চারাবাড়ি সেতু

অ্যাপ্রোচ সড়কে ধস, চারদিন ধরে বন্ধ যান চলাচল

বণিক বার্তা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল-তোরাপগঞ্জ সড়কে ধলেশ্বরী নদীর ওপর চারাবাড়ি ঘাট সেতুর বাঁ তীরের অ্যাপ্রোচ ধসে পড়েছে। এতে চার দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন টাঙ্গাইলের চরাঞ্চলের কাতুলী, হুগড়া, কাকুয়া, মাহমুদনগর নাগরপুরের ভাড়রা ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ সেতু দিয়ে চলাচল করে। সম্প্রতি টানা বৃষ্টি উজানের ঢলে নদীতে তীব্র স্রোতের তোড়ে গত বৃহস্পতিবার ব্রিজের অ্যাপ্রোচে ধস দেখা দেখা দেয়। দু-একদিন ঝুঁকি নিয়ে সেতু দিয়ে যান চলাচল করলেও গত শনিবার সকালে মাটিবাহী ট্রাকের ভারে ধস আরো বেড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়ে ওইদিন থেকেই যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, প্রতি বছর বর্ষায় ব্রিজের পাশসহ আশপাশে ভাঙন দেখা দেয়। কারণ ব্রিজের পাশ থেকে প্রচুর পরিমাণ বালি উত্তোলন করা হয়। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় না। মাঝেমধ্যে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে কয়েক দিনের জন্য বালি উত্তোলন বন্ধ হয়। পরে আবার আগের মতোই শুরু হয়।

সিএনজি অটোরিকশাচালক শাহিন বলেন, দু-একদিন ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজের ওপর যাত্রী নিয়ে গেলেও এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না। কারণ ব্রিজের নিচের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ। যেকোনো সময় ব্রিজটি ভেঙে যেতে পারে এখন ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার করা দরকার তা না হলে আমরা না খেয়ে মারা যাব। এমনিতেই করোনার কারণে যাত্রী সংকট, তার ওপর আবার বন্যা, খুব কষ্টে পরিবার নিয়ে জীবন যাপন করছি।

এদিকে ব্রিজের ওপারেই ঘোষপাড়ায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনরোধে এরই মধ্যে এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে আরো দুই হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। গতকাল ৩০-৪০ জন শ্রমিক জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, ব্রিজের অ্যাপ্রোচে ধস ঘোষপাড়ার নদীরভাঙন এলাকা আমি পরিদর্শন করেছি। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে ঘোষপাড়ায় নদীর ভাঙনরোধে তিন হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। আর ব্রিজের এস্টিমেট হচ্ছে, দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী জানান, অ্যাপ্রোচে ধস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংসদ সদস্য এলজিইডিকে জানানো হয়। সংসদ সদস্য ব্রিজের অ্যাপ্রোচে ধস রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এলজিইডি দ্রুত কাজ বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

টাঙ্গাইল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম আজম বলেন, নদীতে পানি বাড়ার ফলে

সেতুর অ্যাপ্রোচে যে ধস দেখা দিয়েছে তা এখনই স্থায়ীভাবে সংস্কার সম্ভব নয়। তবে সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অস্থায়ী ভিত্তিতে মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন