প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) সফরে যাচ্ছেন। এ সফর চলাকালে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে অঞ্চলটির পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ১২ জানুয়ারি রোববার আবুধাবিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও ওই অঞ্চলে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকা বরাবরই বিশ্ব শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফলে এ ইস্যুতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির অবসান বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তিতে কার্যকর সংলাপ ও শান্তি কামনা করে বিবৃতি দিতে পারে ঢাকা। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি কামনা করে বিবৃতি দেয়ার বিষয়টি বর্তমানে সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। তবে এটির ফর্ম (কাঠামো) এখনো ঠিক হয়নি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ বাংলাদেশী। এ কারণে বাংলাদেশ তার নিজের স্বার্থেই বিশ্বে শান্তি চায়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপকমিটির বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়—এ মূলমন্ত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করে গেছেন তা ধরেই বাংলাদেশ বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতিতে চলছে। বিদেশনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কখনই ওই অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়নি, হবেও না।
মন্ত্রী ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করে বলেন, প্রত্যেকের সঙ্গেই আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার বিরোধকে তাদের দুই দেশের বিষয় হিসেবে দেখছে ঢাকা। এখানে বাংলাদেশ কারো পক্ষ নেবে না।
এদিকে ঢাকা, বাগদাদ ও তেহরানে কর্মরত বাংলাদেশী কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ঢাকা। এ নিয়ে কোনো তাড়াহুড়া নেই। তবে অবস্থা বুঝে বক্তব্য বা বিবৃতি দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী আগামী সপ্তাহে আবুধাবি সফরে যাচ্ছেন। এ সফরে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় কর্মসূচিগুলোর পাশাপাশি মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোয় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার নির্দেশনায় ওই সব অঞ্চলের রাষ্ট্রদূতদেরও আবুধাবিতে ডাকা হয়েছে।
কূটনীতিকরা আশা করছেন, আবুধাবিতে অনুষ্ঠেয় আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা হবে। সেখানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের করণীয় বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও পাবেন তারা।