সূচক ও বাজার মূলধনে নতুন রেকর্ড গড়ার মধ্য দিয়ে গতকাল লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে।
এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৭৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচক বাড়লেও আগের দিনের তুলনায় কমেছে লেনদেন।
ব্যাংক, বীমা, মিউচুয়াল ফান্ড ছাড়া বাকি প্রায় সব খাতেই ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে।
অবশ্য এ তিন খাতের শেয়ারের ওপর ভর করেই গতকাল সূচকের উত্থান হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর থেকে সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
কিছু সময় পর সূচকের সামান্য নিন্মমুখীতা লক্ষ করা যায়।
দিন শেষে সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়।
গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৮ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৭৮৭ দশমিক ১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল ৬ হাজার ৭৪৮ দশমিক ৯২ পয়েন্টে।
গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড ও ইসিবি লিমিটেডের।
এদিকে ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬৯ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ৪৬৮ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে।
ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ৫ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট কমে গতকাল ২ হাজার ৪২২ দশমিক ১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল ২ হাজার ৪২৭ দশমিক ৬২ পয়েন্টে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৭৩ কোটি ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল ২ হাজার ৯৫৩ কোটি ৯২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৯২টির, কমেছে ১৭৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৮টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক ৫১ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ব্যাংক খাত।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ দখলে নিয়েছে বস্ত্র খাত।
১২ দশমিক ৬৯ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আর্থিক খাত।
৯ দশমিক ৮১ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের।
আর ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড, আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, এবি ব্যাংক লিমিটেড, ওরিয়ন ফার্মা, কেয়া কসমেটিকস, রিং শাইন টেক্সটাইল, জিবিবি পাওয়ার লিমিটেড এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।
গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১০ শতাংশ, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, জিবিবি পাওয়ারের ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, স্টাইলক্রাফটের ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ, সাউথ বাংলা ব্যাংকের ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং
পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
অন্যদিকে ডিএসইতে গতকাল সবচেয়ে বেশি দর কমেছে তাল্লু স্পিনিং শেয়ারের ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, নুরানী ডায়িংয়ের ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ, অ্যাপোলো ইস্পাতের ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ, জেনেক্সের ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, ডেল্টা স্পিনার্সের ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, মেঘনা কনডেন্স মিল্কের ৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, উসমানিয়া গ্লাসের ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ৭৩ দশমিক ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৮৫০ দশমিক ৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ৭৭৭ দশমিক ৬০ পয়েন্টে।
এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩২৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬২টির, কমেছে ১৪৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৫টির বাজারদর।
গতকাল সিএসইতে মোট ১০৯ কোটি ৭০ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪৩ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১৬ কোটি ২২ লাখ ৮ হাজার ৯১২ টাকার।
