গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, উপাচার্যের বিষয়টা যেহেতু আদালতের এখতিয়ারে, তাই আমরা নিজ থেকে কিছু করতে পারি না। তবে আমরা ইউজিসির কাছে অবিলম্বে এর সুরাহা চাইব। যদি তারা লায়লা পারভীন বানুকে অযোগ্য মনে করেন, তাহলে আমরা উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিতে তিনজনের একটি প্যানেল তালিকা ইউজিসিতে পাঠাব।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বৈধ উপাচার্যের দাবিতে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে তিনি ছাত্র সংসদের সাধারণ সভায় যোগ দিতে এলে এ ঘটনা ঘটে।
উপাচার্যের বৈধতা, বিবিএ ও ফিজিওথেরাপি বিভাগের সমস্যা, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের বাজেট, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসপেক্টাস না মানা—এসব অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ৪১৭ নম্বর কক্ষে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
এ বিষয়ে সাধারণ ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক রনি আহমেদ বলেন, এর আগেও আমরা বৈধ ভিসির দাবিতে ৬৮ দিন আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ শুধু আশ্বাসে আশ্বাসে কালক্ষেপণ করতে থাকে। আজ তার কাছে দাবিগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এরপর তাকে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ করে রাখেন।
অবরোধ তুলে নেয়ার পর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি তোমাদের সমস্যা কিছুটা বুঝতে পেরেছি। কিন্তু বাংলাদেশে চাইলেই সবকিছু সহজে করা যায় না। ইউজিসির বক্তব্য অনুসারে ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তাদের মধ্যে আমরাই একমাত্র আদালতের মাধ্যমে বোঝাতে পেরেছি যে আমরা ঠিক আছি। উপাচার্য নিয়ে তোমাদের মধ্যে কিছুটা ভুল ধারণা আছে, তোমাদের সার্টিফিকেটে লায়লা পারভীন বানু অ্যালাউড, উনি সাইন করতে পারেন।
তবে শিক্ষার্থীরা তার এ কথায় আশ্বস্ত হতে পারেননি। বৈধ উপাচার্যসহ অন্যান্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান তারা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক লায়লা পারভীন বানুকে নিয়োগ দিতে হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা দেয়া হলে তার বিরুদ্ধে আপিল করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এর পরিপ্রেক্ষিতে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে উপাচার্য হিসেবে লায়লা পারভীন বানুর অগ্রযাত্রা। আপিলের রায়ের দীর্ঘসূত্রতায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে তারা আন্দোলন শুরু করে।