প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এশিয়ায় স্থিতিশীল চালের রফতানি বাজার

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি সপ্তাহে ভারতে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা সেদ্ধ চালের রফতানি মূল্য ছিল ৩৬০-৩৬৩ ডলার ছবি: রয়টার্স

এশিয়ার প্রধান রফতানিকারক দেশগুলোতে চলতি সপ্তাহে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ভারতের বাজার নিম্নমুখী সরবরাহের দিকে এগোচ্ছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা অব্যাহতভাবে জাহাজীকরণ সীমাবদ্ধতার সঙ্গে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও চালের বাজারে স্থিতি বজায় থাকায় সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশসহ আমদানিনির্ভর দেশগুলো।

এশিয়াসহ বিশ্ববাজারে চাল রফতানিতে শীর্ষস্থানীয় ভারত। চলতি সপ্তাহে দেশটিতে প্রতি টন শতাংশ ভাঙা সেদ্ধ জাতের চালের রফতানি মূল্য ছিল ৩৬০-৩৬৩ ডলারের মধ্যে। গত সপ্তাহেও একই দামে জাতের চাল রফতানি করেছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতে চালের সরবরাহ নিম্নমুখী। কিন্তু মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির বিনিময় মূল্য কমতে থাকায় চালের বাজারদর স্থিতিশীল রয়েছে। তবে সংকট থাকায় দেশীয় বাজারে কৃষিপণ্যটির দাম বাড়তির দিকে। অন্ধ্র প্রদেশের কাকিনাড়া শহরের একটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান জানায়, নতুন উৎপাদন মৌসুমে উৎপাদন বাড়ছে। ফলে আগামী মাসের মধ্যেই স্থানীয় বাজারে ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে চালের সরবরাহ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ চাল উৎপাদক দেশ। কিন্তু গত বছরের ব্যাপক বন্যা দেশের চাল উৎপাদন খাতকে বিধ্বস্ত করে তোলে। এর পর থেকেই চাল আমদানিনির্ভরতা বাড়তে থাকে। বর্তমানে এশিয়া অঞ্চলে চাল আমদানিতে বাংলাদেশ বড় দেশ হয়ে উঠছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দেশের বাজারে ক্রমে বাড়ছে চালের দাম। তার ওপর রয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, দাম কমিয়ে আনতে সরকার ৪১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্যবসায়ীরা লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই এসেছে ভারত থেকে। এমন অবস্থায় রফতানিকারক দেশগুলোর স্থিতিশীল বাজার দেশের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ চাল রফতানিকারক দেশ থাইল্যান্ড। চলতি সপ্তাহে দেশটিতে প্রতি টন রফতানিযোগ্য শতাংশ ভাঙা চাল ৩৮৫-৪২০ ডলারে লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশটিতে জাহাজস্বল্পতা ব্যবসায়ীদের জন্য বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যাংককভিত্তিক ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে ক্রেতারা অপরিহার্য প্রয়োজন মেটাতেই চাল ক্রয় করছেন। মজুদ বাড়ানোর জন্য চাল ক্রয়ের প্রবণতা চোখে পড়ছে না।

বৈশ্বিক চাল রফতানিতে দ্বিতীয় ভিয়েতনাম। দেশটির চালের রফতানি মূল্যও অপরিবর্তিত রয়েছে। চলতি সপ্তাহে ভিয়েতনাম প্রতি টন রফতানিযোগ্য শতাংশ ভাঙা চাল ৪৩০-৪৩৫ ডলারে বিক্রি করেছে। হো চি মিন সিটির ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় বাজারে চালের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। তবে এটি রফতানি মূল্যে প্রভাব ফেলেনি।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভিয়েতনামের মেকং -দ্বীপে শরৎ-শীতকালীন ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে এসব ধান থেকে উৎপাদিত চাল সরবরাহ এখনো সে মাত্রায় বাড়েনি। মাসের শেষ অথবা আগামী মাসের শুরুতে সরবরাহ বাড়তে পারে।

সরকারি শুল্ক বিভাগের দেয়া তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে ভিয়েতনামের চাল রফতানি আগের মাসের তুলনায় ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। সময় দেশটি লাখ ৯৩ হাজার ৬২৪ টন চাল রফতানি করে। তবে চলতি বছরের নয় মাসে দেশটির চাল রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক শতাংশ কমেছে। সময় দেশটি ৪৫ লাখ ৭০ হাজার টন চাল রফতানি করতে সক্ষম হয়। সূত্র: রয়টার্স

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন