বুড়িগঙ্গা কি বাঁচবে?

রাকিব বিন হোসেন , নাহিয়ান করিম, জুবায়ের আহমেদ , তামজিদ হায়দার

আমরা সবাই স্কুলজীবনে এককথায় প্রকাশ পড়েছিলাম—‘নদী মাতা যারনদীমাতৃক। আমাদের এই সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশকে নদীমাতৃক বলেই জানি। গ্রামবাংলা, শহর অর্থাৎ পুরো বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে নদীর ওপর ভিত্তি করে। জেলেরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে নদী থেকে মাছ ধরেই। শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৮০০ নদ-নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার জায়গা দখল করে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলার সাহিত্য-কবিতায় রয়েছে নদ-নদীর এক অপার মহিমান্বিত অবস্থান। যেমন রবীন্দ্রনাথেরআমাদের ছোট নদী

আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে

বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে।

তাই আমরা বলতে পারি গ্রামবাংলার মানুষের সঙ্গে নদীর একটি নিবিড় সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এখন কেমন আছে আমাদের দেশের নদী-নালাগুলো?

পরিবেশ দূষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা জটিলতার কারণে আজকে আমাদের নদী-নালাগুলো হুমকির মুখে। সীমান্তের পার্শ্ববর্তী এলাকায় নদীগুলোর হিস্যা নিশ্চিত করতে পারছি না আমরা। যেমন তিস্তা শীতকালে যখন পানি প্রয়োজন তখন পানি থাকে না, কিন্তু বর্ষাকালে পুরো এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়ে মানুষের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়, জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। মূলত আমাদের নদীগুলো দূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ। আরেকটি অন্যতম কারণ হচ্ছে অধিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। লক্ষ করলে দেখা যাবে অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে সৃষ্টি হচ্ছে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, যার কারণে বিভিন্ন শহরের মূল নদীগুলো ঘিরে তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শিল্প-কারখানা। তাছাড়া শহরে মনুষ্যসৃষ্ট সব বর্জ্যও ফেলা হয় এ মূল নদীগুলোয়। শহরের ড্রেনগুলোর সরাসরি সংযোগ থাকে নদীর সঙ্গে এবং সব বর্জ্য সরাসরি নদীতে এসে নিক্ষিপ্ত হয়। শিল্প-কারখানার সব বর্জ্য নিক্ষিপ্ত হয় নদীতে। আবার বিভিন্ন শিল্প-কারখানার কাঁচামাল সরবরাহের জন্য প্রচুর পরিমাণে নৌযান নদীতে চলাচলের কারণে সেসব নৌযানের পোড়া মবিলও নদীদূষণের অন্যতম কারণ। আর এই অপরিকল্পিত নগরায়ণ-শিল্পায়নের কারণে আজকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার মোট কথা রাজধানী এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকার সব নদ-নদীর জীবন হুমকির মধ্যে। আর আমাদের এই নদী-নালাগুলোর এ রকম অবস্থার জন্য আমরাই দায়ী এবং আমাদের বিদ্যমান ব্যবস্থাও দায়ী। ঢাকার অন্যতম প্রধান নদী বুড়িগঙ্গা, সেটি আজকে হুমকির মুখে শুধু পানিদূষণ, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে। বুড়িগঙ্গা ঘিরে যে মানবসভ্যতা তৈরি হয়েছে, সেই মানবসভ্যতাই বুড়িগঙ্গার দূষণের অন্যতম কারণ। ঢাকার অধিক মাত্রায় জনসংখ্যা ঢাকাকে আজ দূষিত রাজধানী করে তুলেছে। ঢাকার জনসংখ্যা ২০১৬ সালে যেখানে ছিল ১ কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার, সেখানে ২০১৯-এ তা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ ৪ হাজার; যা ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে ঢাকায় প্রতিদিন বর্জ্য পদার্থ বাড়ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে যানবাহনের কালো ধোঁয়া। ২০০৭ সালেওয়ার্ল্ড ব্যাংক অব ওয়াটার মডেলিং বাংলাদেশ জরিপে উঠে আসে, ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার বর্জ্য ফেলা হয় ঢাকার নদীতে, যার উৎস ঢাকার সাত হাজার শিল্প-কারখানা। যেহেতু ঢাকার নদীগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে সংযুক্ত, তাই এর প্রভাব বুড়িগঙ্গাসহ সব নদ-নদীতেই পড়ছে। তাছাড়া শূন্য দশমিক ৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার বর্জ্য ফেলা হয় অন্যান্য উৎস থেকে, যেমন গৃহ কর্তৃক সৃষ্ট বর্জ্য ইত্যাদি। বুড়িগঙ্গা দূষণের আরেকটি অন্যতম উৎস হচ্ছে নৌযান। কারণ গড়ে ৩০ হাজার নৌযান বুড়িগঙ্গার লঞ্চ টার্মিনাল ব্যবহার করছে, ফলে প্রচুর পোড়া মবিল পানিতে নির্গত হচ্ছে, যেটি দূষণের অন্যতম কারণ। তাছাড়া সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার বিভিন্ন ড্রেনেজ লাইনও বুড়িগঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত, যা প্রচুর পরিমাণ দূষিত বর্জ্যের উৎস এবং বুড়িগঙ্গার পানিদূষণের অন্যতম কারণ। বুড়িগঙ্গার পানিদূষণের অন্যতম কারণ মনে করা হতো হাজারীবাগ ট্যানারিকেও, যেটি ছিল প্রচুর পরিমাণ বর্জ্য ও মিথেনের উৎস। হাজারীবাগের লোকেরাও ছিল স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। যদিও এটি এখন সাভারে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, কিন্তু সেটি এখন তুরাগ নদের পানিদূষণে ব্যস্ত। অর্থাৎ আমরা দিনের পর দিন আমাদের নদী-নালাকে দূষিত করেই যাচ্ছি। মহান দার্শনিক এঙ্গেলস বলেছিলেন, ‘আমরা যখন প্রকৃতিকে শোষণ করা শুরু করব, প্রকৃতিও আমাদের একদিন জবাব দেবে। কারণ লক্ষ করলে দেখা যায়, আমরা উন্নয়নের বুলি আউড়িয়ে ঠিকই পরিবেশ বিনষ্ট করছি, বেঁচে থাকার জন্য যে আমিষের প্রয়োজন, তার উৎসও নষ্ট করছি। তাছাড়া বুড়িগঙ্গা দূষণের মাধ্যমে নষ্ট করেছি অনেক জেলের জীবিকার উৎসও। এখন আর বুড়িগঙ্গার পানি ব্যবহারের উপযোগী নয়। ঢাকার বিশুদ্ধ খাবারের পানির অন্যতম উৎস বুড়িগঙ্গার পানির মান পরীক্ষায় দেখা গেছে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি খুবই বেশি, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অর্থাৎ আমরা শুধু নদীদূষণই করিনি, নষ্ট করেছি পুরো জীববৈচিত্র্যকেই। আর এর অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রকৃতি ও মানুষকে আলাদা ভাবা। আর বর্তমানে যে পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা, সেটিও আমাদের শেখায় যেহেতু মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, অতএব মানুষের প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার আছে। ভোগ করার অধিকার আছে যখন সে যা চায়। আর আমাদের ব্যবস্থা আমাদের ভাবতে শিখিয়েছে মানুষ সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে। সে তার বেঁচে থাকার জন্য চাইলে অন্যান্য জীবকে নির্মমভাবে হত্যা করতে পারবে। উন্নয়নের জন্য অ্যামাজনকে ধ্বংস করতে পারবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সুন্দরবনকে ধ্বংস করতে পারবে। কিন্তু আমরাও সে প্রকৃতিরই সন্তান, কারণ প্রকৃতি আমাদের অক্সিজেন না দিলে আমরা বেঁচে থাকতে পারব না। আবার পৃথিবীর সব জীব ও জড় বস্তুর যে সমানভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে, আমরা সেটা ভাবি না। হ্যাঁ, এখন জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির জন্য মানুষ গাছ লাগাচ্ছে, কিছুটা পরিবেশ সচেতন হচ্ছে, কারণ কী? সেটাও মানুষের কল্যাণের জন্যই! প্রকৃতি বা অন্যান্য প্রাণীর কথা চিন্তা করে নয়! বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই মানুষের বেঁচে থাকার জন্য উষ্ণতা কমাতে হবে। অথচ আমরা ভাবছি না যে এ উষ্ণায়নের জন্যই অনেক বিরল প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর এজন্য মানুষের প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার যে প্রবণতা সেটাই দায়ী।

আমাদের বুড়িগঙ্গা কেন মৃত্যুর পথে? আমাদের যে ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থা, সেটাই মূল কারণ। আমাদের কোনো শিল্প-কারখানার পরিবেশগত ছাড়পত্র লাগে না, বেশির ভাগ শিল্প-কারখানার নেই টেকসই বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা, নেই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, সব শিল্প-কারখানায় ইটিপি নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা আছে, এর কোনো ব্যবহার নেই। আর সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হলো, এখনো আমাদের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সবচেয়ে দুর্বল মন্ত্রণালয় হিসেবে পরিচিত। সেখানে বাজেট কম, আইনের প্রয়োগও কম। কারণ এখনো অনেকেই মনে করেন পরিবেশ দূষণ না করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়। আর পরিবেশগত ছাড়পত্রসহ অন্য নিয়মাবলি মানতে গেলে লাভের পরিমাণ নাকি কমে যাবে। অবশ্য আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী একই কথা বলেন যখন শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরির দাবি করেন। কিন্তু এখন পরিবেশ আর অর্থনীতি যে বিপরীতমুখী নয়, সেটা প্রমাণিত। অতএব, একটি সুন্দর প্রকৃতি ও পরিবেশই অর্থনীতিকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করতে পারে।

তাই আমাদের নিজেদের স্বার্থে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণের যে প্রবণতা, সে প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কারণ প্রকৃতিতে সমানভাবে বেঁচে থাকার অধিকার সবার আছে। কারণ একটি পিঁপড়া বা একটি জড় বস্তু, ব্যাকটেরিয়া, যেটি কখনো আমাদের চোখে পড়ে না, সেটি জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ খাদ্যশৃঙ্খল ব্যবস্থায় সব প্রাণী, জীব ও জড় পদার্থ একে অন্যের প্রতি নির্ভরশীল। ঠিক তেমনি নদীরও অধিকার আছে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার, স্বাধীনভাবে প্রবাহিত হওয়ার। নদীর ন্যায্য হিস্যাও নদীর অধিকার। আমরা কোনোভাবেই নদী-নালা দূষণ করতে পারি না, কারণ সেটা সম্পূর্ণ পরিবেশগত নৈতিকতাবিরোধী। এখন অনেক দেশই পরিবেশের প্রতি নৈতিকতার দায় থেকে পরিবেশ রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। অনেক দেশের সংবিধানেই পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে সব প্রাণী ও প্রকৃতির সবকিছুর সমানভাবে বেঁচে থাকার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। যেমন বলিভিয়ায় ২০১০ সালেরাইট অব মাদার আর্থ নামে আইন পাস হয়। একুয়েডরে সংবিধানের ৭৩ ও ৭৪ ধারায় বলা হয়েছে, যেসব ধরনের কার্যক্রম জীব-অনুজীব এবং প্রকৃতি ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর, সেগুলো কমাতে হবে এবং বন্ধ করতে হবে। কিছুদিন আগে ভারতের হাইকোর্ট দেশটির সব নদীকে স্বাধীনভাবে প্রবাহিত হওয়ার জন্য কোনো বাধা প্রদানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। অর্থাৎ নদীকেও লিভিং এনটিটি হিসেবে গণনা করার রায় দিয়েছে ভারত সরকার। বাংলাদেশেও কিছুদিন আগে রুল জারি করেন যে বাংলাদেশের সব নদীরলিগ্যাল রাইটস আছে অর্থাৎ নদীকে আলাদাভাবে প্রকৃতিরই অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এর সঙ্গে স্বাধীনভাবে বাঁচার রাইটসও দিতে হবে। নদী চাইলে তার ক্ষতি বা দূষণের জন্য মামলাও করতে পারবে। এজন্য তার অভিভাবক হিসেবে বিবেচিত হবেজাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। নদী রক্ষা কমিশন চাইলে যে কারো বিরুদ্ধে নদীদূষণের জন্য ব্যবস্থা নিতে পারবে। এছাড়া বুড়িগঙ্গা রক্ষার জন্য এরই মধ্যে হাজারীবাগ ট্যানারিকে সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহযোগিতায় নদী রক্ষা কমিশন বুড়িগঙ্গাকে ঘিরে যে অবৈধ স্থাপনা আছে, সেগুলো নির্মূল করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের অনেকেই সেখানে ব্যাঘাত ঘটিয়ে আইন লঙ্ঘন করছেন। বুড়িগঙ্গার পানি আগের চেয়ে কিছুটা কম দূষিত হলেও মানুষের এবং অন্যান্য প্রাণীর জন্য তা অস্বাস্থ্যকর। যেহেতু দূষিত হওয়ার জন্য ৬০ শতাংশ শিল্প-কারখানার বর্জ্য, ৩০ শতাংশ ঢাকা ওয়াসা এবং ১০ শতাংশ দুই সিটি করপোরেশনের গৃহকর্তৃক নিঃসরিত বর্জ্য দায়ী (ঢাকা ট্রিবিউন ২০১৯), তাই সবার আগে সব শিল্প-কারখানার পরিবেশগত ছাড়পত্র নিশ্চিত করতে হবে। সেটার জন্য বিচার বিভাগ এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়কে আরো শক্তিশালী করতে হবে, বাজেট বাড়াতে হবে। গবেষণা বাড়াতে হবে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। বুড়িগঙ্গার পানির প্রসঙ্গেকপার সভাপতি মোহাম্মদ মতিন বলেছিলেন, যদি দুই সিটি করপোরেশনের বর্জ্য বুড়িগঙ্গায় ফেলা বন্ধ করা যায়, তাহলেই এর পানির অনেক উন্নতি হবে। এজন্য সরকারকে রিসাইকেল, রিইউজ, বিডিউসএ তিন পলিসি নেয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। উন্নত দেশে অনেকে এখন ময়লাকে সম্পদ মনে করে। ময়লা ব্যবহার করে সার তৈরি করছে অনেকেই। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের পলিথিনের সর্বোচ্চ রিসাইকেল নিশ্চিত করতে হবে। যেটি অনেক দূষণ কমিয়ে দিতে পারে। তাছাড়া আমরা জানি, প্রতিটি বিষয়েরই একটা শেষ সময় থাকে, আমরা যদি মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে পারি, তাহলে রিইউস, রিডিউস, রিসাইকেল জিরো ওয়েস্ট টার্গেট পূরণ করতে সফল হবে। সবচেয়ে বড় কথা, শিল্প-কারখানাগুলোকে যদি এ তিন পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্যোগী করা যায়, তাহলে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমবে, তাদের পুঁজি কম খাটাতে হবে। কারণ কাঁচামাল অনেক কম ক্রয় করা লাগবে। অন্যদিকে কম পুঁজি খাটিয়ে বেশি লাভ করতে পারবে শিল্প-কারখানাগুলো। সব শেষে বলতে চাই, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং পরিবেশ সচেতনতাই পারে বুড়িগঙ্গাকে রক্ষা করতে। বুড়িগঙ্গা বাঁচলে ঢাকা বাঁচবে, ঢাকার মানুষ ও প্রাণ-প্রকৃতি বাঁচবে। ঢাকাবাসী এবং সবার প্রতি আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, মানুষের মতোই নদীরও স্বাধীনভাবে প্রবাহিত হওয়ার অধিকার আছে। অতএব, বুড়িগঙ্গাকে বাঁচতে দিন।

 

লেখকরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন