অপ্রতুল সক্ষমতা

ডুবে যাওয়া নৌযান উদ্ধারে ব্যর্থ হচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি বরিশাল

নৌ-দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া নৌযান উদ্ধারে উদ্ধারকারী জাহাজ লোকবল সংকটে ভুগছে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিআইডব্লিউটিএ (অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ) যেসব নৌযান ডুবে যাচ্ছে, সেগুলোর অধিকাংশই টেনে তুলতে পারছে না সংস্থাটির জাহাজগুলো। এমনকি অপ্রতুল সক্ষমতার এসব উদ্ধারকারী জাহাজ (চারটি) সম্মিলিতভাবেও যাত্রী পণ্যবাহী নৌযান উদ্ধার করতে পারছে না। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে ডুবে থাকা নৌযানের কারণে বিভ্রাট সৃষ্টি হচ্ছে বরিশাল অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন নৌপথে।

সম্প্রতি ১৬ ডিসেম্বর রাতে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চের সঙ্গে সংঘর্ষে ডুবে যায় একটি বালিবাহী কার্গো জাহাজ। এর প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সেটি উদ্ধার করতে পারেনি বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী ইউনিট। একইভাবে ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল বরিশাল নগরীর অদূরে চরবাড়িয়াসংলগ্ন কীর্তনখোলায় মুখোমুখি সংঘর্ষে ডুবে যাওয়া কয়লাবোঝাই বাল্কহেডটিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। একই সঙ্গে পদ্মার মাওয়া পয়েন্টে ২০১৪ সালের আগস্টে ডুবে যাওয়া পিনাক- লঞ্চটিও উদ্ধারে ব্যর্থ হয় বিআইডব্লিউটিএ। অবস্থায় নৌ-দুর্ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধার ইউনিটের কর্মক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধার ইউনিটে বর্তমানে রয়েছে হামজা, রুস্তম, নির্ভীক প্রত্যয় নামে চারটি জাহাজ। এর মধ্যে হামজা রুস্তম কেনা হয় যথাক্রমে ১৯৬৪ ১৯৮২ সালে। জাহাজ দুটির উত্তোলন সক্ষমতা ৬০ টন করে। এরপর ২০১২ সালে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে কোরিয়া থেকে আনা হয় উদ্ধাকারী জাহাজ নির্ভীক প্রত্যয়। এর প্রত্যেকটির উত্তোলন সক্ষমতা ২৫০ টন। হিসাবে চারটি উদ্ধারকারী জাহাজের সম্মিলিত উত্তোলন সক্ষমতা ৬২০ টন। এর মধ্যে হামজা রুস্তমের সক্ষমতা বর্তমানে সর্বোচ্চ ৫০ টন। অন্যদিকে কারিগরি লোকবল জটিলতার কারণে অধিকাংশ সময়ই নির্ভীক প্রত্যয় একসঙ্গে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। ফলে বড় কোনো নৌ-দুর্ঘটনার পর এসব জাহাজ দিয়ে উদ্ধার অভিযানে তেমন সফলতা মিলছে না।

বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটের সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে বর্তমানে বেশ বড় বড় লঞ্চ চলাচল করছে। দুর্ঘটনায় ডুবে গেলে এগুলো উদ্ধারে বিআইডব্লিউটিএর সক্ষমতা নেই। বিশেষ করে হামজা রুস্তম বেশ পুরনো হওয়ায় এগুলো দিয়ে উদ্ধার অভিযানে এখন আর তেমন সফলতা মিলছে না। অবস্থায় বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধার ইউনিটে আরো বেশি সক্ষমতার উদ্ধারকারী জাহাজ সংযুক্ত করতে হবে।

লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর থেকে বর্তমানে ৫০০ থেকে দুই হাজার টনের বেশি ধারণক্ষমতার নৌযান তৈরি চলাচলের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু যেসব উদ্ধারকারী জাহাজ রয়েছে, সেগুলো দিয়ে এত বড় নৌযান উদ্ধার করা সম্ভব নয়।

তার কথার প্রতিফলন পাওয়া গেল বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুবুল ইসলামের বক্তব্যে। সম্প্রতি কীর্তনখোলায় ডুবে যাওয়া বালিবাহী কার্গো উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, সংস্থাটির পক্ষে ওই কার্গো উত্তোলন করা সম্ভব নয়। ফলে কার্গোর মালিকপক্ষকেই এক মাসের মধ্যে সেটি উদ্ধারের জন্য বলা হয়েছে।

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন