গ্রীষ্মের প্রচণ্ড
গরমে এবার রমজান মাসে রোজা থাকতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে অনেকেরই। পানিশূন্যতা ছাড়াও এ সময়
ভয় থাকে গ্যাস্ট্রিক বা নানা রকম আন্ত্রিক প্রদাহ কিংবা পেটের পীড়া নিয়ে। রোজা রেখে
পানি কম পান করলে পানিশূন্যতা থেকে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। এজন্য পানিশূন্যতা
দূর করতে পর্যাপ্ত পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা।
এ বিষয়ে শেখ রাসেল
গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক, পরিপাকতন্ত্র ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ
অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বণিক বার্তাকে
বলেন, পানিশূন্যতা হলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন দুর্বলতা, রক্তচাপ
ও প্রশ্রাব কমে যাওয়া। এছাড়া খুব বেশি পানিশূন্যতা দেখা দিলে কিডনিতে মারাত্মক প্রভাব
পড়বে। অনেক সময় পানিশূন্যতায় প্রশ্রাবে ইনফেকশন হতে পারে। কখনো কখনো কিডনিতে পাথর হওয়ার
সম্ভাবনাও তৈরি হয়।
পানিশূন্যতা দূর
করতে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন এ চিকিৎসক। তিনি বলেন, সাধারণত একজন মানুষের দেড় থেকে
দুই লিটার পানি পানের প্রয়োজন। এখন যেহেতু গরমকাল, তাই অনেকের ঘাম বের হয় শরীর থেকে।
এটি হলে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করা জরুরি। তবে মনে রাখতে হবে, কোনো অবস্থাতেই
খুব বেশি পরিমাণে পানি পান করা অথবা ভূরিভোজ করা ঠিক নয়। এক্ষেত্রে ইফতার বা সেহরিতে
একসঙ্গে অনেক বেশি পানি পান না করে একটু একটু করে বারবার পান করতে হবে।
ইফতারে আমরা অনেকেই
বেশি পরিমাণে ভাজাপোড়া খাবার খাই। গরমের দিনে এগুলো অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। এ অস্বস্তি
থেকে বাঁচতে দরকার প্রচুর তরল খাবার। ফলের জুসে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন,
যা শরীরের যেকোনো প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তরল খাবারের মধ্যে ফলের জুস অন্যতম। রোজা
থেকে সারাদিন অফিস বা বাসার কাজ করার পর ইফতারে এক গ্লাস ফলের রসে চুমুক দিয়ে শরীরের
শক্তি ফিরে পাওয়া যায়। ফলের রসের সবচেয়ে ভালো দিক হলো এটি সহজেই শরীরের সতেজতা ফিরিয়ে
আনে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
রোজায় জুসের উপকারিতা
প্রসঙ্গে ডা ফারুক আহমেদ বলেন, বিভিন্ন ফলের জুসে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। এছাড়া
অনেক আয়রন, পটাসিয়াম, ফাইবার, সোডিয়ামও থাকে। তাছাড়া শুধু পানি বা লবণের শূন্যতা রোধ
করা নয়, এ ফলের জুসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায়। এসব ফল দিয়ে তৈরি জুস খাওয়া
অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিরাট ভূমিকা
রাখে।
ঘরে জুস তৈরিতে
সময় লাগে বলে অনেকে বাজার থেকে জুস কিনে নিতে পছন্দ করেন। তবে বাজার থেকে নেয়া বিভিন্ন
ফলের রসে চিনি, প্রিজারভেটিভ ও আর্টিফিশিয়াল রঙ থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
অধ্যাপক ডা. ফারুক বলেন, বাজারে যেসব প্রক্রিয়াজাত জুস পাওয়া যায়, সেসব জুসের ক্ষেত্রে
সতর্ক থাকতে হবে। এগুলোর মান নিশ্চিত না হয়ে খাওয়া ঠিক হবে না। বিশেষ করে এ রোজার সময়।
কারণ প্রক্রিয়াজাত জুসগুলোয় বিভিন্ন কেমিক্যাল মেশানো থাকে, যেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত
নয়।
সম্প্রতি স্কয়ার
ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের আরাম জুস অনেকের কাছেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কেননা এতে
চিনি, প্রিজারভেটিভ ও রঙের ব্যবহার নেই। রমজান মাস উপলক্ষে জুসটি এখন শহরের বিভিন্ন
সুপারস্টোর এবং ই-কমার্স সাইট যেমন চালডাল, দারাজ ও প্যান্ডামার্টে পাওয়া যায়। আম, আপেল ও কমলার তিনটি ভিন্ন স্বাদে পাওয়া যাচ্ছে এটি।