বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা

পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কথাও চিন্তা করতে পারেন পুতিন

বণিক বার্তা ডেস্ক

১৯৯০ সালের পর আর কোনো পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি রাশিয়া ছবি: রয়টার্স

দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালাতে ইউক্রেনকে অনুমতি দিলে ভ্লাদিমির পুতিন পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারেন বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালানোর অনুমতি দিলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে। সেক্ষেত্রে রাশিয়া তাদের সীমানার কাছাকাছি ব্রিটিশ সামরিক স্থাপনাগুলোয় হামলা চালাতে পারে। এমনকি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালানোর মতো ভয়ংকর পদক্ষেপও নিতে পারেন পুতিন।

রাশিয়ায় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমতি বিষয়ে শুক্রবার ওয়াশিংটনে আলোচনায় বসেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর মধ্যেই বিশেষজ্ঞরা এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। যদিও দুই নেতার বৈঠকে কিয়েভকে অনুমতি দেয়ার কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। 

এর আগে বৃহস্পতিবার পুতিন হুঁশিয়ারি দেন, পশ্চিমারা এ ধরনের পদক্ষেপ নিলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর শামিল হবে। এতে সংঘাতের প্রকৃতি পাল্টে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি ‘উপযুক্ত’ জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করলেও নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি পুতিন।

পুতিন গত জুনে পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য পশ্চিমাদের প্রতিপক্ষকে রুশ অস্ত্র সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের খুব কাছাকাছি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরামর্শ দেন, যেন প্রয়োজনে এসব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা যায়।

জার্মানির হামবুর্গ শহরের ইনস্টিটিউট ফর পিস রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি পলিসির অস্ত্র বিশেষজ্ঞ উলরিখ কুয়েন বলেন, ‘‌এ অবস্থায় পুতিনের পক্ষ থেকে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। পশ্চিমাদের ভয় দেখাতে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘পশ্চিমারা যদি চাপ দিতে থাকে, তাহলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার ছাড়া পুতিনের আর কি বিকল্প থাকতে পারে?’

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ঠিক আগের বছর ১৯৯০ সালের পর রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি। ফলে একটি পারমাণবিক পরীক্ষা বা বিস্ফোরণ আরো বিপজ্জনক যুগের সূচনার ইঙ্গিত দেবে বলে মনে করেন উলরিখ কুয়েন।

একই আশঙ্কা দেখছেন অস্ট্রিয়ার ইন্সব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গেরহার্ড ম্যাঙ্গট। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারে। এজন্য তারা যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা দেশের পূর্বে কোথাও কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে শুধু দেখানোর জন্য যে প্রয়োজন হলে তারা পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করবে।’

শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সংস্থাটিতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া একই রকম ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দিলে ন্যাটো একটি পারমাণবিক শক্তির বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। আপনারা এর পরিণতি সম্পর্কে ভুলে যাবেন না।’

প্রসঙ্গত, রাশিয়া বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। দেশটি বর্তমানে তাদের পারমাণবিক নীতির পুনঃপর্যালোচনা করছে, যার মাধ্যমে মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন