ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের দেশটির সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভুঁইয়া। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে গতকাল বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধানদের বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা শেষে দেশরক্ষার মূল দায়িত্ব সমর প্রস্তুতিতে নিয়োজিত হওয়ার সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে মূল্যায়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে দেশের বৈপ্লবিক জনপ্রতিরক্ষায় ফরাসি বিপ্লবের সময় ফ্রান্সে গৃহীত ‘লেভি এন মাস’ পন্থা কার্যকর হতে পারে বলে মত দিয়েছেন ইকবাল করিম ভুঁইয়া।
ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধানদের মূল্যায়ন করা উচিত, কখন বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার কাজ শেষে তারা দেশরক্ষার মূল দায়িত্ব সমর প্রস্তুতিতে নিয়োজিত হতে পারবেন। নবনিযুক্ত প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা যত দ্রুত সম্ভব সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে বহিঃশত্রুর হুমকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। এক্ষেত্রে ফ্রান্সের ‘লেভি এন মাস’ ধারণাটি বৈপ্লবিক জনপ্রতিরক্ষার জন্য কার্যকরী পন্থা।’
প্রসঙ্গত, ‘লেভি এন মাস’ হলো একটি ফরাসি ধারণা। এটি সাধারণত বহিঃশত্রুর আগ্রাসনের মুখে জাতীয় পর্যায়ে বেসামরিক নাগরিকদের যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে (ম্যাস কনস্ক্রিপশন) ব্যবহার করা হয়। ফরাসি বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে ফ্রান্সের যুদ্ধ বেধে গেলে এ ধারণার উদ্ভব হয়। সে সময় ওই ধারণার আওতায় সাধারণত ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের রিক্রুট করা হয়। নেপোলিয়নিক যুদ্ধের সময়ও এ ম্যাস কনস্ক্রিপশনের ধারণা বলবৎ ছিল। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সক্ষম ব্যক্তিদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে এ ধারণার প্রয়োগ ঘটানো হয়।