জেনোম ইনস্টিটিউট, যেখানে প্লান্ট জিন, হিউম্যান জিন নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। আমাদের পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউট আছে। আমরা সেখানে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্রের নাসা, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের  সঙ্গে একসঙ্গে গবেষণা করছি। এখানকার শিক্ষার্থীরা দেশসহ দেশের বাইরেও তাদের গবেষণাকাজে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে এবং তারা নিজ নিজ সেক্টরে খুবই ভালো পজিশনে কাজ করছে। সে হিসেবে আমি বলব, এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা এবং গবেষণা দুই ক্ষেত্রেই তাদের কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য অনস্বীকার্য। পাঁচ-ছয় বছর আগে যেখানে প্রতিষ্ঠানটিতে বছরে এক-দুইশ গবেষণা হতো, সেখানে এখন প্রতি বছর দুই-তিন হাজার গবেষণা প্রকাশ হচ্ছে, যা বিগত সালের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে। এক্ষেত্রে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের জন্য গবেষণা খাতে বিনিয়োগ করছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু দেশেই কাজ করছে না, তারা বাইরেও কাজ করছে। যার যার পেশায় যোগ্যতার সঙ্গে যোগদান করছে। তারা ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে। সে হিসেবে বলব নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণার দিক থেকে সফল। 

বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির একটা সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে নর্থ সাউথসহ অন্যান্য নেতৃস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক কেমন? 

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কলকারখানার সম্পর্ক ভালো। তবে আমাদের দেশের কারখানাগুলো এখনো পুরনো আমলেই রয়ে গেছে। বেশির ভাগ কারখানারই তেমন কোনো আধুনিকায়ন হয়নি। দেশের কারখানাগুলো এখনো নিজস্ব গবেষণার দ্বার উন্মোচন করতে পারেনি। তারা বিদেশী গবেষণার ওপরই নির্ভর করছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলো এমনকি পাশের দেশ ভারতের তুলনায় এখানকার কারখানাগুলোয় দক্ষতারও বেশ কমতি রয়েছে। আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন কারখানার সহযোগিতা যথেষ্ট পরিমাণেই আছে। তবে তারা এখনো তাদের গবেষণার উন্নতির বিষয়ে সচেতন হয়ে ওঠেনি। পশ্চিমা দেশে কোনো কারখানায় সমস্যা হলে সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় বা রিসার্চ সেন্টারের সঙ্গে চুক্তি করে। আমাদের দেশে এ প্রবণতা গড়ে ওঠেনি। যদিও আমাদের দেশে এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। বিশেষ করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বেশ কিছু কারখানার সম্পর্ক ভালো। কারণ আমাদের সিলেবাসটা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই তৈরি করি। আমাদের ক্লাসে কোর্স রিলেটেড কারখানার এক্সপার্টরা এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে বৈশ্বিক একটা ধারণা পায়। আমাদের সব শিক্ষার্থীর ইন্টার্নশিপ করতে হয়। এখানকার একজন শিক্ষার্থীকে কম করে হলেও ১২ সপ্তাহ ইন্টার্নশিপ শেষ করে তাকে প্রতিবেদন জমা দিতে হয়। এতে যে সুবিধা হয়, তাদের বেশির ভাগই যেখানে ইন্টার্ন করে সেখানেই কাজের সুযোগ পায়। এক্ষেত্রে আমরা কারখানাগুলোর সঙ্গে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করি। এক্ষেত্রে নর্থ সাউথ সঠিক ভূমিকায় রয়েছে বলে মনে করি। অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এ পথে এগোচ্ছে। সব মিলিয়ে দেশের উচ্চ শিক্ষার এ খাতটির অগ্রযাত্রা এখন ইতিবাচক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য র‌্যাংকিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংকে ব্যবসা বলেও মনে করেন। এ র‌্যাংকিং বাংলাদেশের জন্য কতটা জরুরি? নিজস্ব কোনো র‌্যাংকিং কেন চালু করা গেল না, সেটি নিয়েও কথা রয়েছে। র‌্যাংকিংয়ে আগাতে হলে কী করতে হবে?

র‌্যাংকিংয়ে তো কোনো মেজারমেন্টই পূর্ণাঙ্গ না। র‌্যাংকিং যেটা ক্যাপচার করতে চায় সেটা হলো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ালিটি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মান সার্বিকভাবে দেখতে গেলে ইনডেপথ অনেক রকম স্টাডি করতে হবে। যেটা র‌্যাংকিংয়ে সম্ভব না। তারা কতগুলো ইন্ডিকেটর নেয়। সাবস্টুডেন্ট রেশিও কী রকম, রিসার্চ প্রডাক্টিভিটি বা স্টাফ কী রকম। বিদেশী শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কী রকম আছে, পিএইচডিধারী শিক্ষক কী পরিমাণে রয়েছে। এ অনুষঙ্গের প্রতিটিই দরকার। সুতরাং র‌্যাংকিংয়ে আমি কোনো খারাপ প্রভাব দেখি না। ইতিবাচক বিষয় হলো সেখানে প্রতিযোগিতা থাকে। যদি গবেষণা বাড়ানো হয়, তাহলে র‌্যাংকিংয়ে ঊর্ধ্বগতি আশা করা যাবে। কিন্তু যদি গবেষণা বাড়ানো সম্ভব না হয়, স্টেগমেন্ট থাকে বা রিসার্চের পরিমাণ কমে যায়, তাহলে র‌্যাংকিং নিশ্চিতভাবে নিচের দিকে থাকবে। যদি স্টাফ রেগুলেশন উন্নত করা যায় তাহলে এটি একটি গুড র‌্যাংকিং। বিশ্বব্যাপী র‌্যাংকিংটা যদি প্রয়োজনীয় না হতো, বৈশ্বিক স্বার্থ রক্ষা না হতো, তাহলে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, এমআইটি, হার্ভার্ড, কর্নেল, স্ট্যামফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অব সিডনি র‌্যাংকিংয়ে যেত না। এ ধরনের ইনস্টিটিউট এমন কিছুর ওপর অর্থ খরচ করবে না, যা তাদের জন্য ভালো নয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা আছে, এর কারণে সবচেয়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয় কোনটা তা বের হয়ে আসছে। র‌্যাংকিং থাকলে উন্নতির একটা তাগিদ অনুভব হয়। আমি মনে করি, র‌্যাংকিং একটা ভালো জিনিস। সারা দুনিয়ায় র‌্যাংকিং সিস্টেম আছে, প্রতিটি দেশেই থাকতে হবে—এমন কোনো কথা নেই। ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আলাদা র‌্যাংকিং সিস্টেম আছে, ভারতেও এ রকম রয়েছে, বাংলাদেশেও করা যায়। এটি দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এক আপনার ক্যাপাবিলিটি। দুই আপনার ক্রেডিবিলিটি। আপনি সম্পূর্ণ নিউট্রাল কিনা। আপনার ওপর সবাই আস্থা রাখে কিনা। আমরা খুব সিনিক্যাল তো, ভালোও করলেও ক্রিটিসাইজ করি, খারাপ করলেও ক্রিটিসাইজ করি। অনেক সময় আমরা ভালো ভালো উদ্যোগকে নষ্ট করে দিই। আমার মনে হয় বাংলাদেশে র‌্যাংকিং হতে পারে, ১৬০টার মতো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি আছে। গোটা ৫০ পাবলিক ইউনিভার্সিটি আছে। ঢাকা ট্রিবিউন র‌্যাংকিং করেছিল কয়েক বছর আগে। তারা ভালো কাজ করেছে। আমি তাদের মেথডলজি দেখেছি। তারা কিন্তু যথেষ্ট সায়েন্টিফিক ওয়েতে এ কাজটা করেছে কিন্তু তারপর আর এখন কেন যেন হচ্ছে না। র‌্যাংকিং করতে পারে যে কেউ। র‌্যাংকিংকে কেউ কেউ ব্যবসা মনে করে। আবার যারা র‌্যাংকারস তারা মাঝে মাঝে প্রশিক্ষণ দেয়। তারা আবার বিভিন্ন কনফারেন্স করে মানুষকে ফি দিয়ে আসতে বলে, এখন দুনিয়াটা এ রকম হয়েছে সবকিছুর একটা ব্যবসায়িক সাইড আছে। আমার মনে হয় কোনো কোনো র‌্যাংকিং সেদিকে একটু বেশিভাবে ঝুঁকেছে। আসল সত্যটা হলো আপনি ভালো কাজ না করলে র‌্যাংকিংয়ে আগাতে পারবেন না। তারা হয়তো প্রশিক্ষণ দিয়ে বোঝায় প্রক্রিয়াটি কীভাবে কাজ করে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং টাকা দিয়ে কেনা যাবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন