বাসায় থেকে কাজের সংস্কৃতি চালু থাকবে: বিল গেটস

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারীর নতুন বাস্তবতায় খাপ খাইয়ে নেয়ার অংশ হিসেবে চালু হওয়া হোম অফিস বা বাসায় থেকে কাজের সংস্কৃতি ইতিবাচক ফল দিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মহামারী শেষেও রিমোট ওয়ার্ক ব্যবস্থা চালু রাখবে। সম্প্রতি বৈশ্বিক সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি বিলিয়নেয়ার বিল গেটস কথা বলেন। খবর ইকোনমিক টাইমস।

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট কভিড-১৯ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বের অনেক দেশ অঞ্চলে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। মূলত সংক্রমণ ঠেকাতে খুব দ্রুত লকডাউন কার্যকর করা হয়। ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অনেক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাধ্য হয়ে কর্মীদের বাসায় থেকে কাজের সুবিধা চালু করে, যা এরই মধ্যে ইতিবাচক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

বিজনেস ডেইলি ইকোনমিক টাইমস আয়োজিত এক অনলাইন সামিটে বিল গেটস বলেন, বাধ্য হয়ে বাসায় থেকে কাজের সুবিধা চালু করা হলেও এটা দারুণ কাজে দিয়েছে। আমি আশা করছি, কভিড-১৯ মহামারী শেষ হওয়ার পরও অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের জন্য ব্যবস্থা চালু রাখবে। মহামারী শেষে আমরা কত সময় অফিসে অতিবাহিত করব তা নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। আমার ধারণা অন্তত ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান চাইবে তাদের কর্মীরা আগের চেয়ে ৫০ শতাংশ সময় কম অফিসে ব্যয় করুক এবং বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় কার্যক্রমে ফিরবে।

তিনি বলেন, বাসায় অবস্থানের সুবাদে আমি আগের চেয়ে আরো বেশি কার্যক্রমে নিজেকে যুক্ত করার সুযোগ পেয়েছি। বিশ্বজুড়ে লকডাউনের কারণে চালু হওয়া বাসায় থেকে কাজের সুবিধা আমার চোখ খুলে দিয়েছে।

কভিড-১৯ মহামারীর উত্পত্তিস্থল চীনের উহান শহর, যা দ্রুত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বৈশ্বিক সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক, গুগল টুইটারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের জন্য বাসায় থেকে কাজের সুবিধা চালু করে। পরবর্তী সময়ে তালিকায় নাম লেখায় ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান। বাস্তবে রিমোট ওয়ার্ক ব্যবস্থা চালু ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।

বিল গেটস ইতিবাচক মনে করলেও বাসায় থেকে অফিসের কাজ করার পদ্ধতির কোনো ইতিবাচক দিক দেখছেন না নেটফ্লিক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রিড হেস্টিংস। যদিও নেটফ্লিক্সের হাজার ৬০০ কর্মী এখন অবধি বাসা থেকেই কাজ করছেন।

সম্প্রতি রিড হেস্টিংসকে বাসা থেকে কাজ সম্পর্কিত প্রশ্ন করেছিলেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদক। প্রশ্ন ছিল, বাসা থেকে কর্মীদের কাজ করার কোনো সুফল তিনি দেখতে পাচ্ছেন কিনা। জবাবে হেস্টিংস বলেন, না, আমি কোনো ইতিবাচক দিক দেখছি না। বিশেষ করে, বিশ্বজুড়ে প্রত্যক্ষভাবে একত্রিত হতে না পারার বিষয়টি পুরোপুরি নেতিবাচক। আমি মানুষের আত্মত্যাগে খুবই মুগ্ধ।

কভিড-১৯ মহামারীর ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বাসা থেকে কাজ করার কোনো ইতিবাচক দিক না দেখলেও অধিকাংশ কর্মীকে অনুমোদিত নভেল করোনাভাইরাস প্রতিষেধক নেয়ার আগ পর্যন্ত অফিসে ফিরতে বলবেন না বলেও জানিয়েছেন রিড হেস্টিংস। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, চলমান মহামারী শেষ হয়ে গেলেও অধিকাংশ কর্মী সপ্তাহে অন্তত একদিন বাসা থেকে কাজ করার সুবিধা পাবেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০ কোটি বাসাবাড়িতে নেটফ্লিক্স ব্যবহূত হচ্ছে। কভিড-১৯ মহামারী ঠেকাতে ঘোষিত বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করায় নিজস্ব সিরিজ, তথ্যচিত্র চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ আবারো শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন