সংসদে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী

জ্বালানি তেলে সরকার সরাসরি কোনো ভর্তুকি দেয় না

নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি তেলে সরকার বর্তমানে সরাসরি কোনো ভর্তুকি দেয় না বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। প্রশ্নোত্তর পর্বে গতকাল সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। 

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০২১-২২ অর্থবছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায়। সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করার পরও ওই অর্থবছর বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) প্রায় ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার লোকসান দিয়েছে। এখানে বিপিসি সরকার থেকে কোনো ভর্তুকি না নিয়েও পূর্বের মুনাফা থেকে এ লোকসান বহন করেছে। যুদ্ধ চলমান থাকায় চলতি অর্থবছরও বিপিসির লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। এ অর্থবছরও সংস্থাটি সরকার থেকে ভর্তুকি নেয়নি।’ 

নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ জানান, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ ৯ হাজার টাকা মুনাফা করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় যা ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা বেশি। ওই অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা অর্জন করেছিল ৩২ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি চালু হওয়ার পর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সব ধরনের ট্যাক্স দিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে ৩ হাজার ৫১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। 

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘গ্যাস খাতের উন্নয়নে গত ১৪ বছরে সাতটি বিদেশী কোম্পানি ৩ হাজার ৪৮৩ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে মার্কিন তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরন সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯৪১ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি তাল্লোর বিনিয়োগ ২৩৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার, একই দেশের কেয়ার্ন এনার্জির ২৪২ দশমিক শূন্য ৭ মিলিয়ন ডলার। চতুর্থ সর্বোচ্চ বিনিয়োগ ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসির ৪৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কনোকোফিলিপস ৬ দশমিক ২২ মিলিয়ন, অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস ৫ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ও দক্ষিণ কোরিয়ার পোসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন ৫ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।’ 

নসরুল হামিদ বলেন, ‘দেশের গ্যাস চাহিদা মেটানোর জন্য এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর আলোকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়। এক্ষেত্রে সরকার বা পেট্রোবাংলার কোনো অর্থ ব্যয় হয়নি।’

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শাহে আলমের এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ১ হাজার ১৬৯ দশমিক ৭৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ থেকে অফ গ্রিডে ৩৫৭ দশমিক শূন্য ৯ মেগাওয়াট এবং অন গ্রিডে ৫৭৮ দশমিক ৬৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৯৩৫ দশমিক ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন