বাস চলাচল শুরু

বাড়তি ভাড়া নিয়েও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দুই মাস বন্ধ থাকার পর জেলায় জেলায় আবার বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও পাশাপাশি সিটে যাত্রী বসানোর ঘটনা ঘটছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার তালিকায় আছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনও (বিআরটিসি) প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

মেহেরপুর: গতকাল দূরপাল্লার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল শুরু হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এমনকি বিআরটিসি বাসেও সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে পাশাপাশি সিটে যাত্রী বসানো হচ্ছে। অথচ স্বাস্থ্যবিধির নামে যাত্রীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

মেহেরপুর-রাজশাহী রুটের বিআরটিসি বাসের যাত্রী জানান, ভাড়া নিয়েছে প্রায় ডাবল। তবে গাড়িতে উঠে দেখি পাশে আরো একজন যাত্রী। এটা নিয়ে সুপারভাইজারের কাছে জানতে চেয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

জেআর পরিবহনের মেহেরপুর কাউন্টার মাস্টার আনোয়ার বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহন করছি। কিন্তু সরকারি গাড়ি বিআরটিসিতে যাত্রী বসার ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না।

বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিসির গাংনী কাউন্টার মাস্টার তোতা মিয়া বলেন, অনেকে যেমন একই পরিবারের দুজন সদস্য একসঙ্গে যেতে চাইছে। এতে আমরা কী করব? তাই এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে আগামীতে চেষ্টা করা হবে যাতে যাত্রী বেশি না হয়।

জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ গোলাম রসূল বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যাপারে চালকসহ সবাইকে নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। আমরা যাত্রীদেরও অনুরোধ করছি যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। কেউ নিয়ম না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নারায়ণগঞ্জ: জেলায় বাসের ভেতরে সামাজিক দূরত্ব রেখে যাত্রী বসানো হলেও ওঠার সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বরং যেখানে সেখানে থামিয়ে অনেকে হুড়োহুড়ি করে যাত্রী তোলা হচ্ছে। পরিবহনকর্মীদের অনেকে মাস্কও ব্যবহার করছেন না। গতকাল নারায়ণগঞ্জ ঘুরে চিত্র দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জ নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চাষাঢ়া থেকে আন্তঃজেলা যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মেনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়া হচ্ছে। ফলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে যাত্রীদের নন-এসি বাসে জনপ্রতি ৫৮ টাকা এসি বাসে ৯০ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে।

আহমেদ হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, করোনার কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। তার ওপর গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বেতন-ভাতা তো বাড়েনি।

সাগর প্রধান নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার ধানমন্ডি যেতে খরচ হতো ৮০ টাকা। এখন শুধু নারায়ণগঞ্জ থেকে গুলিস্তান যেতেই ভাড়া এসি বাসে ৯০ টাকা গুনতে হচ্ছে।

সিলেট: গতকাল সকালে দূরপাল্লার পাশাপাশি জেলার অভ্যন্তরীণ রুটের বাস চলাচলও শুরু হয়েছে। তবে যাত্রী ছিল অপেক্ষাকৃত কম।

দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, দূরপাল্লার বাসে সামাজিক দূরত্ব মেনে যাত্রী পরিবহন করা হলেও জেলার অভ্যন্তরীণ রুটের বাসে তা মানা হচ্ছে না। অনেক বাসে ভাড়া দ্বিগুণ বাড়িয়ে নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট জেলা শাখার সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি সামাজিক দূরত্ব মেনেই বাস চালাচ্ছি। সিট সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী তোলা হচ্ছে। তবে অনেক বাস অর্ধেক যাত্রীও পাচ্ছে না। সরকারি নির্দেশনা মেনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। কেউ এর চেয়ে বেশি বাড়ায়নি।

সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, বাসের ভাড়া স্বাস্থ্যসেবা দেখভাল করতে আজ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অভিযান চালাবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন