শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা: সাবেক এমপিসহ ৫০ জনের সাজা

বণিক বার্তা অনলাইন

২০০২ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় বিএনপির সাবেক এক সংসদ সদস্যসহ ৫০ আসামির সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

এদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব, বিএনপি নেতা আরিফুর রহমান ও রিপন হোসেনকে ১০ বছর করে ও সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চুর ৯ বছর এবং বাকি আসামিদের সর্বনিম্ন ৪ বছর থেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছে আদালত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩৪ জন জেল হাজতে রয়েছে এবং ১৬ জন পলাতক রয়েছেন।  দণ্ডিতরা সবাই বিএনপি নেতাকর্মী।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির এ সাজার রায় ঘোষণা করেন। এর আগে সকালে এ মামলায় জেল হাজতে থাকা সাবেক এমপি হাবিবসহ ৩৪ জন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ মামলায় কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আশরাফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, মো. আব্দুর রকিব মোল্যা, মো. আক্তারুল ইসলাম, মো. আব্দুল মজিদ, মো. হাসান আলী, ময়না, মো. আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, মো. জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদ, মো. আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, মো. সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, ট্রলি শহীদুল, মো. মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোল্লা, আব্দুল গফফার গাজী, রিঙ্কু, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সামাদ, টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন।

আর পলাতক আসামিরা হলেন- আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রব, সঞ্জু, নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কণক, মো. মাহাফুজুর রহমান।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার সময় কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়ি বহরে হামলা হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়।

শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা সেদিন আহত হন। ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

তখন সাতক্ষীরার আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেয়। ওই মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়।

তদন্ত করে পুলিশ বিএনপির সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনের পৃথক ধারায় দেওয়া তিনটি অভিযোগপত্রের মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় হল বৃহস্পতিবার। বাকি দুটি মামলা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন