সাহারা মরুভূমিতে সবুজের সমারোহ!

বণিক বার্তা ডেস্ক

সম্প্রতি অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পর সাহারার কিছু এলাকায় সবুজ গাছপালা জন্মাতে শুরু করে ছবি: রয়টার্স

আফ্রিকার সাহারা মরুভূমিতে খুব কমই সবুজের দেখা মেলে। শুষ্কতা ও গাছপালার অভাবের জন্য অঞ্চলটি পরিচিত। সম্প্রতি অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পর মরুভূমিটির কিছু এলাকায় সবুজ গাছপালা জন্মাতে শুরু করেছে। বিষয়টি এতটাই লক্ষণীয় যে মহাকাশ থেকেও শুষ্কতম স্থানটিতে সবুজের ছোঁয়া স্পষ্ট। খবর সিএনএন।

সাহারার দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশে গাছপালা বৃদ্ধির চিত্র স্যাটেলাইট ধারণ করেছে। এ অঞ্চল দিয়ে কিছুদিন আগে ঝড় বয়ে যায়, যদিও সে রকম কোনো পূর্বাভাস ছিল না। ঝড়ের কারণে সেখানে ভয়াবহ বন্যাও হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি দূষণের কারণে উষ্ণায়ন  বেড়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা আরো বেড়ে গেছে।

বিষুবরেখার উত্তরে বৃষ্টিপাত সাধারণত জুলাই-সেপ্টেম্বরে বাড়ে। এ সময় পশ্চিম আফ্রিকায় মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃষ্টিপাত বেশি হয়। বিষুবরেখার নিকটবর্তী আর্দ্র ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বাতাস উত্তর আফ্রিকা থেকে গরম ও শুষ্ক বাতাসের সঙ্গে মিলিত হয়ে আরো ঝড় ও বৃষ্টির দেখা মেলে। ঝড়ো আবহাওয়ায় অংশটি ইন্টারট্রপিক্যাল কনভারজেন্স জোন নামে পরিচিত।

জাতীয় মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডল প্রশাসনের (এনওএএর) তথ্যমতে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে অঞ্চলটি স্বাভাবিকের চেয়ে আরো উত্তরে সরে গেছে। এতে সাহারা মরুভূমির দক্ষিণাঞ্চলে ঝড় প্রবাহিত হয়েছে। এ অঞ্চল নাইজার, চাঁদ, সুদান ও লিবিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। এ কারণে সাহারা মরুভূমির এ অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-ছয় গুণ বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

জার্মানির লাইপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু গবেষক কার্স্টেন হাউসেইন জানান, অঞ্চলটির অদ্ভুত এ পরিবর্তনের দুটি সম্ভাব্য কারণ রয়েছে। এল নিনো থেকে লা নিনায় রূপান্তরের কারণে গ্রীষ্মকালে অঞ্চলটি উত্তরে সরে যায়। এল নিনো সাধারণত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার আর্দ্র অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে শুষ্ক অবস্থার দিকে পরিচালিত করে। লা নিনা এর বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে।

তিনি বলেন, ‘ইন্টারট্রপিক্যাল কনভারজেন্স জোনের কারণে আফ্রিকায় সবুজায়ন হয়। তবে বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জোনটি আরো উত্তরে সরে যেতে থাকে। অধিকাংশ মডেলে এমনটা বলা হয়েছে।’

এ পরিবর্তনের কারণে শুধু মরুভূমি যে সবুজ হচ্ছে তা কিন্তু নয়, এ কারণে আটলান্টিকের হারিকেন মৌসুমও ব্যাহত হচ্ছে। গত কয়েক মাসে আফ্রিকার বেশকিছু দেশে এর বড় প্রভাব পড়েছে।

জলবায়ু পূর্বাভাস কেন্দ্র (সিপিসি) জানিয়েছে, যেসব দেশে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়া উচিত, সেসব দেশে ঝড়ের কারণে কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নাইজেরিয়া ও ক্যামেরুনের কিছু অংশে জুলাই-সেপ্টেম্বরে অন্তত ২০-৩০ ইঞ্চি বৃষ্টি হয়। কিন্তু জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত ৫০-৮০ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এদিকে নাইজার, চাঁদ, সুদান, লিবিয়া ও দক্ষিণ মিসরের কিছু অংশের মতো সাধারণত উত্তরের শুষ্ক অঞ্চলে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে চার গুণ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন