ইসরায়েলে ঐতিহাসিক সফরে ইউএইর প্রতিনিধি দল

বণিক বার্তা ডেস্ক

আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে গত মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) বাহরাইন। গত ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করল। এবার সেই উদ্যোগকে আরো একধাপ এগিয়ে নিল ইউএই। প্রথম কোনো উপসাগরীয় আরব দেশ হিসেবে ইসরায়েলে প্রতিনিধি পাঠাল তারা। গতকাল ইউএইর প্রতিনিধি দল ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাও সময় ইউএই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন। খবর রয়টার্স।

ইউএইর আবুধাবি থেকে ইতিহাদ এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজ আমিরাতের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে নামে। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউএইর অর্থমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন তুক আল-মারি অর্থনৈতিক বিষয়াবলি সম্পর্কিত প্রতিমন্ত্রী ওবায়েদ হুমাঈদ আল-তায়ের। তাদের সঙ্গে ছিলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানচিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাবি আশকেনাজি অর্থমন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ আমিরাতের সরকারি প্রতিনিধি দলকে অভ্যর্থনা জানান। তাদের স্বাগত জানিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, আমরা এমনভাবে ইতিহাস নির্মাণ করব, যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তা অটুট থাকে।

নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের কারণে আমিরাতের প্রতিনিধি দলের ঘণ্টার সফর তেল আবিবের কাছাকাছি ওই বিমানবন্দরেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের কর্মকর্তারা। ইউএইর প্রতিনিধি দলের সংক্ষিপ্ত ইসরায়েল সফরে উভয় দেশের মধ্যে বিনিয়োগ, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা, সিভিল এভিয়েশন ভিসা ছাড়-সংক্রান্ত চারটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ইউএই এর প্রতিবেশী বাহরাইন। এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলে শান্তি স্থিতিশীলতা জোরদার হবে বলে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্ররা দাবি করলেও ফিলিস্তিনিরা এমন ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াসেল আবু ইউসেফ বলেছেন, ইসরায়েলের উপনিবেশ সম্প্রসারণ কর্মসূচির মধ্যেই ইউএইর প্রতিনিধিরা সেখানে গেলেন। বিষয়টি খুবই ন্যক্কারজনক। তিনি আরো বলেন, আজ যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ঘোষণা দেয়া হলো এবং প্রতিনিধিরা ইসরায়েল সফর করে ফিরে গেলেন, এতে দেশটির আগ্রাসন আরো বেড়ে যাবে। তারা এখন ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আরো বেশি চড়াও হবে। ইউএইর পদক্ষেপের পর ইসরায়েল এখন আমাদের প্রতি আরো বেশি উদ্ধত আচরণ দেখাবে।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্রমবর্ধমান উত্থান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণে তিনি মিত্র মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে চাইছেন বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন।

হুমাইদ আল-তায়ের বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তা আমাদের অর্থনীতি জনগণের সমৃদ্ধি অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে ট্যাক্সেশন আর্থিক সম্পর্ক উন্নয়নের কাজে বেশ ভালো অগ্রগতি অর্জন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের আমিরাত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত আগস্টের মাঝামাঝিতে সম্পর্ক স্বাভাবিকের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে ইসরায়েল ইউএই এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তি করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন