নমুনা সংগ্রহের ১৩ দিন পর জানা গেল ৪ পোশাককর্মীর করোনা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, শ্রীপুর

গাজীপুরে লিথি গ্রুপের তিনটি গার্মেন্টস কারখানার চার জন শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জন একই পরিবারের সদস্য। তারা নিয়মিত কারখানায় কাজে আসতেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি মেম্বার তাদের বাসা থেকে বের হতে নিষেধ করেনে। আজ বুধবার তাদের কারখানাতে যেতে দেয়া হয়নি।  

তবে আক্রান্ত এক একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কারো শরীরে করোনা সংক্রমণের কোনো উপসর্গ নেই । তাছাড়া তাদের নমুনা সংগ্রহের ১৩ দিন রিপোর্ট এসেছে।

আক্রান্তদের একজনের বয়স ২০ বছর। তিনি জানান জানান, বাবা-মা ও ছোট বোনসহ তারা ৬ জন এবং প্রতিবেশী এক দম্পতি সদর উপজেলার বাঘের বাজারের শিরিরচালা এলাকার লিথি গ্রুপের অ্যাপারেলস, বেসিক ও প্যানটেক্স কারখানায় কাজ করেন। কারখানা ছুটি হয়ে গেলে গত ২২ এপ্রিল রওনা দিয়ে অনেক কষ্টে পরদিন গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার কাউকান্দি গ্রামে পৌঁছান। গাজীপুর থেকে যাওয়ার কথা শুনে এলাকার মানুষের সহায়তায় প্রশাসন ওইদিনই তাদের নমুনা সংগ্রহ করে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখে। 

এর মধ্যে গার্মেন্ট খোলার ঘোষণা আসে। তারা ওই অবস্থাতেই গত ২৬ এপ্রিল গাজীপুরের শিরিচালার ভাড়া বাড়িতে ফিরে আসেন। ওই যুবকের বাবা ২৭ এপ্রিল, বোন ও মা ২৯ এপ্রিল এবং তিনি ও প্রতিবেশী দম্পতি ২ মে কাজে যোগ দেন। মঙ্গলবার ডিউটি শেষ করে বিকালে বাসায় ফেরেন তারা। রাত ১০টার পর স্থানীয় মেম্বার এসে জানান, তিনি, তার বাবা (৪৮) ও ছোট বোন (১৮) এবং প্রতিবেশী স্বামী-স্ত্রীর (৩৩) করোনা পজেটিভ এসেছে। তাদের ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করে যান। আজ কারখানার লোকজনও এসে কাজে না যেতে বলেছেন।

কিন্তু তাদের কারো মধ্যে করোনার কোনো লক্ষণ নেই বলে দাবি করেন লিথি গ্রুপের বেসিক গার্মেন্টের ওই শ্রমিক। 

গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিন পরিষদের স্থানীয় মেম্বার শফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জয়দেবপুর থানার ওসির মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই চার শ্রমিককে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে খুঁজে বের করেন তিনি। তারা বাঘের বাজার এলাকার এক স্কুল শিক্ষকের বাড়ির ভাড়াটে। সুনামগঞ্জে তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট মঙ্গলবার পাওয়া গেছে। ওই রিপোর্টে ৬ জনের মধ্যে ৪ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। সুনামগঞ্জের বাড়িতে না পেয়ে প্রশাসনের লোকজন বিষয়টি গাজীপুরের প্রশাসনকে জানায়। তারপর তাদের খুঁজে বের করা হয়। তাদের ঘরে থাকতে এবং কাজে যেতে বারণ করা হয়েছে। 

সুনামগঞ্জের তাহেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন বলেন, তাদের নমুনা সংগ্রহের ১৩ দিন পর নিশ্চিত হওয়া যায় তারা করোনা আক্রান্ত। রিপোর্ট আসার পর তাদের অবস্থান খুঁজতে গিয়ে জানা যায় আক্রান্তরা কর্মস্থল গাজীপুরে চলে গেছেন। বিষয়টি গাজীপুরের প্রশাসনকে জানানো হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন