লকডাউন ও বন্ধের ঘোষণা সত্ত্বেও সূচকে উত্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ রুখতে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহ সারা দেশে কঠোর লকডাউন আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এবারের লকডাউনে ব্যাংক বন্ধের ঘোষণা আসায় পুঁজিবাজারের লেনদেনও বন্ধ হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে হিসেবে গতকাল ছিল কঠোর লকডাউনের আগে পুঁজিবাজারের শেষ লেনদেন। অবস্থায় কঠোর লকডাউন পুঁজিবাজার বন্ধের শঙ্কার মধ্যেও সূচক লেনদেনে ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর লকডাউন শেষে পুঁজিবাজার খোলার পর তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারদরে চাঙ্গা ভাব দেখা গেছে। সে সময় পড়তি বাজারে যারা কম দামে শেয়ার কিনে রেখেছিলেন তারাই পরবর্তী সময়ে লাভবান হয়েছেন। আগের সেই অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় রেখে এবারো কঠোর লকডাউনের আগের দিন বাজারের শেষ কার্যদিবসে কম দামে শেয়ার কেনার প্রবণতা দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। আর কারণে দিনশেষে সূচক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরুর পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭০ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ২৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের দিন ছিল হাজার ১৮৮ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পূবালী ব্যাংকের।

ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল প্রায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে হাজার ১৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ১৮৩ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে প্রায় ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল হাজার ৯৯৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৯৬১ পয়েন্টে। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে মোট ৫১১ কোটি ৯০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪৯৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৭টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ২২৮টির, কমেছে ৬৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৬টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৯ দশমিক ১৮ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে সাধারণ বীমা খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দশমিক ৩২ শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। দশমিক ৫৪ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। আর দশমিক ৮৬ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল জ্বালানি বিদ্যুৎ খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বিডি ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, রবি আজিয়াটা, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, জিবিবি পাওয়ার, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই, ডোমিনেজ স্টিল, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামী মিউচুয়াল ফান্ড, প্রাইম ব্যাংক, রহিমা ফুড, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

অন্যদিকে ডিএসইতে গতকাল সবচেয়ে বেশি দর কমেছে প্রিমিয়ার ব্যাংক, ফ্যামিলিটেক্স, লিবরা ইনফিউশনস, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, আরএসআরএম স্টিল, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যাল মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে প্রায় ১১৩ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ১৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল হাজার ৫৫ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২১৪টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬২টির, কমেছে ৬২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৮টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন