আড়াই মাসে বস্ত্র খাতে ৬ হাজার কোটি টাকার লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বছরের জুন থেকেই দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেনের দিক দিয়ে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার শীর্ষে রয়েছে। কখনো কখনো পুঁজিবাজারের দৈনিক লেনদেনের এক-চতুর্থাংশই খাতের দখলে থাকে। মূলত বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক পরিস্থিতি অন্যান্য খাতের চেয়ে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকার কারণেই বিনিয়োগকারীরা খাতের শেয়ারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। গত আড়াই মাসে পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বছরের জুনে বস্ত্র খাতের হাজার ১৭১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর পরের জুলাইয়ে খাতের কোম্পানিগুলোর লেনদেন করা শেয়ারের পরিমাণ ছিল হাজার ১৯ কোটি টাকা। মাসের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বস্ত্র খাতের হাজার ৮৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সব মিলিয়ে গত আড়াই মাসে খাতের শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। লেনদেনের পাশাপাশি বস্ত্র খাতের শেয়ারে বিনিয়োগে সময়ে ইতিবাচক রিটার্নও এসেছে। এর মধ্যে জুন মাসে দশমিক শতাংশ জুলাই মাসে দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। মাসের প্রথম সপ্তাহে বস্ত্র খাতে দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এলেও গত সপ্তাহে দশমিক শতাংশ ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে। যদিও সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সের রিটার্ন ছিল ঋণাত্মক। এর মধ্যে ডিএসইএক্সে জুন মাসে দশমিক শতাংশ জুলাই মাসে দশমিক শতাংশ ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই খাত থেকে ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ আয় বেশি এসেছে। এর মধ্যে নিট পোশাক থেকে এসেছে ২৩ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার। নিট পোশাকে গত অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেশি এসেছে ১৯ শতাংশ। অন্যদিকে, ওভেন পোশাক থেকে রফতানি আয় এসেছে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে খাতে ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি তেল খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এতে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অবস্থায় সামনের দিনগুলোতে তৈরি পোশাকের রফতানির পরিমাণ কমবে। এরই মধ্যে বিদেশী ক্রেতাদের কাছ থেকে কার্যাদেশ কিছুটা কমেছে। তবে বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের তৈরি পোশাক খাতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। কারণ এসব কার্যাদেশ আরো আগেই দেয়া হয়েছিল।

বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, বস্ত্র খাতের শেয়ার লেনদেন বাড়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। খাতের কোম্পানিগুলোর মূলধনের পরিমাণ তুলনামূলক কম। কভিড-পরবর্তী সময়ে খাতে সবচেয়ে বেশি রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের করপোরেট কর কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজ ঋণের ক্ষেত্রেও খাতে অনেক সুবিধা দেয়া হয়েছে। কারণে সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফা লভ্যাংশ ভালো আসবে বলে বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশা করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন