স্থাপত্য একটি
দেশের, একটি
স্থানের কিংবা
একটি সমাজের
অন্তর্নিহিত অনেক
অধরা যোগসূত্র,
তথ্য ও
গল্পের প্রকাশ;
যার রূপায়ণ
ঘটে নির্মাণশৈলী,
নির্মাণসামগ্রী ও
প্রযুক্তির মতো
বাস্তব ও
ভৌত কিছু
উপাদানের মাধ্যমে।
স্থাপত্যকে শুধুই
শিল্পের জন্য
শিল্প বলা
ঠিক নয়,
এর সঙ্গে
জড়িত কঠোর
বাস্তবতা, মানবজীবনের
প্রয়োজন, যার
সঙ্গে সম্পৃক্ত
হয় বৈজ্ঞানিক
বিশ্লেষণ, যুক্তির
প্রয়োগ এমনকি
স্পর্শকাতর মনন
ও চেতনালব্ধ
নান্দনিকতা। তাই
এ স্থাপত্যের
ভাষা ভিন্নতা
পায় তার
আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক,
রাজনৈতিক ও
সময়ের সামগ্রিক
আবেদনে। কার্যকারিতাভেদে
তার স্থাপত্যিক
বিশেষত্ব প্রকাশ
পায়। বিভিন্ন
প্রয়োজন অনুযায়ী
সময়ের সঙ্গে
তাল মিলিয়ে
স্থাপত্যশৈলীর মাধ্যমে
নির্মিত হয়—আবাসিক,
প্রশাসনিক, প্রাতিষ্ঠানিক,
ধর্মীয় কিংবা
নির্দিষ্ট কোনো
ঘটনা, স্মৃতি
বা আবেগের
প্রতিরূপে—ইমারত
বা ইমারতসমষ্টি,
সৌধ প্রভৃতি।
সেই প্রাচীন
বাংলার সময়কাল
থেকে শুরু
করে হাজার
বছরের ব্যবধানে
আজকের বাংলাদেশ
বর্তমান অবস্থানে
এসে দাঁড়িয়েছে।
সামাজিক ও
রাজনৈতিক পটভূমি
পরিবর্তনের সঙ্গে
সঙ্গে, ইতিহাসের
পাতা উল্টাতে
উল্টাতে এ
স্থাপত্য যাত্রা
পার করেছে
অনেক নতুন
নতুন পথ,
ভিন্নতা। প্রাচীন
বাংলার বৈদিক,
হিন্দু, বৌদ্ধপরম্পরা;
মধ্যযুগীয় মুসলমানপ্রধান
শাসন; ঔপনিবেশিক
আমলের শৃঙ্খলিত
ও অনমনীয়তার
প্রেক্ষাপটে ধীরে
ধীরে এ
দেশ তৈরি
হয়েছে আধুনিকতাকে
আলিঙ্গন করতে।
সবক্ষেত্রেই স্থাপত্য
সেই প্রেক্ষাপটের
স্বাক্ষর রেখে
গেছে তার
সুচিন্তিত শৈলী
ও উপস্থাপনের
মাধ্যমে।
১৯৪৭
সালে ঔপনিবেশিক
শাসনের ইতি
ও দেশ
বিভাগ। বাংলাদেশ
তখন পাকিস্তানের
অংশ। সে
সময়ের ঢাকা
অনূর্ধ্ব তিন
লাখ জনসংখ্যার
একটি জেলা
শহর। প্রয়োজন
হলো নতুন
করে শহরের
উন্নয়নের। ফেলে
আসা দিনের
ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা
নয়, বরং
পশ্চিমের আধুনিকতার
সঙ্গে তাল
মিলিয়ে একটা
খোঁজ। তারই
জের হিসেবে
পঞ্চাশের দশকে
বাঙালি সমাজে
উঁকি দেয়
আধুনিকতার ছোঁয়া।
স্থাপত্য অঙ্গনও
নতুন কিছুর
অপেক্ষায়। ইউরোপীয়
রেনেসাঁ কিংবা
মোগল স্থাপত্যরীতি
থেকে বেরিয়ে
পাশ্চাত্য আধুনিক
স্থাপত্যধারার এক
অমোঘ হাতছানি।
সে সময়ে
প্রকৌশলীদের মাধ্যমেই
বেশির ভাগ
স্থাপত্যকর্মের ডিজাইন
বা নকশা
করানো হতো,
কিছু কিছু
বিদেশী স্থপতি
এখানকার গণপূর্ত
বিভাগে কিছু
সময়ের জন্য
কাজ করতেন।
ছিলেন তত্কালীন
পশ্চিম পাকিস্তানের
কয়েকজন স্থপতি,
যাদের কেউ
কেউ ছিলেন
ডিপ্লোমাধারী। বাংলাদেশী
কোনো স্থপতি
তখনো এ
দেশের স্থাপত্য
ও নির্মাণ
শিল্পের সঙ্গে
যুক্ত ছিলেন
না। মাত্র
চল্লিশ বর্গমাইল
আয়তনের পৌর
এলাকায় মূলত
একতলা, দোতলা
ইমারতের মেলা,
কিছু কিছু
তিন-চারতলা
ভবন তৈরি
হচ্ছে প্রয়োজনানুসারে,
সেগুলোও সরকারি।
নির্মাণ প্রযুক্তি ছিল ইট-সুরকি বা