ঘোষণা ছাড়াই শেষ হলো ওপেক প্লাসের বৈঠক

বণিক বার্তা ডেস্ক

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই শেষ হয়েছে অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) এর মিত্র দেশগুলোর মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠক। করোনা মহামারীর কারণে অনলাইনে অনুষ্ঠিত দুদিনের বৈঠক শেষে জোটভুক্ত দেশগুলোর পক্ষ থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক উত্তোলন কমিয়ে আনতে বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ ঘোষণা আশা করছিলেন খাতসংশ্লিষ্টরা। বাস্তবে তা হয়নি। তবে বৈঠকের পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, চুক্তির মেয়াদ আরো তিন মাস বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বেশির ভাগ সদস্য দেশ এতে রাজিও হয়েছে। আবার অনেক গণমাধ্যম জানিয়েছে, চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আরো আলোচনা প্রয়োজন। এজন্য সময় নিচ্ছে ওপেক প্লাস। তাই বৈঠকের পর পরই আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।

ওপেকের বৈঠকে অংশ নেয়ার পর আলজেরিয়ার জ্বালানিমন্ত্রী আবদেলমাজিদ আত্তার বলেন, জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ আরো তিন মাস বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে পরবর্তী তিন মাস ওপেক-নন ওপেক দেশগুলো সম্মিলিতভাবে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দৈনিক গড় উত্তোলন ৭৭ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনতে পারে।

বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ওপেকের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখন রাশিয়াসহ ওপেক প্লাসের দেশগুলোর মতামত নেয়া হবে। আলোচনার পর চুক্তিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে জানানো হবে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানাচ্ছে, বৈঠকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক উত্তোলন হ্রাস চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব তোলে সৌদি আরব। দেশটির যুক্তি, করোনা মহামারীর মধ্যে চাহিদা কমতির দিকে থাকায় এখন সরবরাহ সীমিত না রাখলে জ্বালানি তেলের বাজার ভারসাম্য ফেরানো কঠিন হয়ে যাবে। তবে দেশটির এমন প্রস্তাবে সায় দেয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এছাড়া নাইজেরিয়া, রাশিয়া, ইরাক, কাজাখস্তান, লিবিয়ার মতো দেশগুলো সৌদি আরবের প্রস্তাবের শর্ত নিয়ে আরো আলোচনার পক্ষে মত দিয়েছে।

করোনা মহামারীর মধ্যে বৈশ্বিক চাহিদায় রেকর্ড পতন, রাজনৈতিক বিবেচনায় সৌদি আরব রাশিয়ার মধ্যকার মূল্যযুদ্ধএমন নানা কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম টানা কমতির পথে ছিল। ইতিহাসে এবারই প্রথম জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি শূন্য ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল। বছরের শেষভাগে এসে দাম কিছুটা বাড়লেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি।

বিদ্যমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চাহিদা জোগানে ভারসাম্য ফেরানো জরুরি। চাহিদা বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেকটাই নির্ভর করছে মহামারী পরিস্থিতির ওপর। আগামী দিনগুলোয় করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা বাড়তে পারে। নতুবা আরো কমবে। অন্যদিকে জ্বালানি পণ্যটির জোগান সীমিত করতে ভূমিকা রাখছে ওপেক প্লাসের বৈশ্বিক উত্তোলন হ্রাস চুক্তি।

রয়টার্স, ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস অয়েলপ্রাইসডটকম অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন