যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি কমলেও খাদ্যমূল্য উদ্বেগের

বণিক বার্তা ডেস্ক

এপ্রিলে যুক্তরাজ্যজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম ৪৫ বছরের মধ্যে দ্রুততম হারে বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি কমলেও তা প্রত্যাশার তুলনায় কম গতিতে হ্রাসের কারণে খাবারের দাম বেড়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ অবস্থায় খাদ্যের দাম এখনো উদ্বেগজনকভাবে বেশি বলে মন্তব্য করেছেন চ্যান্সেলর জেরেমি হান্ট। খবর বিবিসি।

এপ্রিল থেকে সামান্য কমলেও বছরে মুদিপণ্যের দাম রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি ১৯ দশমিক ১ শতাংশ হয়। গত আগস্টের পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতির হার যখন কিছুটা কমে একক সংখ্যার ঘরে নেমে এসেছে, ঠিক তখন মুদিপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটছে। 

যদিও মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশা অনুসারে কমেনি। এ অবস্থায় চ্যান্সেলর জেরেমি হান্ট বলেন, ‘খাদ্যের দাম “‍উদ্বেগজনকভাবে উচ্চ’’ অবস্থায় রয়েছে।’

১৮ মাস ধরে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী। যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের (ওএনএস) তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, যা মার্চের ১০ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় খানিকটা কম। যদিও বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস প্রদান করেছিলেন মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশমিক ২ শতাংশের ঘরে নেমে আসার। যার অর্থ দাম কমেনি বরং ধীরগতিতে বাড়ছে।

চ্যান্সেলর জেরেমি হান্ট বিবিসিকে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির হার হ্রাসের খবরটিকে স্বাগত জানাই, তবে বিদ্যমান পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় যুদ্ধ শেষ হয়নি। আমাদের এখনো অনেক দূর যেতে হবে।’

বিশ্বের প্রধান তেল ও গ্যাস উৎপাদক দেশ রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সংঘর্ষের জেরে বিশ্বজুড়ে জ্বালানিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এদিকে ইউক্রেন শস্য ও সূর্যমুখীর বড় উৎপাদক, যা রুটি, তেল ও পশুখাদ্যসহ সবকিছুতে ব্যবহার হয়। চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন থেকে পণ্য রফতানি ব্যাহত হওয়ায় পাইকারি খাদ্যের দাম বেড়েছে। তাছাড়া রয়েছে বৈরী আবহাওয়ার বিষয়টিও, যা শস্য, শাকসবজিসহ চিনি তৈরিতে ব্যবহৃত বিটের উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।

ওএনএসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি রেকর্ড বৃদ্ধির কাছাকাছি। রুটি, সিরিয়াল, মাছ, দুধ ও ডিমের মতো প্রধান খাবারের দাম ধীরগতিতে হলেও বাড়ছে। এ সম্পর্কে ওএনএসের প্রধান অর্থনীতিবিদ গ্রান্ট ফিটজনার বলেন, ‘ব্যবসাগুলো কী ধরনের দামের সম্মুখীন হচ্ছে ও দেশীয় খাদ্যসামগ্রীর জন্য কতটা অর্থ প্রদান করছে—বিষয়টির দিকে তাকালে আমরা দেখি খাদ্যমূল্য গত মাসের বার্ষিক ১৫ শতাংশ থেকে কমে চলতি মাসে ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। তাছাড়া আমদানি করা খাবারের জন্য কোম্পানিগুলো যে দাম দিচ্ছে তাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।’ 

অথচ দাম হ্রাসের প্রভাব সুপারমার্কেটের তাকগুলোয় প্রতিফলিত হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে খুচরা বিক্রেতারা দাবি করেন, পাইকারি দাম কমলেও খাদ্য উৎপাদনকারীদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির কারণে সুপারমার্কেটের তাক পর্যন্ত দম ফিল্টার করতে সময় নেয়। এদিকে জেরেমি হান্ট খাবারের দাম নিয়ে আলোচনা ও পরিবারের ওপর খাদ্যমূল্যের চাপ কমানোর উপায় অনুসন্ধানে মঙ্গলবার খাদ্য প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে দেখা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন