রায়পুরার চরে বাঙ্গির আশানুরূপ ফলন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নরসিংদী

চলতি মৌসুমে নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে বাঙ্গির আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। দেশজুড়ে গ্রীষ্মকালীন ফলের কদর থাকায় ন্যায্য দামও পাওয়া যাচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।

উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের চারটি ইউনিয়ন বাঁশগাড়ি, শ্রীনগর, চরমধুয়া মির্জাচরে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে। চরাঞ্চলের মাটি বেলে-দোআঁশ হওয়ায় বাঙ্গি চাষের জন্য প্রসিদ্ধ। বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের চান্দেরকান্দি মধ্যনগর গ্রামের জমিগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে বাঙ্গির আবাদ করা হয়েছে। শুধু মধ্যনগর বা চান্দেরকান্দি নয় বর্তমানে আশপাশের অন্যান্য চরেও বাঙ্গির আবাদ হচ্ছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে শোভা বাড়িয়েছে বাঙ্গির ফলন। অল্প পুঁজি শ্রমে অধিক লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই চর এলাকায় বাড়ছে গ্রীষ্মকালীন ফল বাঙ্গির চাষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে বাঁশগাড়ি শ্রীনগর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে বিশাল চর। বিস্তীর্ণ চরে ধান মসলাজাতীয় ফসলের পাশাপাশি বাঙ্গি চাষ করা হয়েছে। চরাঞ্চলে উৎপাদিত বাঙ্গির আকার বড় রং উজ্জ্বল হওয়ায় দেখতে খেতে সুস্বাদু হয়। এসব বাঙ্গির চাহিদা রয়েছে ঢাকাসহ সারা দেশেই। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারা ক্ষেত থেকেই দরদাম করে কিনে সড়ক নৌপথে নিয়ে যান এসব বাঙ্গি। নৌকা পরিবহনে বাঙ্গি ওঠানামায় কর্মসংস্থান হচ্ছে স্থানীয় মৌসুমি শ্রমিকদেরও।

বাঙ্গি চাষী মো. মামুন মিয়া বলেন, আকারভেদে প্রতি একশ বাঙ্গি পাইকারি দামে - হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছর দুই বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।

অন্য চাষী মিজানুর রহমান বলেন, বাঙ্গি চাষ করতে তেমন খরচ লাগে না। রসুন বাঙ্গি দুই ফসল একসঙ্গেই আবাদ করা যায়। রসুনের জন্য সার দেয়ায়, আলাদা করে বাঙ্গির জন্য সার দেয়া লাগে না। শুধু বীজ ওষুধের খরচ ছাড়া বাড়তি খরচ হয় না।

জমি থেকে পাইকারি দরে বাঙ্গি কিনতে আসা নরসিংদীর মাধবদীর পাইকারি ফল ব্যবসায়ী আব্দুস ছাত্তার, জয়নাল আবেদীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থেকে আসা হোসেন আলী রায়পুরার রফিকুল ইসলাম বলেন, অঞ্চলের বাঙ্গি খেতে সুস্বাদু দেখতে সুন্দর হওয়ায় বাজারে চাহিদা রয়েছে। প্রতি মৌসুমে আমরা চরের জমি থেকেই বাঙ্গি কিনতে আসি। সড়ক নৌপথ থাকায় পরিবহনও সহজ এবং সময় কম লাগে।

রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বনি আমিন খান বলেন, রায়পুরার চর এলাকায় বাঙ্গি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বাঙ্গি চাষ সম্প্রসারণে আমরা সার্বক্ষণিক মাঠ পরিদর্শনসহ কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বীজ কৃষকরা ব্যবহার করেন। বাঙ্গি চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ উন্নত জাতের ভালো বীজ সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে কৃষি বিভাগের। চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে মোট ৪০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির চাষাবাদ হয়েছে বলেও জানান কৃষি কর্মকর্তা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন