অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপলের আয় বেড়েছে ২৮%

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০০৮ সালের ১০ জুলাই অ্যাপ স্টোর চালু করেছিল প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির রাজস্বে অ্যাপ স্টোরের গুরুত্ব ক্রমে বাড়তে দেখা গেছে। গত বছর অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপলের রাজস্ব আয় রেকর্ড হাজার ৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা এক বছর আগের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালে অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপলের রাজস্ব এসেছে হাজার কোটি ডলার। খবর সিএনবিসি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যবর্তী সময়ে অ্যাপ স্টোরের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র দশমিক শতাংশ। সে হিসেবে ২০২০ সাল ছিল অ্যাপ স্টোরের রেকর্ড প্রবৃদ্ধির বছর। কভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবে বিশ্বজুড়ে মানুষের প্রযুক্তিপণ্য নির্ভরতা বেড়েছে, যা অ্যাপ স্টোরের বিক্রি প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও গত বছর অ্যাপ স্টোর ব্যবসা জোরদার এবং বৈচিত্র্য আনতে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে অ্যাপল। এরই অংশ হিসেবে গত নভেম্বরে চলতি বছরের শুরু থেকে অ্যাপ স্টোরের কমিশন কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল অ্যাপল। চলতি মাসের শুরু থেকে অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে যে কোনো অ্যাপ সেবা বিক্রি থেকে ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ কমিশন নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সব অ্যাপ ডেভেলপার সুযোগ পাচ্ছেন না। অ্যাপ স্টোর থেকে যাদের বার্ষিক আয় ১০ লাখ ডলারের কম, তারাই সুবিধা পাচ্ছেন।

বর্তমানে সব ডেভেলপারকে পেইড অ্যাপের আয় ইন-অ্যাপ পার্চেস থেকে ৩০ শতাংশ অর্থ অ্যাপলকে দিতে হয়। অ্যাপ স্টোরে ক্ষুদ্র ডেভেলপারদের সহায়তা করার লক্ষ্যে কমিশনে ছাড় দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অ্যাপল। প্রতিষ্ঠানটির প্রোগ্রামের আওতায় অ্যাপ স্টোরের বেশির ভাগ ডেভেলপার ১৫ শতাংশ ছাড় পাবেন। অ্যাপ স্টোরে রেজিস্টার্ড অ্যাপ নির্মাতার সংখ্যা কোটি ৮০ লাখ। তবে কতসংখ্যক ডেভেলপার সুবিধা পাবেন তা জানায়নি অ্যাপল। কমিশন কমানোতে আয় কত কমবে, তা- প্রকাশ করেনি প্রতিষ্ঠানটি।

অ্যাপ স্টোরের কমিশন ছাড় পেতে গত ডিসেম্বরজুড়ে ডেভেলপারদের আবেদন গ্রহণ করেছে অ্যাপল। সে অনুযায়ী, প্রোগ্রামটিতে রেজিস্টার করা কোনো ডেভেলপারের আয় যদি চলতি বছর ১০ লাখ ডলারের বেশি হয়ে যায়, তবে তার নাম বাতিল হয়ে যাবে। অন্যদিকে, প্রোগ্রামে অংশ না নেয়া ডেভেলপারের আয় যদি ১০ লাখ ডলারের কম হয়, তবে তারা ১৫ শতাংশ কমিশন কমানোর জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।

অ্যাপলের ভাষ্যে, ফান্ড গঠনে নতুন ডেভেলপারদের সহায়তা করতে, নতুন আইডিয়া বাস্তবায়নে ঝুঁকি নিতে, কর্মী সংখ্যা বাড়াতে এবং মানুষের জীবনকে অ্যাপের মাধ্যমে আরো সহজ করে তুলতে তারা অ্যাপ স্টোর কমিশনে ছাড় দেয়ার প্রোগ্রাম চালু করা হচ্ছে। এবারই প্রথম নয়, এর আগে ২০১৬ সালেও ১৫ শতাংশ কমিশন কমিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

টানা কয়েক বছর ধরে অ্যাপলের রাজস্বে আইফোনের গুরুত্ব কমছে। গত বছর তৃতীয় প্রান্তিকেও (জুলাই-সেপ্টেম্বর) একই চিত্র রেকর্ড হয়েছে। গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আইফোন বিক্রি কমেছে ২০ শতাংশের বেশি। এর ফলে আইফোন বিক্রি থেকে অ্যাপলের রাজস্ব আয় হাজার ৬৪৪ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।

গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিভিন্ন ব্যবসা বিভাগের সম্মিলিত রাজস্ব আয় হাজার ৪৭০ কোটি ডলারে পৌঁছানোর তথ্য দিয়েছে অ্যাপল। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ম্যাক কম্পিউটার ব্যবসা বিভাগের রাজস্ব ২৮ শতাংশ বেড়ে ৯০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। আইপ্যাড ডিভাইস বিভাগের রাজস্ব ৪৬ শতাংশ বেড়ে ৬৮০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। অন্যদিকে সার্ভিস ব্যবসা বিভাগের রাজস্ব ১৬ দশমিক শতাংশ বেড়ে হাজার ৪৫৫ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আইফোন ডিভাইস ব্যবসা বিভাগ ব্যতীত মার্কিন প্রতিষ্ঠানটির বাকি প্রায় সবগুলো বিভাগের রাজস্ব আয় বেড়েছে।

গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক খতিয়ানে অঞ্চলভিত্তিক ব্যবসার চিত্র তুলে ধরেছে অ্যাপল। বিষয়ে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক বলেন, গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এশিয়া প্যাসিফিকে দারুণ ব্যবসা সাফল্য পেয়েছে অ্যাপল। এছাড়া প্রযুক্তিপণ্যের অন্যতম বাজার ভারতে ক্রমে উন্নতির ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। ভারতে নিজস্ব অনলাইন স্টোর চালুর উদ্যোগ অ্যাপলের ব্যবসায় বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। গত বছর তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটিতে প্রথম অনলাইন স্টোর চালু করেছিল অ্যাপল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন