নিষিদ্ধ পোস্তদানা আমদানি

ঢাকার দুই আমদানিকারকের ব্যাংক হিসাব জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে নিষিদ্ধ পোস্তদানা আমদানি করায় দুই আমদানিকারকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। একই সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক পরিচয়পত্র (বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) জব্দ (ফ্রিজ) করা হয়েছে।

আজ শনিবার (২২ আগস্ট) আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দু’টির ব্যাংক হিসাবে গরমিল এবং ব্যবসায়িক নিবন্ধনের তথ্য সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় এ ব্যবস্থা নেয়া তথ্য জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো- ঢাকার সোয়ারি ঘাট এলাকার মেসার্স আয়েশা ট্রেডার্স ও চকবাজার এলাকার তাজ ট্রেডার্স।

এর আগে গত ১৩ আগস্ট মোংলা বন্দর দিয়ে ৪ কন্টেইনারে করে নিষিদ্ধ পোস্তদানা আমদানি করায় মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তা জব্দ করে। 

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আয়েশা ট্রেডার্স ও তাজ ট্রেডার্সের ফুটবল, টেনিস বল ও পার্টি স্প্রে আমদানি করার ঘোষণা দিয়েছিল। আমদানিকারদের ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিটি কন্টেইনারে পণ্যের ওজন দেয়া ছিল ৫ টন। তবে সেখানে ঘোষণা বহির্ভূত নিষিদ্ধ পোস্তদানা আনায় প্রতিটি কন্টেইনারে ১৭ থেকে ২০ মেট্রিক টন ওজন দাঁড়ায়। ওজনে গড়মিল পাওয়ায় কন্টেইনারগুলো খোলা করা হয়। কন্টেইনার খোলার পর  নিষিদ্ধ আমদানি পণ্য পোস্তদানার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। পরে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দুটির সামনে তা জব্দ করে মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

পরে এই সূত্র ধরে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর এরকম ১৫টি চালান খালাসের ব্যাপক জালিয়াতির তথ্য পায়। ছাড়কৃত এসব চালানে প্রকৃত ঘোষণা অনুযায়ী পণ্য ছিল কিনা এবং এসব পণ্যে স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট পরিশোধ করেছে কিনা  তার তদন্ত শুরু করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ।  

অনুসন্ধানে রাজধানীর বেগমবাজারে পূবালী ব্যাংক শাখায় তলবকৃত কাগজপত্রে ও আমদানি তথ্যে ব্যাপক গরমিল পায় শুল্ক গোয়েন্দা। একই সঙ্গে শুল্ক নিবন্ধনে তাদের প্রতিষ্ঠান ঢাকার চকবাজারে খুঁজে পায়নি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্রতিষ্ঠান দু'টির বিরুদ্ধে যথাযথভাবে ভ্যাট রিটার্ন দেওয়ারও প্রমাণ মেলেনি। স্থানীয় ভ্যাট অফিসে নানা ধরনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে তারা কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

আমদানিকৃত পণ্যের যথাযথ ব্যবসায়িক হিসাব না পাওয়ায় ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে তদন্তের স্বার্থে আমদানিকারক দুটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও ব্যবসায়িক পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়।

ভ্যাট গোয়েন্দাদের ধারণা, তদন্ত শেষ হওয়ার পূর্বে তারা তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে ফেলতে পারে। অন্যদিকে তারা আমদানির অপেক্ষমাণ আরো অন্য কোন চালান দ্রুত খালাস করিয়ে নিতে পারে। একারণে বেগমবাজার পূবালী ব্যাংক শাখা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে অন্যান্য ব্যাংকে তাদের নামে খোলা সব হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এনবিআর-এ  তাদের হিসাব লক করে দেওয়া হয়েছে। 

ভ্যাট আইনের ধারা ৮২, ৮৩ ও ৯১ অনুসারে এই কার্যক্রম নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন